ইউক্রেনের সংঘাত পরিস্থিতি অবিলম্বে অবসানের আহ্বান জানিয়ে যৌথ বিবৃতি দিয়েছে ভারত ও ফ্রান্স। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ফ্রান্স সফরকালে গতকাল বুধবার দেশটির প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁর সঙ্গে তাঁর সরকারি বাসভবন এলিসি প্যালেসে বৈঠক করেন। ওই বৈঠক থেকেই ইউক্রেনের সংঘাত পরিস্থিতির অবসান চেয়েছেন দুই নেতা।
বিবৃতিতে ফ্রান্স ইউক্রেনে হামলার জন্য রাশিয়ার নিন্দা জানিয়েছে। তবে মোদি এবারও ইউক্রেনে হামলার জন্য রাশিয়ার নিন্দা জানাননি। তবে যৌথ বিবৃতিতে মোদি ও মাখোঁ উভয়েই ইউক্রেনে চলমান সংঘাতে মানবিক সংকটে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
মোদি তাঁর তিন দিনের ইউরোপ সফরে গত বুধবার ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস পৌঁছান। এর আগে তিনি জার্মানি ও ডেনমার্ক সফর করেন।আজ বৃহস্পতিবার তাঁর দেশে ফেরার কথা।
ভারত বেশিরভাগ অত্যাধুনিক সামরিক সরঞ্জাম রাশিয়া থেকে আমাদানি করে থাকে, দেশটি দীর্ঘ সময় ধরে রাশিয়া ও পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক ভারসাম্য বজায় রেখে আসছে। ভারত রাশিয়ার নিন্দা জানিয়ে চিঠি দিতে বা ইউক্রেনে হামলার জন্য জাতিসংঘে দেশটির বিরুদ্ধে ভোট দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
এদিকে ফ্রান্সই ‘ইউক্রেনে বেআইনি ও অন্যায্য আগ্রাসনের’ জন্য রুশ সেনাদের নিন্দা জানিয়েছেন। তবে দুই দেশই বলেছে, যুদ্ধ বৈশ্বিক খাদ্য–সংকটকে আরও তীব্র করতে পারে। ইউক্রেন পৃথিবীর অন্যতম গম উৎপাদনকারী দেশ।
মোদির সঙ্গে এই সংলাপকে সামনে রেখে মাখোঁর অফিস থেকে বলা হয়, মোদির সঙ্গে আলোচনায় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং এশিয়ার বাইরে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে যুদ্ধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে গুরুত্ব দেবেন।
ফ্রান্স রাশিয়ান অস্ত্র ও জ্বালানির বাইরে ভারতকে ‘বৈচিত্র্য’ দিয়ে সাহায্য করতে চায় বলেও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের অফিস থেকে বিবৃতিতে বলা হয়।
‘আস্থার সম্পর্ক’
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের বাসভবন সূত্র জানায়, মাখোঁর সঙ্গে মোদির গভীর উষ্ণ সম্পর্ক। ২০১৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত তিনবার ফ্রান্স সফর করেছেন মোদি। মাখোঁ ভারতে গেছেন ২০১৮ সালে।
এই সংলাপের আগে ফ্রান্সের পক্ষ থেকে দুই দেশের সম্পর্ককে ‘আস্থা’র বলে উল্লেখ করা হয়। পরে দুই দেশের যৌথ বিবৃতিতেও বলা হয়, দুই দেশই কৌশলগত ফ্রাঙ্কো-ইন্ডিয়ান সম্পর্ক বিশেষ করে ইন্দো-প্যাসিফিক সম্পর্ক শক্তিশালী করতে আগ্রহী।
ভারত ফ্রান্সের কাছ থেকে বেশ কিছুসংখ্যক রাফাল যুদ্ধবিমান ও ছয়টি সাবমেরিন কিনেছে। এ ছাড়া অসামরিক পারমাণবিক প্রকল্প নিয়ে প্যারিসের সঙ্গে সহযোগিতা করছে। অন্যদিকে ফ্রান্সের রাষ্ট্রীয় জ্বালানি কোম্পানি এডিএফ ভারতের পশ্চিম উপকূলে ছয়টি নেক্সট জেনারেশন ইপিআর রিঅ্যাক্টর তৈরি করতে চায়।