মহারাষ্ট্রে আবার কৃষকদের মুম্বাই লংমার্চ
ভারতের মহারাষ্ট্রে আবার শুরু হয়েছে কৃষকদের লংমার্চ। নাসিক থেকে মুম্বাই, প্রায় ২০০ কিলোমিটার যাত্রাপথে পতপত করে উড়ছে সিপিএমের কিসান সভার লাল পতাকা। পাঁচ বছর আগে, ২০১৮ সালে যেসব দাবি আদায়ের জন্য ৫০ হাজারেরও বেশি কৃষক নাসিক থেকে মুম্বাই গিয়ে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস নিয়ে ঘরে ফিরেছিলেন, এবারের যাত্রা সেই প্রতিশ্রুতি পূরণের দাবিতেই। কৃষকদের অভিযোগ, পাঁচ বছরে মহারাষ্ট্রের সরকার তাঁদের কোনো দাবিই পূরণ করেনি।
পাঁচ বছর আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বিজেপির সেই সময়কার মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফাডনিস। তারপর রাজ্যে পালা বদল ঘটেছে দুবার। প্রথমবার শিবসেনা–এনসিপি–কংগ্রেস সরকার, পরে শিবসেনার শিন্ডে গোষ্ঠীর সঙ্গে বিজেপির নতুন জোট সরকার। সেই সময়কার মুখ্যমন্ত্রী এখন উপমুখ্যমন্ত্রী।
বিজেপির বহু প্রচারিত ‘ডাবল ইঞ্জিন’ সরকারের কাছে এবার পুরোনো দাবি নতুনভাবে পেশ করে কৃষক নেতারা বলবেন, পাঁচ বছর আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতি এখন পূরণ করা হোক। রাজ্য সরকার সে সময় দাবি পূরণে নজর না দিয়ে কেন্দ্রের আনা বিতর্কিত তিন কৃষি আইন রূপায়ণে মনোযোগী হয়েছিল। দেশব্যাপী কৃষক বিদ্রোহের মুখে পড়ে তিনটি আইনই সরকারকে প্রত্যাহার করতে হয়েছিল।
এবার সেসব পুরোনো দাবি পূরণের আগে কৃষকেরা চাইছেন, পেঁয়াজের দাম মারাত্মক পড়ে যাওয়ায় যে বিপুল ক্ষতির মুখে নাসিকের কৃষক সমাজ পড়েছেন, তার সুরাহায় কুইন্টালপ্রতি ৬০০ রুপি সহায়তার সিদ্ধান্ত এখনই ঘোষণা করা হোক। নাসিক পেঁয়াজ উৎপাদনে শীর্ষে। দেশের মোট প্রয়োজনের বেশির ভাগই এখানে উৎপন্ন হয়। এই বছর পেঁয়াজের দাম অসম্ভব পড়ে যাওয়ায় কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত। রপ্তানি সত্ত্বেও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। মহারাষ্ট্র সরকার পেঁয়াজ চাষিদের কুইন্টালপ্রতি ৩০০ রুপি সাহায্য দেওয়ার কথা গত সোমবার জানিয়েছে। কৃষকেরা তাতে সন্তুষ্ট নন।
কৃষকদের ১৭ দফা দাবির অন্যতম হচ্ছে অরণ্যের অধিকার আইন কার্যকর করা। মহারাষ্ট্রে ওই আইন এখনো মানা হয়নি। কার্যকর হলে ভূমিহীন আদিবাসী কৃষকেরা সংরক্ষিত বনাঞ্চলে চাষের অধিকার পাবেন। অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে, দিনে অন্তত ১২ ঘণ্টা বিদ্যুতের জোগান, বকেয়া কৃষি ঋণ মওকুফ এবং পেঁয়াজ, তুলা, সয়াবিন ও ছোলার উপযুক্ত সহায়ক মূল্য বেঁধে দেওয়া।
কৃষকদের লংমার্চ আগামী রোববার মুম্বাই পৌঁছনোর কথা। সোমবার তাঁদের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে রাজ্য সরকারের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। কিসান সভার নেতাদের দাবি, ১০ হাজার কৃষকের পদযাত্রার বহর প্রতিদিন বাড়ছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষও পদযাত্রায় অংশ নিচ্ছেন।