জম্মু–কাশ্মীরে শেষ দফার ভোট শুরু নির্বিঘ্নে

ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের বদগাম এলাকায় ভোটারের সারির পাশে দাঁড়িয়ে আছে এক কিশোরী। গত ২৫ সেপ্টেম্বর তোলারয়টার্স ফাইল ছবি

ভারতনিয়ন্ত্রিত জম্মু–কাশ্মীরে তৃতীয় ও শেষ দফার ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে। সকাল সাতটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ হবে জম্মু ডিভিশনের ২৪ ও কাশ্মীর উপত্যকার ১৬ আসনে। তিন দফার এই ভোটে শেষ পর্বেই আসনের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি—মোট ৪০টি।

আজ সকাল নয়টা পর্যন্ত এই কেন্দ্রগুলোয় ভোট পড়েছে গড়ে ১১ দশমিক ৬০ শতাংশ। মনে করা হচ্ছে, তৃতীয় দফাতেই সবচেয়ে বেশি ভোট পড়বে।

এই ধারণার কারণ, তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তান থেকে চলে আসা উদ্বাস্তুরা এই প্রথম ভোটদানের অধিকার পেয়েছেন বলে। ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ খারিজ হওয়ার পর এই উদ্বাস্তুদের ভোটদানের অধিকার দেওয়া হয়। বিজেপি এই উদ্বাস্তুদের ভোট পাবে বলে মনে করছে। শেষ দফায় মোট ভোটার প্রায় ৪০ লাখ।

এবারের ভোটের বিশেষত্ব, বিপুল সংখ্যায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর উপস্থিতি। এই স্বতন্ত্রদের মধ্যে রয়েছে নিষিদ্ধ জামায়াতে ইসলামি ও বিচ্ছিন্নতাবাদী বলে চিহ্নিত বারামুল্লা থেকে লোকসভায় নির্বাচিত স্বতন্ত্র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার রশিদের তৈরি আওয়ামি ইত্তেহাদ পার্টির প্রার্থীরা। এই স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রাপ্ত ভোটই নির্ধারণ করবে উপত্যকা থেকে কারা বেশি আসন জিতবে। ন্যাশনাল কনফারেন্স–কংগ্রেস–সিপিএমের জোট, পিডিপি, নাকি স্বতন্ত্ররা।

শেষ দফার ভোট গ্রহণের প্রাক্কালে সংবাদ সংস্থা এ এনআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইঞ্জিনিয়ার রশিদ বলেছেন, কোনো দলই এবার ২৫টির বেশি আসন জিততে পারবে না। যারাই সরকার গড়ুক, তাদের অন্যের সাহায্য নিতে হবে। এনসি, পিডিপির প্রচারে রশিদ ও তাঁর দলের প্রার্থীরা এমনকি জামায়াতে ইসলামিও বিজেপির ‘বি টিম’। তারা শুরু থেকেই প্রচার করছে, বি টিম বলেই বিজেপি সরকার রশিদকে প্রচার করতে জামিন পাইয়ে দিয়েছে। জামায়াতে ইসলামি নিষিদ্ধ হলেও তাদের ভোটে দাঁড়াতে উৎসাহিত করেছে।

ইঞ্জিনিয়ার রশিদের জামিন বুধবার পর্যন্ত। এরপর তাঁকে আবার দিল্লির তিহার জেলে ফেরত যেতে হবে। সন্ত্রাসবাদীদের আর্থিক মদদ দেওয়ার অভিযোগে ইউপিএ আইনে তিনি বন্দী রয়েছেন।

বিজেপি বাজি ধরেছে জম্মুর ৪৩ আসনের ওপর। ২০১৪ সালের নির্বাচনে এই অঞ্চল থেকে তারা সর্বোচ্চ আসন পেয়েছিল। ৩৭ আসনের মধ্যে জিতেছিল ২৫টি। এবারে তাদের লক্ষ্য একার ক্ষমতায় ৩০টির মতো আসন জেতা। সরকার গড়তে বাকি ১৬ আসনের জন্য তাদের চেয়ে থাকতে হবে উপত্যকায় জয়ী প্রার্থীদের দিকে।

পূর্ণাঙ্গ রাজ্যের মর্যাদা ফেরত পাওয়ার দাবি এই ভোটে প্রধান হয়ে উঠেছে। যদিও কোনো কোনো দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ৩৭০ অনুচ্ছেদ ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। বিজেপি বলেছে, কারও ক্ষমতা হবে না ৩৭০ অনুচ্ছেদ পুনর্বহাল করার। রাজ্যর মর্যাদা ফেরানোর প্রতিশ্রুতি তারাও দিয়েছে। যদিও সংশয় রয়েছে, বিজেপি সরকার গড়তে না পারলে জম্মু–কাশ্মীর দ্রুত রাজ্যের মর্যাদা ফিরে পাবে কি না। না পাওয়ার অর্থ, কেন্দ্রশাসিত এই অঞ্চল কেন্দ্রের ইচ্ছা অনুযায়ীই পরিচালিত হবে।