নারী থেকে হয়ে গেলেন পুরুষ কর্মকর্তা, বদলে গেল নামও

ভারতের হায়দরাবাদের রাজস্ব কর্মকর্তা এম অনুসূয়া এখন এম অনুকাথির সূর্য নামে পরিচিত হবেনছবি: লিংকডইন থেকে নেওয়া

ভারতের হায়দরাবাদের নারী রাজস্ব কর্মকর্তা এম অনুসূয়া সরকারি চাকরিতে তাঁর নাম ও লিঙ্গপরিচয় পরিবর্তনের জন্য আবেদন করেছিলেন বেশ আগে। তাঁর সেই আবেদন মঞ্জুর করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। ফলে এখন থেকে তিনি পরিচিত হবেন ‘এম অনুকাথির সূর্য’ নামে। সরকারি নথিতে তাঁর লিঙ্গপরিচয় হবে—পুরুষ।

এম অনুসূয়া ভারতীয় রাজস্ব পরিষেবা (আইআরএস) কর্মকর্তা। বাড়ি তামিলনাড়ুতে। বর্তমানে হায়দরাবাদের কাস্টমস এক্সাইস অ্যান্ড সার্ভিস ট্যাক্স আপিল ট্রাইব্যুনালে যুগ্ম কমিশনার পদে আছেন তিনি।

সরকারি চাকরির নথিতে নিজের নাম পরিবর্তন করে এম অনুসূয়ার বদলে ‘এম অনুকাথির সূর্য’ রাখতে এবং লিঙ্গপরিচয় ‘নারী’র বদলে ‘পুরুষ’ করার আবেদন করেছিলেন তিনি।

গতকাল মঙ্গলবার জারি করা ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন রাজস্ব বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারির সই করা এক অফিস আদেশে বলা হয়েছে, এম অনুসূয়ার আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে। এখন থেকে সব সরকারি নথিতে তিনি নতুন নাম ও লিঙ্গপরিচয়ে পরিচিত হবেন।

মানুষের লৈঙ্গিক পরিচয়ের বিষয়ে সাম্প্রতিক সময়ে হায়দরাবাদ বেশকিছু অগ্রগতি অর্জন করেছে। ২০১৫ সালের জুনে হায়দরাবাদের ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব লিগাল স্টাডিজ অ্যান্ড রিসার্চ ইউনিভার্সিটির আইনের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেন, স্নাতক সনদে শিক্ষার্থীর লিঙ্গপরিচয় রাখা যাবে না।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের এই আবেদন মঞ্জুর করে। শিক্ষার্থীরা জানান, ভারতে লৈঙ্গিক বিভাজন দূর করার পথে এটা এক ধাপ অগ্রগতি। এরও প্রায় বছর সাতেক পর ২০২২ সালের মার্চে এসে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এলজিবিটিকিউ শিক্ষার্থীদের আবাসনের জন্য হোস্টেলে একটি ফ্লোর চালু করে।

গত বছর হায়দরাবাদের ইএসআই হাসপাতালে জরুরি মেডিসিন প্রোগ্রামে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পড়াশোনা শুরু করেন ট্রান্সজেন্ডার চিকিৎসক রুথ পল জন। ভারতে এই কোর্সে পড়াশোনা শুরু করা প্রথম চিকিৎসক তিনি।

এ ছাড়া গত বছরের জুলাইয়ে ওসমানিয়া জেনারেল হাসপাতালে প্রথম ট্রান্সজেন্ডার ক্লিনিক চালু করে তেলেঙ্গানা রাজ্য সরকার। সেখানকার চিকিৎসকদের সংবেদনশীলতার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় ২০২৪–২৫ শিক্ষাবর্ষের জন্য ‘ট্রান্সজেন্ডার নীতি’ ঘোষণা করে। এর আগে ভারতের প্রথম উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় এমন নীতি গ্রহণ করেছিল।