কাশ্মীর নিয়ে উত্তাপের মধ্যে ভারতে সি চিন পিং
কাশ্মীর নিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে আজ শুক্রবার ভারত সফরে যাচ্ছেন চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং। মাত্র দুই দিন আগেও কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে ধারালো বাক্য বিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে। চীন বলেছে, কাশ্মীর পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলতে পারে, এমন একপেশে কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা করছে তারা।
জবাবে ভারত বলেছে, তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্য দেশের মন্তব্য করা উচিত নয়। জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা রদ করে রাজ্যটিকে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করার সিদ্ধান্তে গত মাসে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভারতের সমালোচনা করেছিল চীন।
আজ শুক্রবার এনডিটিভি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে এটা হবে সি চিন পিংয়ের দ্বিতীয় অনানুষ্ঠানিক বৈঠক। এই দুই নেতার মধ্যে প্রথম অনানুষ্ঠানিক বৈঠক হয় গত বছরের এপ্রিলে চীনের উহানে। ওই সময় চীনের প্রেসিডেন্টকে ভারতে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন মোদি। এই সফরে দুই নেতার সাক্ষাৎসহ কিছু কর্মসূচি রয়েছে। তাঁরা মহাবলিপুরম মন্দির, যা এখন মামল্লাপুরম নামে পরিচিত, সেটি পরিদর্শন করবেন এবং অনানুষ্ঠানিক ও প্রতিনিধি পর্যায়ে বৈঠক হবে। তাঁরা একসঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ ও নৈশভোজ করবেন।
দুদিন আগে চীনের প্রেসিডেন্ট পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। ওই সাক্ষাতের পর এক বিবৃতিতে চীন বলে, তারা জম্মু ও কাশ্মীর পরিস্থিতির দিকে গভীর নজর রাখছে। এই পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলতে পারে, এমন একতরফা পদক্ষেপের বিরোধিতা করছে চীন।
ওই বিবৃতির বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলে, ভারতের অবস্থান সম্পর্কে চীন ভালোভাবেই অবগত আছে। ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্য দেশের মন্তব্য করা উচিত নয়।
আজ স্থানীয় সময় বেলা দুইটার দিকে সি চিন পিং ভারতের চেন্নাই পৌঁছাবেন। সেখান থেকে চলে যাবেন মহাবলিরামপুর মন্দির পরিদর্শনে। ওই সময় মোদি তাঁকে নিয়ে তিনটি প্রাচীন স্থাপনা অর্জুনের তপস্যা, পঞ্চরথ ও শোর মন্দির পরিদর্শনে যাবেন। শোর মন্দিরে আয়োজিত একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করবেন দুজন।
কাল শনিবার সকালে তাজ ফিশারম্যানস কোভ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পাতে মোদি-সি চিন পিংয়ের অনানুষ্ঠানিক বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে। এরপরই দুই দেশের মধ্যে প্রতিনিধি পর্যায়ে বৈঠক হবে।
সরকারি সূত্র জানিয়েছে, কাল সকালের বৈঠকে কোনো সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হবে না বা যৌথ বিবৃতি ইস্যু করা হবে না। বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, উচ্চপর্যায়ে যোগাযোগ স্থাপন এবং মূল ইস্যুতে মতবিনিময় করা। আলোচনার প্রধান ইস্যু হিসেবে রয়েছে, জঙ্গিবাদে অর্থ জোগানো, প্রশিক্ষণ, অর্থায়নসহ জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোকে অন্যান্য সহায়তা। এ ছাড়া বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা ও দুই দেশের সীমান্ত ইস্যু থাকবে আলোচনায়। ভারত-চীন সীমান্তে সমস্যার সম্ভাব্য নির্ভরযোগ্য উপায় নিয়ে দুই পক্ষ আলোচনা করবে, যা পরে ঘোষণা দেওয়া হবে।