উত্তরাখন্ডে বিতর্কিত অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিল পাস
বিজেপিশাসিত ভারতের উত্তরাখন্ড রাজ্যের বিধানসভায় পাস হয়ে গেল বিতর্কিত অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিল। গতকাল বুধবার এ–সংক্রান্ত বিল পাস হয়েছে। এখন তা পাঠানো হবে রাষ্ট্রপতির কাছে। তাঁর সম্মতি পেলেই বিলটি আইনে পরিণত হবে। স্বাধীনতা–উত্তর ভারতের প্রথম রাজ্য হবে উত্তরাখন্ড, যেখানে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু হবে।
এই বিল পাস করাতে রাজ্য বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়েছিল। গতকালই তা শেষ হয়। মুখ্যমন্ত্রী পুস্কর সিং ধামি এই কারণে রাজ্যবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
বিল পাস হওয়ার পর ধামি গণমাধ্যমকে বলেন, এই আইন কারও বিরুদ্ধে নয়। বরং সমানাধিকারের পক্ষে। কারণ, এই বিল সবাইকে সমান অধিকার দিতে চেয়েছে।
পুস্কর সিং ধামি আরও বলেন, ‘এই আইন নারীদের জন্য, যাঁরা সমাজের প্রতি পদে পদে সমস্যার মুখোমুখি হন। এই আইন তাঁদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেবে। বিলটি পাস হওয়ার পর আমরা এখন তা অনুমোদনের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাব।’
বিজেপি ও রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের তিনটি ঘোষিত প্রতিশ্রুতির অন্যতম এই অভিন্ন দেওয়ানি বিধি। অন্য দুটি সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ খারিজ ও অযোধ্যায় রামমন্দির তৈরি। এই দুই প্রতিশ্রুতি বিজেপি সরকার পূরণ করেছে। বাকি রয়েছে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি।
জাতীয় পর্যায়ে সেই আইন প্রণয়নের আগে বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলোয় তা আগে পাস করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সেই লক্ষ্যে সবার চেয়ে এগিয়ে গেল উত্তরাখন্ড।
অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিবাহ, বিবাহবিচ্ছেদ, উত্তরাধিকার, সন্তান দত্তক গ্রহণ, সম্পত্তির অধিকার ইত্যাদি বিষয়ে সব ধর্ম, জাত ও বর্ণের মানুষের জন্য এক দেওয়ানি আইনের কথা বলে। যদিও বিজেপি আগেই জানিয়েছে, উত্তর–পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ও আদিবাসীদের ক্ষেত্রে এই আইন বলবৎ হবে না। সে ক্ষেত্রে সারা দেশের সব মানুষের জন্য এই আইন কী করে অভিন্ন হয়, সেই প্রশ্ন উঠছে।
উত্তরাখন্ডের আইনে একত্র বাস বা ‘লিভ ইন’ সম্পর্কের ক্ষেত্রে বেশ কিছু বিধিনিষেধ রাখা হয়েছে। যেমন ইচ্ছুক যুগলদের ওই সিদ্ধান্তের কথা স্থানীয় প্রশাসনকে আগে থেকে জানাতে হবে। নাম নথিভুক্ত করতে হবে। যুগলের বয়স ২১ বছরের কম হলে অভিভাবকদের অনুমতি নিতে হবে। সরকারও প্রয়োজনে কথা বলবে। এ নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। মুসলমান সমাজের পক্ষ থেকে আপত্তি জানানো হয়েছে।