মমতার ভাতিজা অভিষেককে মন্দিরে ঢুকতে দেয়নি মতুয়ারা

উত্তর চব্বিশ পরগনায় মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মস্থান ঠাকুরনগরের প্রধান মন্দিরে বাধার মুখে ঢুকতে পারেননি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তর চব্বিশ পরগনা, পশ্চিমবঙ্গ, ১১ জুন
ছবি: প্রথম আলো

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাতিজা, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে মন্দিরে ঢুকতে দেয়নি মতুয়াদের একাংশ। রোববার বিকেলে উত্তর চব্বিশ পরগনায় মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মস্থান ঠাকুরনগরে এ ঘটনা ঘটে।

দলকে দুর্নীতিমুক্ত করতে ও উন্নয়নমুখী প্রকল্পে মানুষের সমর্থন পেতে গত এপ্রিলে ‘নবজোয়ার যাত্রা’ শুরু করে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রস। রোববার নবজোয়ার যাত্রা ছিল ঠাকুরনগরে। এখানে মতুয়াদের আরাধ্য গুরু হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরের স্মৃতিধন্য প্রধান মন্দিরে পূজা দেওয়ার কথা ছিল অভিষেকের। এ জন্য সাজানো হয়েছিল ঠাকুরনগরকে।

কিন্তু অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে এত মাতামাতি মেনে নিতে পারছিল না অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি ও বিজেপির সংসদ সদস্য শান্তনু ঠাকুর। অভিষেক যাতে প্রধান মন্দিরে প্রবেশ করতে না পারেন, সে জন্য মতুয়াদের সংঘবদ্ধ করেন তিনি। শান্তনুর সমর্থকেরা মন্দিরের সামনে জড়ো হয়ে অভিষেকের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। ‘চোর’ ‘চোর’ বলে চিৎকার করেন এবং কালো পতাকা দেখান।

শান্তনু ঠাকুর প্রশ্ন তোলেন, ‘অভিষেক কী এত বড় নেতা হয়ে গেছেন যে তাকে এত বড় সংবর্ধনা দেওয়া হবে? এখানে তো প্রধানমন্ত্রী নরেদ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও এসেছিলেন, তখন তো বড় মাপের সংবর্ধনা দেওয়া হয়নি।’ তাঁর এমন বক্তব্যের পর শান্তনু ঠাকুরের সমর্থকেরা মূল মন্দিরের দরজা বন্ধ করে দেন।

এর আগে অভিষেকের জন্য তৈরি করা তোরণ ভেঙে দেয় মতুয়ারা। ফলে ঠাকুরনগরে এসে মূল মন্দিরে ঢুকতে না পেরে পাশের একটি মন্দিরে পূজা দেন অভিষেক। এ সময় তৃণমূলের ১২ সংসদ সদস্য, বিধায়ক ও নেতারা তাঁর সঙ্গে ছিলেন।

পরে অভিষেক সাংবাদিকদের বলেন, ঠাকুরনগর মতুয়াদের প্রধান ধর্মীয় পীঠস্থান, কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। এই পীঠস্থান সব মানুষের। তাই আজ যেভাবে তাঁর জন্য প্রধান মন্দিরের দরজা বন্ধ করে দিল, তার জবাব পাবে।

মূলত মতুয়াদের আরাধ্য ঠাকুরকে নিয়ে কিছুদিন আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটি বিরূপ মন্তব্য করায় খেপে যায় মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ। এরপরই মতুয়াদের একাংশ মমতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ দেখাতে থাকে। দাবি তোলে, মমতাকে ওই বিরূপ মন্তব্য করার জন্য ক্ষমা চাইতে হবে।