অভিনন্দনের ভিডিওটি নিয়ে ভারতে ক্ষোভ
পাকিস্তানের হাতে আটক ও পরে মুক্তি পাওয়া ভারতের পাইলট অভিনন্দন বর্তমানের এক ভিডিও বার্তা নিয়ে দেশটিতে হইচই ও সমালোচনা শুরু হয়ে গেছে। দেখা দিয়েছে ক্ষোভ। ওই ভিডিওতে তিনি পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ভূয়সী প্রশংসা করেন, সেই সঙ্গে করেন ভারতীয় গণমাধ্যমের সমালোচনাও। ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এমনও বলা হচ্ছে, উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানকে ভারতের কাছে হস্তান্তরের আগে জোর করে তাঁর ভিডিও রেকর্ড করা হয়েছে। ভারতের গণমাধ্যম অভিনন্দনের ভিডিওটিকে ‘অরুচিকর’ বলে মন্তব্য করেছে। বলেছে, এতে যুদ্ধবন্দীদের জন্য আন্তর্জাতিক নিয়মের ভঙ্গ হয়েছে।
শান্তির বার্তা দিতেই অভিনন্দনকে দ্রুত ছেড়ে দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। শুক্রবার ছেড়েও দিয়েছেন তিনি। কিন্তু তিনি ভারতের মাটিতে পা রাখার কয়েক মিনিট আগেই একটি ভিডিও প্রকাশ করে পাকিস্তান। ওই ভিডিওতে অভিনন্দন বলেছিলেন, ধরা পড়ার পর উত্তেজিত জনতার হাত থেকে পাকিস্তানি সেনারাই তাঁকে রক্ষা করেছিলেন। পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী খুবই পেশাদার। ভিডিওটি পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচার করা হয়। ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ভিডিওর সত্যতা যাচাই করা যায়নি।
ভারতের জম্মু কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ বলেন, ভারতীয় পাইলটকে দ্রুততার সঙ্গে ফেরত পাঠানোয় পাকিস্তানের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি হয়, যা আবার ওই ভিডিওর মাধ্যমে ক্ষুণ্নও হয়ে গেছে। কারণ, তাঁকে ফেরত পাঠানোর আগে ‘জোর করে বয়ান’ নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন সাবেক এই মুখ্যমন্ত্রী।
ইন্ডিয়া টুডে গ্রুপের একজন সম্পাদক ও সংবাদ পাঠক রাজদীপ সারদেসাই বলেন, মর্যাদা ছাড়া শান্তি হয় না। পাকিস্তান জেনেভা কনভেনশনের মৌলিক শিক্ষাটাও ভুলে গেছে।
প্রথমের দিকে জানা গিয়েছিল শুক্রবার দুপুরে অভিনন্দন বর্তমানকে ভারতের হাতে হস্তান্তর করা হবে। কিন্তু তিনি ভারতে ফেরেন রাত নয়টার কিছু আগে। মনে করা হচ্ছে, উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানকে দিয়ে ভিডিও বানানোর জন্য হস্তান্তরে দেরি হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ওই ভিডিও অভিনন্দন বলেছেন, ‘পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে আমি সময় কাটিয়েছি এবং আমি খুব অভিভূত।’ তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘ভারতীয় গণমাধ্যম সব সময় সত্যকে এদিক-সেদিক করে প্রকাশ করে।’
উল্লেখ্য, জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামায় গত ১৪ ফেব্রুয়ারি সন্ত্রাসী হামলার জেরে পাকিস্তানের ভেতরে ঢুকে বিমান হামলা চালায় ভারত। এর পরদিনই দুই বাহিনীর পাল্টাপাল্টি হামলায় বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ভারতীয় বিমানবাহিনীর পাইলট অভিনন্দন বর্তমান পাকিস্তানে আটক হন। এরপর ভারতের দাবির মুখে উত্তেজনা প্রমশনের আভাস হিসেবে অভিনন্দনকে ভারতে ফেরত পাঠায় পাকিস্তান।