কে এই নূপুর শর্মা
ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) জাতীয় মুখপাত্রের দায়িত্বে ছিলেন নূপুর শর্মা। গত সপ্তাহে এক টেলিভিশন বিতর্কে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করেন তিনি।
নূপুরের মন্তব্যে দেশ-বিদেশে সমালোচনার ঝড় ওঠে। তীব্র সমালোচনার মুখে তাঁকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিজেপি।
নূপুর পরে নিঃশর্তভাবে তাঁর বিতর্কিত মন্তব্য প্রত্যাহার করে নেন। তিনি টুইটারে বিবৃতি দিয়ে দাবি করেন, কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা তাঁর উদ্দেশ্য ছিল না।
নূপুর শর্মা কে
প্রফেশনালদের জনপ্রিয় নেটওয়ার্ক লিংকডইন প্রোফাইল অনুসারে, নূপুর পেশায় একজন আইনজীবী। তিনি বিজেপির গুরুত্বপূর্ণ নেতা, পরিচিত মুখ।
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে স্নাতক করেছেন নূপুর। তিনি ২০১১ সালে লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকস থেকে এলএলএম সম্পন্ন করেন।
নূপুর তাঁর কলেজজীবন থেকেই রাজনীতিতে জড়িত। লিংকডইন প্রোফাইল অনুসারে, তিনি ২০০৯ সালের জুলাই থেকে ২০১০ সালের জুন পর্যন্ত ‘টিচ ফর ইন্ডিয়া’-র দূত হিসেবে কাজ করেন।
রাজনৈতিক জীবন
নূপুরের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ২০০৮ সালে। তখন তিনি দিল্লি ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস ইউনিয়নের সভাপতি নির্বাচিত হন। অস্ট্রেলিয়া-ইন্ডিয়া ইয়ুথ ডায়ালগ থেকে এসব তথ্য জানা যায়। পরে নূপুর বিজেপির যুব শাখায় কাজ করেন।
কেজরিওয়ালের প্রতিদ্বন্দ্বী
২০১৫ সালের দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে আম আদমি পার্টির (এএপি) প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে নিউ দিল্লি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন নূপুর। তবে এই নির্বাচনে কেজরিওয়ালের কাছে হেরে যান নূপুর।
বিতর্কিত মন্তব্য
নূপুরের বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে ভারতের উত্তর প্রদেশের কানপুরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। সহিংসতায় ৪০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়। সহিংসতায় জড়িত অভিযোগে দেড় হাজার মানুষের বিরুদ্ধে মামলা হয়।
দেশের পাশাপাশি বিদেশেও নূপুরের বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। সৌদি আরব, ইরান, ওমান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, কুয়েত, বাহরাইন, পাকিস্তান প্রভৃতি মুসলিম দেশ নূপুরের মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানায়।
কাতার ও বাহরাইন ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে তলব করে হতাশা প্রকাশ করে।
নূপুরের মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি)।
সমালোচনার মুখে নূপুরের বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেয় বিজেপি। তাঁকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। নূপুরের বিরুদ্ধে বিজেপির নেওয়া পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে দুটি দেশ।
ক্ষোভ সামাল
সমালোচনা-বিতর্কের মুখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার দাবি করে, যে মন্তব্য করা হয়েছে, তা ব্যক্তিগত। ভারত সরকার সব ধর্মের প্রতি সর্বোচ্চ শ্রদ্ধাশীল। মন্তব্যকারীর বিরুদ্ধে বিজেপি কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি গতকাল সোমবার বলেন, বিজেপি নেত্রীর মন্তব্য ব্যক্তিগত, সরকারের মনোভাব নয়। তিনি ওআইসি সচিবালয়ের বিবৃতিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও দুরভিসন্ধিমূলক বলে অভিহিত করেন।