নূপুর শর্মাকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত গ্রেপ্তার না করতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ
ভারতের শাসক দল বিজেপি থেকে সাময়িক বহিষ্কৃত মুখপাত্র নূপুর শর্মাকে আগামী ১০ আগস্ট পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা যাবে না। ওই সময়ের মধ্যে দেশের অন্য কোথাও তাঁর বিরুদ্ধে নতুন করে মামলা হলেও তাঁকে গ্রেপ্তার করা যাবে না। কোনো রকম দমনমূলক ব্যবস্থাও নেওয়া যাবে না। দেশটির সুপ্রিম কোর্ট আজ মঙ্গলবার এই নির্দেশ দিয়েছেন।
গত ২৬ মে এক টিভি অনুষ্ঠানে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করেছিলেন বিজেপির মুখপাত্র নূপুর শর্মা। সেই মন্তব্য ঘিরে দেশে–বিদেশে তুমুল উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল। বিপাকে পড়ে বিজেপি নূপুরকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করে। ভারত সরকারও জানায়, ওই মন্তব্য সরকারি অভিমত নয়। সরকারের চোখে সব ধর্মই সমান। সেই থেকে নূপুরের বিরুদ্ধে দিল্লিসহ দেশের বিভিন্ন রাজ্যে মামলার আবেদন করা হয়। সব মামলা এক জোট করে একটি রাজ্যের আদালতে বিচার শুরুর বিবেচনার জন্য সুপ্রিম কোর্টে আরজি জানিয়েছিলেন নূপুর।
সেই আবেদনের শুনানিতে ১ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং জে বি পর্দিওয়ালা নূপুর সম্পর্কে অত্যন্ত কঠোর মন্তব্য করে বলেছিলেন, তিনি একাই গোটা দেশে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছেন। দেশবাসীর কাছে তাঁর ক্ষমা চাওয়া উচিত। সেই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে নূপুর তাঁর আরজি প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন।
একই আরজি নিয়ে আজ নূপুর শর্মা আবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। নূপুরের আইনজীবী মনিন্দর সিং বলেন, নূপুর প্রাণ সংশয়ে রয়েছেন। রাজ্যে রাজ্যে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। একাধিক ব্যক্তি তাঁকে ধর্ষণ ও হত্যার হুমকি দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যে রাজ্যে মামলায় হাজির হওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভবপর হচ্ছে না। অতএব, সব মামলা একত্র করে বিচারের সুযোগ দেওয়া হোক।
যেসব রাজ্যে নূপুরের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, সেই রাজ্যকে এ–সংক্রান্ত নোটিশ পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং পর্দিওয়ালা। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারদের তাঁর নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করার বিষয়েও নোটিশ পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। নূপুরের বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগটি দায়ের হয়েছিল দিল্লিতে। এরপর একে একে পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র, তেলেঙ্গানা, কর্ণাটক, উত্তর প্রদেশ, আসাম ও জম্মু–কাশ্মীরে তাঁর বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হয়। কলকাতা পুলিশ নূপুরের বিরুদ্ধে পলাতক ব্যক্তি হিসেবে নোটিশও জারি করেছে।
বিচারপতিদের প্রশ্নের জবাবে আজ নূপুরের আইনজীবী এজলাসে বলেন, প্রথম মামলার আবেদন যেহেতু দিল্লিতে দাখিল হয়েছে, সেহেতু দিল্লি হাইকোর্টেই বিচার শুরু হোক। ১০ আগস্ট পরবর্তী শুনানিতে এই বিষয়ে আদালত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।