কাশ্মীরের দুই মুখ্যমন্ত্রী ওমর ও মেহবুবাকে ২ বছর আটকে রাখা যাবে
কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রীদের সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মন্তব্যের পরপরই ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি) নেতা ওমর আবদুল্লা ও পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টির (পিডিপি) নেত্রী মেহবুবা মুফতিকে জন নিরাপত্তা আইনে (পিএসএ) গ্রেপ্তার করা হলো। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এই খবর প্রচার করেছে।
জন নিরাপত্তা আইন (পিএসএ) তৈরি করেছিলেন ওমরের দাদা শেখ আবদুল্লা ১৯৭৮ সালে। প্রধানত কাঠ চোরাচালানকারীদের ঠেকাতে ওই সময় এই আইন আনা হয়। এই আইনে টানা ২ বছর পর্যন্ত কাউকে আদালতে পেশ না করেও আটক রাখা যায়। গত বছর ৫ আগস্ট জম্মু-কাশ্মীর দ্বিখণ্ডিত ও সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহৃত হওয়ার সময় থেকেই আরও অনেকের সঙ্গে রাজ্যের এই তিন সাবেক মুখ্যমন্ত্রীকে বন্দী করা হয়। ৮৩ বছরের ফারুক আবদুল্লা তখন থেকেই পিএসএতে গৃহবন্দী। গত বৃহস্পতিবার তাঁদের বন্দিদশার ৬ মাস পূর্ণ হওয়ার দিন ওমর ও মেহবুবাকেও এই আইনে গ্রেপ্তার করা হলো।
কেন তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে সেই বিষয়ে সরকার নতুন করে কিছু অবশ্য জানায়নি। তবে গত বৃহস্পতিবার সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ জ্ঞাপন প্রস্তাবের জবাবি ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওই তিন সাবেক মুখ্যমন্ত্রীর ‘দেশদ্রোহিতার’ উদাহরণ দিয়েছিলেন। ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপ করার সময় ওই তিন নেতা কী মন্তব্য করেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী তা জানান। মেহবুবা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘মেহবুবা বলেছিলেন কাশ্মীরের সঙ্গে ভারত বিশ্বাসঘাতকতা করল। ১৯৪৭ সালে অন্যভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে আমরা ভালো থাকতাম।’ ওমর সম্পর্কে মোদি বলেন, উনি বলেছিলেন, ‘৩৭০ তুলে দেওয়া হলে ভারত থেকে কাশ্মীর আলাদা হয়ে যাবে।’ আর ফারুক আবদুল্লা বলেছিলেন,‘৩৭০ অনুচ্ছেদ খারিজ করা হলে কাশ্মীরে ভারতের পতাকা তোলার লোক থাকবে না।’
সরকারের এই সিদ্ধান্তকে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ‘অদূরদর্শী’ বরে মন্তব্য করেন। এক টুইটে তিনি বলেন, কাশ্মীরে রাজনৈতিক শূন্যতার সৃষ্টি করে সরকার জঙ্গিদের তা ভরাট করার সুযোগ করে দিচ্ছে। আবদুল্লাদের সম্পর্কে মোদির মন্তব্য অসত্য বলে জানিয়েছে ন্যাশনাল কনফারেন্স।
তিন সাবেক মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দুই দলের আরও অনেক শীর্ষ নেতাকে পিএসএতে বন্দী করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আগেই জানিয়েছিলেন, তিন দলকে (এনসি, পিডিপি ও কংগ্রেস) বাদ দিয়ে নতুন রাজনৈতিক শক্তির হাতে কেন্দ্র কাশ্মীরের ভাগ্য তুলে দিতে চায়। কারণ, ওই তিন দল এত বছর ধরে কাশ্মীরকে ‘লুট’ করেছে। স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে, পিএসএ প্রয়োগের মাধ্যমে কেন্দ্র সেটাই করতে চলেছে।