রতন টাটা বলেছিলেন, দাদি তাঁকে আত্মমর্যাদাশীল হতে শিখিয়েছিলেন

ভারতে ফিরে আসার আগে লস অ্যাঞ্জেলেসে রতন টাটাছবি: রতন টাটার ইনস্টাগ্রাম থেকে নেওয়া

দাদি লেডি নাভাজবাইয়ের কাছে বেড়ে উঠেছিলেন রতন টাটা। দাদি তাঁকে শিখিয়েছিলেন আত্মমর্যাদাশীল হতে।

ভারতের ফটো ব্লগ ‘হিউম্যানস অব বম্বের’ বরাত দিয়ে হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। হিউম্যানস অব বম্বেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রতন টাটা জানিয়েছিলেন তাঁর শৈশব, প্রেমের গল্প। ২০২০ সালে তিনি এ সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন।

রতন টাটা বলেছিলেন, ‘আমি আনন্দময় শৈশব কাটিয়েছি। কিন্তু যখন আমি ও আমার ভাই বড় হচ্ছিলাম, মা–বাবার বিবাহবিচ্ছেদের কারণে আমাদের খানিকটা র‍্যাগিং মোকাবিলা করতে হয়েছিল। এখন হরহামেশাই বিবাহবিচ্ছেদ হলেও সে সময়ে এতটা ছিল না।’

সে সময় দাদি তাঁদের সব রকম সাহস দিয়ে গেছেন বলে ওই সাক্ষাৎকারে জানান রতন টাটা। তিনি বলেন, ‘আমার মা আবার বিয়ে করার পরপর স্কুলে আমাদের নিয়ে অনেকে নানা কথা বলা শুরু করেছিল। তারা আক্রমণাত্মকভাবে সেসব বলত। কিন্তু আমাদের দাদি আমাদের শিখিয়েছিলেন, যেকোনো মূল্যে (নিজেদের) মর্যাদা ধরে রাখতে হবে। আমি আজও এই মূল্যবোধ ধারণ করে আছি।’

শুধু মা–বাবার বিচ্ছেদ নয়, নিজের প্রেম নিয়েও ওই সাক্ষাৎকারে অকপট হয়েছিলেন রতন টাটা। স্থাপত্যবিদ্যায় স্নাতক ডিগ্রি নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ শুরু করেছিলেন রতন টাটা। সেখানেই তিনি প্রেমে পড়েন এবং তাঁদের সেই প্রেম প্রায় বিয়ে পর্যন্ত গড়িয়েছিল।

রতন টাটা বলেন, ‘কলেজ শেষে, আমি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি শুরু করি। সেখানে আমি দুই বছর কাজ করেছিলাম। দারুণ এক সময় ছিল...চমৎকার আবহাওয়া ছিল, আমার নিজের গাড়ি ছিল এবং আমি আমার কাজকে ভালোবাসতাম। আমি প্রেমে পড়ি এবং প্রায় বিয়ে করে ফেলছিলাম। কিন্তু একই সময়ে আমাকে ফিরে যাওয়ার (ভারতে) সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে, অন্তত অল্প সময়ের জন্য হলেও। আমাকে আমার দাদির থেকে দূরে থাকতে হচ্ছিল এবং প্রায় সাত বছর ধরে তাঁর শরীর ভালো যাচ্ছিল না।’

আরও পড়ুন

দাদির সঙ্গে দেখা করতে ভারতে ফিরে যান জানিয়ে এই শিল্পপতি আরও বলেছিলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম, আমি যাকে বিয়ে করতে চাইছি সে আমার সঙ্গে ভারতে আসবে। কিন্তু ১৯৬২ সালে ইন্দো-চীন যুদ্ধের কারণে তার মা–বাবা তাকে কোথাও যেতে দিতে রাজি হননি। আমাদের সম্পর্ক ভেঙে যায়।’

মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে গত বুধবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ভারতের অন্যতম বৃহৎ শিল্পপ্রতিষ্ঠান টাটা সন্সের ইমেরিটাস চেয়ারম্যান রতন টাটা। তিনি ১৯৬২ সালে নিউইয়র্কের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থাপত্যে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৯১ সালে তিনি তাঁর চাচা জেআরডি টাটার কাছ থেকে টাটা গ্রুপের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।