মণিপুরের মানবাধিকারকর্মী বাবলুকে ‘হুমকি’

মানবাধিকারকর্মী ও আইনজীবী বাবলু লইটংবামছবি: মানবাধিকার সংগঠন ফোরাম এশিয়ার ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া

ভারতের মণিপুরের মানবাধিকারকর্মী ও আইনজীবী বাবলু লইটংবামকে ‘হুমকি’ দেওয়া হয়েছে।

মণিপুরের সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, হিউম্যান রাইটস অ্যালার্ট নামের মানবাধিকার সংগঠনের পরিচালক বাবলুর বাড়িতে ২৩ সেপ্টেম্বর প্রায় ৫০ জনের একটি দল যায়। তাঁরা ‘মেইতেই লিপুনে’ নামের একটি সংগঠনের সদস্য। এটি উগ্রবাদী মেইতেই সংগঠন হিসেবে পরিচিত।

খবরে বলা হয়, ঘটনার সময় বাবলু বাড়িতে ছিলেন না। তাঁর পরিবারকে হুমকি দিয়ে বলা হয়, ভবিষ্যতে মেইতেইদের প্রধান শত্রু কুকি সম্প্রদায়কে মানবাধিকারের নামে সাহায্য করার চেষ্টা করলে বাবলুকে ফল ভোগ করতে হবে।

বাবলু আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মানবাধিকারকর্মী। তিন দশকের বেশি সময় ধরে মানবাধিকারকর্মী হিসেবে মণিপুর ও উত্তর-পূর্ব ভারতে কাজ করছেন তিনি। জাতীয় স্তরে তিনি মানবাধিকারের একজন বড় প্রবক্তা।

বাবলুর নিজের সম্প্রদায় মেইতেইদের একাংশ মনে করছে, তিনি তাঁর সমাজের বিরুদ্ধে কাজ করছেন।

২১ সেপ্টেম্বর মণিপুর প্রেসক্লাবে প্রবীণচন্দ্র নামের মেইতেই লিপুনের এক সদস্য অভিযোগ করে বলেন, সংঘাতের আগে গত বছর বাবলু মিয়ানমারের পিডিএফ নামের কুকি সংগঠনের একজন নারী কমান্ডারকে আশ্রয় দেন। বাবলু কুকিদের কাছ থেকে টাকা পেয়েছেন বলে অভিযোগ করেন প্রবীণচন্দ্র।

প্রবীণচন্দ্রের এই অভিযোগের দুই দিন পর বাবলুকে হুমকি দেওয়া হয়। তাঁর পরিবারের সদস্যদের জানিয়ে দেওয়া হয়, তিনি যদি পাল্টা কোনো বিবৃতি দেন, তবে তাঁকে ফল ভোগ করতে হবে। এ কারণেই তিনি বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি বলে বলা হচ্ছে।

রাজ্য পুলিশ জানিয়েছে, তারা বিষয়টি দেখছে।

বাবলুকে অতীতেও একাধিকবার হুমকি দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন ভারতের মানবাধিকার সংগঠন পিপলস ইউনিয়ন ফর সিভিল লিবার্টিজের জ্যেষ্ঠ সদস্য কবিতা শ্রীবাস্তব। তিনি আরও বলেন, মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের সমালোচনাকারী যে কেউ রাজ্যে চাপের মধ্যে আছেন। তাঁরা যেকোনো মুহূর্তে গ্রেপ্তার হতে পারেন। মণিপুরে এই মুহূর্তে মতপ্রকাশের কার্যত কোনো স্বাধীনতা নেই।

মণিপুরে গত দেড় বছরের সহিংসতায় অন্তত আড়াই শ জনের মৃত্যু হয়েছে। গৃহহীন হয়েছেন ৫০ হাজারের বেশি মানুষ। সহিংসতা শুরু হওয়ার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এখন পর্যন্ত মণিপুর সফর করেননি।