চণ্ডীগড় মেয়র ভোটে কাল ‘‌ইন্ডিয়া’ জোটের প্রথম পরীক্ষা

ভারতের পাঞ্জাব ও হরিয়ানার রাজধানী চণ্ডীগড়ের মেয়র নির্বাচনে প্রথম পরীক্ষায় নামতে চলেছে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’। আগামীকাল বৃহস্পতিবার উত্তর ভারতের এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের পৌরসভার মেয়র ও ডেপুটি মেয়রের নির্বাচন উপলক্ষে আম আদমি পার্টি (আপ) ও কংগ্রেস ঐক্যবদ্ধভাবে বিজেপির মোকাবিলা করবে। সর্বভারতীয় স্তরে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ গঠনের পর এই প্রথম আঞ্চলিক স্তরে পরীক্ষায় নামছে তারা।

আম আদমি ও কংগ্রেস উভয়েই এই ভোট ও জোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে উল্লসিত। এতটাই যে আপ নেতা রাজ্যসভার সদস্য রাঘব চাড্ডা আগাম জয়ের ঘোষণা দিয়েছেন, ‘ইন্ডিয়া’ ১, বিজেপি ০। গত বুধবার তিনি বলেছেন, ‘এই ভোট কোনো স্বাভাবিক লড়াই নয়। এটা হতে চলেছে বিজেপির বিরুদ্ধে “ইন্ডিয়া” জোটের প্রথম লড়াই। এই লড়াই থেকেই শুরু হতে চলেছে বিজেপির বিরুদ্ধে ইন্ডিয়ার সর্বভারতীয় অভিযান।’

একই কথা প্রতিধ্বনিত কংগ্রেস মুখপাত্র পবন খেরার কণ্ঠেও। তিনি বলেছেন, ‘বিজেপিকে হারাতে আমরা একজোট হয়েছি। মেয়র পদে দাঁড়াচ্ছে আপ, ডেপুটি মেয়রের দুটি পদে কংগ্রেস। এটা এক নতুন সূচনা।’

চণ্ডীগড় পৌরসভার নির্বাচন হয় পাঁচ বছর অন্তর। কিন্তু মেয়র ও তাঁর দুই ডেপুটির পদে নির্বাচন হয় প্রতিবছর। ২০২১ সালে পৌরসভার ভোটে ৩৫টি কেন্দ্রের ১৪টিতে জিতে একক গরিষ্ঠ দল হয়েছিল আপ। ১২ কেন্দ্র জিতে বিজেপি দ্বিতীয়। কংগ্রেস পেয়েছিল ৮টি, শিরোমনি অকালি দল একটি। মেয়র ও ডেপুটি মেয়র পদের নির্বাচনে কংগ্রেস ও অকালি দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেনি। কিন্তু ভোটের আগে দলত্যাগ করে কংগ্রেসের কাউন্সিলর গুরুচরণজিৎ সিং কালা বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। আপের এক কাউন্সিলরের ভোট বাতিল হয়। ফলে মেয়র পদে বিজেপি জিতে যায়।

২০২২ ও ২০২৩ সালের ভোটেও জয়ী হন বিজেপি প্রার্থী। এবার কংগ্রেস ও আপ হাত মিলিয়েছে। গুরুচরণজিৎও বিজেপি ছেড়ে যোগ দিয়েছেন আপে। ফলে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের জয় সংশয়হীন। দুই দলই তাই ‘ইন্ডিয়া’ জোটের সাফল্য বড় করে তুলে ধরছে।

মেয়র পদে নির্বাচন চণ্ডীগড়ের মতো কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। যদিও এই ভোটে সমঝোতার অর্থ এই নয় যে, চণ্ডীগড়ের একমাত্র লোকসভা আসনেও লড়াইটা হবে ‘ইন্ডিয়া’র সঙ্গে বিজেপির। সেই সমঝোতায় আপ ও কংগ্রেস এখনো পৌঁছায়নি। পাঞ্জাব ও হরিয়ানার লোকসভা আসন নিয়েও দুই দলের কথাবার্তা চূড়ান্ত হয়নি।

চণ্ডীগড়ের স্থানীয় আপ নেতৃত্ব কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতায় রাজি ছিল না। যেমন সমঝোতায় রাজি নয় পাঞ্জাবের আপ ও কংগ্রেসের স্থানীয় নেতৃত্বও। কিন্তু দুই দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বই বিজেপির মোকাবিলায় সমঝোতায় আগ্রহী। শুধু এই দুই রাজ্যই নয়, আপ ও কংগ্রেস নেতৃত্ব আসন সমঝোতা নিয়ে কথা বলছে দিল্লি (৭), পাঞ্জাব (১৩), হরিয়ানা (১০), গুজরাট (২৬) ও গোয়ার (২) মোট ৫৮ লোকসভা আসন নিয়েও। দুই দলই জানাচ্ছে, এখন পর্যন্ত আলোচনা যথেষ্ট ইতিবাচক।

পাঞ্জাবে বিজেপি ও শিরোমনি অকালি দল জোটবদ্ধ ছিল। কৃষি আইনের বিরোধিতা করে অকালি দল জোট ছাড়ে। এখন আবার দুই দল কাছাকাছি আসতে চাইছে। যদিও কিছুই চূড়ান্ত হয়নি।