লোকসভার সদস্যপদ ফিরে পেলেন এনসিপির ফয়জল, রাহুলও কি পাবেন
ভারতের লাক্ষাদ্বীপের জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টির (এনসিপি) মহম্মদ ফয়জলের লোকসভার সদস্যপদ আজ বুধবার ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
গত ১৩ জানুয়ারি ফয়জলের লোকসভার সদস্যপদ খারিজ করা হয়েছিল। বারবার চেয়ে সদস্যপদ ফেরত না পেয়ে তিনি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। আজ সুপ্রিম কোর্টে ফয়জলের আবেদনের ওপর শুনানি শুরুর কিছু আগে তাঁর সদস্যপদ ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানায় লোকসভার সচিবালয়।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কি স্রেফ রাজনৈতিক কারণে ফয়জলের সংসদ সদস্যপদ এত দিন ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছিল না? লোকসভা সচিবালয়ের এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর রাজনৈতিক ভাগ্যও জড়িয়ে গেল বলে মনে করছেন দলটির শীর্ষ নেতারা।
রাহুলের লোকসভার সদস্যপদ খারিজ হওয়ার পর উচ্চ আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কংগ্রেস। সেখানে ফয়জলের দৃষ্টান্ত কংগ্রেস কাজে লাগাতে পারবে বলে মনে করা হচ্ছে। উচ্চ আদালতের আদেশ রাহুলের পক্ষে গেলে তিনি তাঁর সদস্যপদ দ্রুত ফেরত পাবেন বলে মনে করছে কংগ্রেস।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, মানহানির মামলায় রাহুলকে দোষী সাব্যস্ত করে সুরাটের নিম্ন আদালত যে রায় দিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে আজ বা আগামীকাল বৃহস্পতিবারের মধ্যে দলটি উচ্চ আদালতে আবেদন জানাবে।
ফয়জলের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালে মামলা হয়। ২০০৯ সালে সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পি এম সঈদের এক আত্মীয়কে হত্যাচেষ্টার সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।
১১ জানুয়ারি মামলার রায় হয়। রায়ে তিনিসহ অন্য আসামিদের ১০ বছরের কারাদণ্ড হয়। রায়ের দুই দিন পর ফয়জলের লোকসভার সদস্যপদ খারিজ করা হয়। এই প্রেক্ষাপটে নির্বাচন কমিশন ২৭ জানুয়ারি লাক্ষাদ্বীপে উপনির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে।
নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে কেরালা হাইকোর্টে আবেদন করেন ফয়জল। উপনির্বাচনের দুই দিন আগে ২৫ জানুয়ারি নিম্ন আদালতের সাজা স্থগিত করেন কেরালা হাইকোর্ট। এ অবস্থায় নির্বাচন কমিশন উপনির্বাচন বন্ধ করে দেয়। তখন থেকে বারবার চেষ্টা করেও ফয়জল তাঁর সদস্যপদ ফেরত পাচ্ছিলেন না। এমনকি লোকসভার সচিবালয় কোনো জবাব পর্যন্ত দিচ্ছিল না বলে তিনি অভিযোগ করেন।
এনসিপি নেতা শারদ পাওয়ার ৩০ জানুয়ারি লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার সঙ্গে দেখা করেন। তিনি ফয়জলের সদস্যপদ ফেরতের দাবি জানান। কিন্তু তারপরও সদস্যপদ ফেরত পাননি ফয়জল।
গত রোববার ফয়জল সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। আজ ফয়জলের আবেদনের ওপর শুনানি শুরুর আগেই তাঁর সদস্যপদ ফেরতের ঘোষণা আসে।
বিরোধীমহলের অভিযোগ, যে কাজ জানুয়ারিতে করা উচিত ছিল, লোকসভার সচিবালয় তা করল আজ। তারা সুপ্রিম কোর্টের তিরস্কার থেকে বাঁচতে এই কাজ করেছে।
এক বিরোধী নেতা বলেন, লোকসভা সচিবালয় যে শাসকদল বিজেপির অনুগত, এই ঘটনাই তার প্রমাণ।
‘মোদি’ পদবি নিয়ে মন্তব্যের জেরে চার বছর আগে রাহুলের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা হয়েছিল। এই মামলায় গত বৃহস্পতিবার রাহুলকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেন গুজরাটের সুরাটের নিম্ন আদালত। এর জেরে গত শুক্রবার রাহুলের লোকসভার সদস্যপদ খারিজ হয়।