ভারতীয় এয়ারলাইনসগুলো ২০২৪ সালে প্রায় এক হাজার হামলার হুমকি পেয়েছে
চলতি বছর ভারতের বিভিন্ন এয়ারলাইনস ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ৯৯৯টি বোমা হামলার হুমকি পেয়েছে। গত ১ জানুয়ারি থেকে ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত এসব হুমকি এসেছে। ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচলবিষয়ক উপমন্ত্রী মুরলীধর মহল দেশটির পার্লামেন্টে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
মহল বলেন, ২০২৩ সালে এয়ারলাইনস ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ যতগুলো বোমা হামলার হুমকি পেয়েছিল, তার তুলনায় চলতি বছরের হুমকির পরিমাণ ১০ গুণ বেশি।
শুধু অক্টোবরের শেষ দুই সপ্তাহেই ৫০০-এর বেশি হামলার হুমকি এসেছে।
মহল বলেন, সাম্প্রতিক হুমকিগুলোর সবই ভুয়া বলে প্রমাণ হয়েছে। ভারতের কোনো বিমানবন্দর কিংবা বিমানে সত্যিকার অর্থে কোনো হুমকি শনাক্ত হয়নি।
তিনি আরও বলেন, এসব হুমকির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ ২৫৬টি অভিযোগ দায়ের করেছে।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে ভুয়া হুমকির সংখ্যা নজিরবিহীনভাবে বেড়েছে।
২০১৪ সাল এবং ২০১৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে বিমানবন্দরগুলোতে মাত্র ১২০টি ভুয়া হুমকির তথ্য নথিভুক্ত করা হয়েছিল। এর প্রায় অর্ধেক হুমকিই ছিল দিল্লি ও মুম্বাইয়ের বিমানবন্দরগুলোকে কেন্দ্র করে।
চলতি বছরের অক্টোবরে ভুয়া হুমকিকে কেন্দ্র করে কয়েকটি ফ্লাইট বিলম্বিত হয়েছে। কোনো কোনো ফ্লাইটের পথ ঘুরিয়ে অন্য পথে নিয়ে যেতে হয়েছে।
অনেক সময় অন্য দেশে হুমকিতে পড়া উড়োজাহাজগুলোর সুরক্ষায় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোরও সংশ্লিষ্টতার প্রয়োজন হয়।
যেমন গত অক্টোবরে এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের একটি উড়োজাহাজকে হামলার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। ওই উড়োজাহাজটিকে পাহারা দিতে তখন দুটি যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছিল সিঙ্গাপুরের বিমানবাহিনী।
একই মাসে এয়ার ইন্ডিয়ার আরেকটি ফ্লাইট নয়াদিল্লি থেকে শিকাগো যাওয়ার সময় কানাডার একটি দুর্গম বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করতে বাধ্য হয়।
পরে কানাডার কর্মকর্তারা বিমানবাহিনীর একটি উড়োজাহাজে করে ওই যাত্রীদের শিকাগোয় পাঠানোর ব্যবস্থা করে দেন।
ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয় তখন বলেছিল, ফ্লাইট চলাচল নিরাপদ করতে সম্ভাব্য সব প্রচেষ্টা চালাচ্ছে তারা।
ভারতের বিমানবন্দরগুলোতে একটি করে বোমা হামলার হুমকি পর্যালোচনাসংক্রান্ত কমিটি থাকে। তারা হুমকির মাত্রা পর্যালোচনা করে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়।
কোনো স্থানে বোমা হামলার হুমকি পেলে সাধারণত বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল, স্নিফার ডগ (শনাক্তকারী কুকুর), অ্যাম্বুলেন্স, পুলিশ এবং চিকিৎসকদের জড়ো করা হয়ে থাকে।
যাত্রীদের উড়োজাহাজ থেকে নামিয়ে উড়োজাহাজের ভেতর তল্লাশি চালানো হয়। যাত্রীদেরও আবার তল্লাশি করা হয়।
আর এসব করতে গিয়ে ফ্লাইটটি বিলম্বিত হয়। এতে এয়ারলাইনস এবং নিরাপত্তা সংস্থাগুলো হাজার হাজার ডলার ক্ষতির সম্মুখীন হয়।
ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচলবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, গত বছর ১৫ কোটির বেশি যাত্রী উড়োজাহাজে চলাচল করেছে। দেশটির ১৫০টির বেশি বিমানবন্দরে প্রতিদিন তিন হাজারের বেশি ফ্লাইট চলাচল করে। এসব বিমানবন্দরের মধ্যে ৩৩টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।