ভারতজুড়ে গরম বাড়ছে, লোডশেডিং-হিটস্ট্রোকে মৃত্যুর আশঙ্কা
চলতি সপ্তাহে ভারতজুড়ে তাপমাত্রা আগের তুলনায় বেড়েছে। দাবদাহের সঙ্গে বেড়েছে লোডশেডিংয়ের আশঙ্কা। সতর্ক করে বলা হয়েছে, বাড়তি তাপমাত্রার কারণে লাখ লাখ মানুষ চরম ক্লান্তিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারে। হিটস্ট্রোকে মৃত্যুও বাড়তে পারে।
ওডিশার বাড়িপাডায় গত সোমবার তাপমাত্রা ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যায়। বছরের এ সময়ে তাপমাত্রা যে পর্যায়ে থাকে, সে তুলনায় তা প্রায় ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। ভারতের আবহাওয়া দপ্তর (আইএমডি) বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, ওডিশা, উত্তর প্রদেশ, হরিয়ানাসহ কয়েকটি অঞ্চলে দাবদাহের সতর্কতা জারি করেছে।
ভারতবাসীর অত্যন্ত উষ্ণ গ্রীষ্মকালের অভিজ্ঞতা এবারই প্রথম নয়। গত বছর ভারতে গরম তুলনামূলক বেশি পড়েছিল। ওই দাবদাহে অসংখ্য মানুষ দুর্ভোগে পড়েছিল। এমনকি গরমে বৈশ্বিক সরবরাহ বিঘ্নিত হয়েছিল। এ পরিস্থিতিতে চরম আবহাওয়া নিয়ে মানুষকে ভাবতে শেখায়। এবারও অনেকটা একই পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে।
গরম বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষ শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের ব্যবহার বাড়িয়ে দেয়। বেড়ে যায় ফ্যানের ব্যবহার। এতে বিদ্যুতের চাহিদাও বেড়ে যায়। বাড়তি চাপ পড়ে ন্যাশনাল গ্রিডে। বাড়ে লোডশেডিংয়ের আশঙ্কা। এবারের গরমেও এর ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে না।
প্রচণ্ড গরমের মধ্যে যখন আর্দ্রতা বেশি থাকে, তখন বাইরে কাজ করা মানুষের বিপদ বাড়ে। তাঁদের অনেককেই প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ছাড়া কাজ করতে হয়। বিশেষত নির্মাণশ্রমিক, কৃষিশ্রমিক, হকার, রিকশাওয়ালাদের। তাই প্রতিবছরই এসব পেশার অনেক মানুষ প্রচণ্ড গরমে হিটস্ট্রোকে মারা যান। এবারের গরমেও এ চিত্র দেখা যেতে পারে।
ইতিমধ্যে এমন ঘটনাও ঘটেছে। মহারাষ্ট্রে ভূষণ পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ১১ জন হিটস্ট্রোকে মারা গেছেন। গত রোববার নভি মুম্বাইয়ের একটি উন্মুক্ত স্থানে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। বেলা সাড়ে ১১টায় শুরু হয়ে ১টা পর্যন্ত চলেছে তা। অনুষ্ঠান চলার সময় নভি মুম্বাইয়ের তাপমাত্রা ছিল সর্বোচ্চ ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অনুষ্ঠানস্থল লোকজনে ভর্তি ছিল। তবে তাঁদের মাথার ওপর কোনো ছায়ার ব্যবস্থা ছিল না।
বাড়তি গরমের সময় মানুষকে শীতল থাকার উপায় মেনে চলা ও স্বাস্থ্য নিয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। আবহাওয়া দপ্তরের পরামর্শ, তাপের সরাসরি সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে। হালকা, ঢিলেঢালা ও সুতির কাপড় পরতে হবে। বাইরে গেলে মাথা ঢেকে রাখতে হবে।
প্রচণ্ড গরমের কারণে ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার চলতি সপ্তাহে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। অন্য কয়েকটি রাজ্যে স্কুলের সময়সীমা সংক্ষিপ্ত করে আনা হয়েছে।