কলকাতায় চিকিৎসককে ধর্ষণ-হত্যার ঘটনায় আটক সঞ্জয়ের ‘পলিগ্রাফ পরীক্ষার’ অনুমতি
ভারতের কলকাতায় আর জি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন সঞ্জয় রায়ের পলিগ্রাফ পরীক্ষার অনুমতি দিয়েছেন শিয়ালদহ আদালত। ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার (সিবিআই) করা আবেদনটি গতকাল সোমবার মঞ্জুর হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে কেউ মিথ্যা কথা বলছেন কি না, তা শনাক্ত করার জন্য পলিগ্রাফ পরীক্ষা করা হয়ে থাকে।
৯ আগস্ট উত্তর কলকাতার আর জি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সভাকক্ষে এক নারী চিকিৎসকের মরদেহ পাওয়া যায়। দীর্ঘ ৩৬ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন শেষে ওই দিন রাতে তিনি সেখানে বিশ্রাম নিতে গিয়েছিলেন। ৩১ বছর বয়সী ওই নারী চিকিৎসকের মরদেহটি ছিল রক্তাক্ত, শরীরের নানা জায়গায় জখমের চিহ্ন ছিল। ময়নাতদন্তে বলা হয়েছে, ওই নারী চিকিৎসককে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছিল। তাঁর শরীরের বাইরের অংশে ১৬টি ও ভেতরে ৯টি ক্ষতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। যৌন নির্যাতনেরও আলামত পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় প্রধান সন্দেহভাজন হিসেবে আটক হন সঞ্জয় রায়।
প্রাথমিকভাবে এ ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল কলকাতা পুলিশকে। তাদের তদন্ত সমালোচনার মুখে পড়ে। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে এখন মামলাটির তদন্ত করছে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআই।
তবে জিজ্ঞাসাবাদে সঞ্জয় মিথ্যা কথা বলছেন কি না, তা জানতে পলিগ্রাফ পরীক্ষা করতে চায় সিবিআই। তারা এ ব্যাপারে শিয়ালদহ আদালতের শরণাপন্ন হয়েছিল। গতকাল আদালত তা মঞ্জুর করেছেন।
নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ-হত্যার ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতাসহ পুরো রাজ্যে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ শুরু হয়। বিক্ষোভের মুখে আর জি কর হাসপাতালের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ পদত্যাগ করেন। তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করছে সিবিআই।
চিকিৎসকদের শুরু করা এই বিক্ষোভ এখন গণমানুষের আন্দোলনে পরিণত হয়েছে।
আজও রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদ সমাবেশ হবে। কলকাতার রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য ভবন ঘেরাও করার কর্মসূচিও রয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন হাসপাতালে জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতির কর্মসূচি রয়েছে।
চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় ভারতের সুপ্রিম কোর্টের স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে গ্রহণ করা মামলাটির আজ শুনানি হবে। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের ডিভিশন বেঞ্চে এ শুনানি হবে। এই বেঞ্চের অন্য দুজন বিচারপতি হলেন বিচারপতি জে বি পার্দিওয়াল ও বিচারপতি মনোজ মিশ্র।