লরেন্স বিষ্ণোইকে মারলে কোটি টাকা পুরস্কার
জেলবন্দী গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোইকে মারতে পারলে কোটি টাকার বেশি পুরস্কার ঘোষণা করল ক্ষত্রিয় করণী সেনা। রাজস্থানের রাজপুতদের সংগঠিত করা এই বাহিনী জানিয়েছে, যে পুলিশ কর্তা লরেন্সকে এনকাউন্টারে খতম করতে পারবেন, তাঁকে ১ কোটি ১১ লাখ ১১ হাজার ১১১ রুপি পুরস্কার দেওয়া হবে।
লরেন্স বিষ্ণোই এখন গুজরাটের সবরমতী জেলে বন্দী। সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের এনসিপি নেতা বাবা সিদ্দিক আততায়ীর গুলিতে নিহত হন। বিষ্ণোইয়ের দল সেই হত্যার দায় নিয়েছে। বাবা সিদ্দিকের ছেলে কংগ্রেস নেতা জিসান ও হিন্দি সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা সালমান খান বিষ্ণোই গ্যাংয়ের হিটলিস্টে রয়েছেন। সালমানকে আগেই হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। এবার নতুন করে বলা হয়েছে, পাঁচ কোটি রুপি না দিলে তাঁরও পরিণতি হবে বাবা সিদ্দিকের মতো।
পুরস্কারের খবর এক ভিডিও বার্তায় জানিয়েছেন ক্ষত্রিয় করণী সেনার জাতীয় সভাপতি রাজ শেখাওয়াত। নবভারত টাইমস সেই খবর জানিয়ে বলেছে, রাজ শেখাওয়াত বলেছেন, মানুষের নিরাপত্তার জন্যই লরেন্সকে মেরে ফেলা উচিত। যে পুলিশ কর্মকর্তা তা করবেন, তাঁকে ওই টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে।
শেখাওয়াত ওই ভিডিও বার্তায় কেন্দ্র ও গুজরাট সরকারের নিন্দা করে বলেছেন, লরেন্সের মতো সাংঘাতিক এক খুনিকে সামলাতে দুই সরকারই ব্যর্থ। তাই যিনি বা যাঁরা লরেন্সেকে খতম করতে পারবেন, করণী সেনা তাঁকে বা তাঁদের পুরস্কৃত করবে। তিনি আরও বলেন, করণী সেনার সাবেক প্রধান সুখদেব সিং গোগামেদিকে ২০২৩ সালের ৫ ডিসেম্বর লরেন্সই খুন করিয়েছিলেন। খুনের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বিষ্ণোই গ্যাং সেই দায়ভার নিয়েছিল।
নিজে জেলে থাকলেও সেখান থেকেই লরেন্স তাঁর দল পরিচালনা করেন। আন্তর্জাতিক স্তরে মাদক ও অস্ত্র পাচারের সঙ্গে তিনি জড়িত। সালমান খানের কাছ থেকে ‘প্রটেকশন মানি’ না পেয়ে কিছুদিন আগে মুম্বাইয়ে তাঁর বাড়ির সামনে বিষ্ণোই গ্যাং গুলি চালিয়েছিল। সেটা ছিল সতর্কবার্তা। হুঁশিয়ারি। এরপর সালমান খানের নিরাপত্তা আরও বাড়ানো হয়। কানাডাতেও এই গোষ্ঠীর প্রভাব রয়েছে। ২০২৩ সালে তারা খালিস্তানি সমর্থক বলে পরিচিত সুখা দুনেকের হত্যার দায় নিয়েছিল। কানাডায় জনপ্রিয় শিল্পী অমৃত পাল ধীলন ও জিপ্পি গারেওয়ালের ওপর হামলাও চালিয়েছিল তারা।
রাজপুতদের সংগঠিত করার জন্য প্রধানত ক্ষত্রিয় করণী সেনা গড়ে তোলা হয়। রাজপুত নেতা লোকেন্দ্র সিং কালভি ২০০৬ সালে এই সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল রাজপুতদের জন্য সরকারি শিক্ষা ও চাকরিতে সংরক্ষণ। পরবর্তী সময়ে রাজপুতদের জাতিগত সম্মান ও স্বার্থ রক্ষাই হয়ে ওঠে সংগঠনের মূল লক্ষ্য।
করণী সেনা ২০০৮ সালে ‘যোধা আকবর’ সিনেমা প্রদর্শনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিল। ২০১৭ সালে আন্দোলন করে ‘পদ্মাবতী’ সিনেমার বিরুদ্ধেও। তাদের দাবি ছিল, দুই সিনেমাতেই ঐতিহাসিক তথ্যের বিকৃতি ঘটানো হয়েছে। রাজপুত রমণীদের অসম্মান করা হয়েছে। সেই আন্দোলনের কারণে সিনেমাটির নাম ‘পদ্মাবতী’র বদলে ‘পদ্মাবত’ রাখতে বাধ্য হয়েছিলেন নির্মাতারা।