বিলকিস বানু নিয়ে সরব রাহুল-প্রিয়াঙ্কা, বিজেপির মুখে কুলুপ
ভারতের বহুল আলোচিত বিলকিস বানুর ধর্ষণ মামলায় সাজাপ্রাপ্তদের ফের জেলে পাঠানোর নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। তিনি বলেছেন, কারা অপরাধীদের রক্ষক, সুপ্রিম কোর্ট তা স্পষ্ট বুঝিয়ে দিলেন। আজ সোমবার বিলকিস মামলার রায় জানার পর ‘এক্স’ হ্যান্ডেলে বিজেপিকে আক্রমণ করে রাহুল বলেন, ‘ভোটের স্বার্থে ন্যায়বিচারকে রসাতলে পাঠানোর প্রবৃত্তি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার পক্ষে বিপজ্জনক। সুপ্রিম কোর্টের রায় আজ স্পষ্ট করে দিল অপরাধীদের রক্ষক কারা।’ রাহুল লিখেছেন, ‘বিলকিস বানুর নিরলস সংগ্রাম অহংকারী বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে ন্যায়বিচারের প্রতীক হয়ে থাকবে।’
রাহুলের পাশাপাশি কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদেরাও আজ সরব হন। একই রকম সরব তৃণমূল কংগ্রেস, শিবসেনা (উদ্ধব), সিপিএম এবং এআইএমআইএমও। দেশজুড়ে এই সমালোচনার মাঝে বিজেপি নীরব। সুপ্রিম কোর্ট রায় দেওয়ার সময় গুজরাট সরকারের কড়া সমালোচনা করা সত্ত্বেও বিজেপির পক্ষ থেকে একটি মন্তব্যও করা হয়নি। দলের রাজ্য বা কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বিস্ময়করভাবে নীরব।
আজ সোমবার সুপ্রিম কোর্টের রায় আসার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই সরব হন প্রিয়াঙ্কা। রাহুলের আগেই তিনি বিজেপির সমালোচনা করে বলেন, ‘ভারতীয় জনতা পার্টির নারী বিরোধী নীতির ওপর চাদরের যে আচ্ছাদন ছিল, এই রায় তা খুলে দিয়েছে।’ এক্স হ্যান্ডেলে ‘বাহাদুরির সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য’ বিলকিস বানুকে অভিনন্দন জানিয়ে প্রিয়াঙ্কা লিখেছেন, ‘এই রায় ন্যায়ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা জোরদার করবে।’
এআইএমআইএম নেতা আসাউদ্দিন ওয়েইসিও বিজেপির কড়া সমালোচনা করে আজ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, প্রথম দিন থেকেই বিজেপি অপরাধীদের পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছে। অথচ যে বিলকিস জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লড়াই করছেন, তাদের উচিত ছিল তাঁর পাশে দাঁড়ানো। কিন্তু গুজরাট সরকার তা না করে অপরাধীদেরই মুক্তি দিয়েছে। ওয়েইসি বলেন, এই রায় থেকে একটা বার্তাই যাওয়া প্রয়োজন, ধর্ষক যে দলেরই হোক তাদের রেয়াত করা হবে না।
গুজরাটের জেল থেকে বিলকিসের ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত কারা নিয়েছিলেন ‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ পত্রিকা আজ তা জানিয়ে দিয়েছে। গোধরা জেল উপদেষ্টা কমিটির সদস্যদের নাম জানিয়ে এই সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে আজ বলা হয়, গোধরার এমএলএ ও রাজ্যের সাবেক পূর্ণ মন্ত্রী চন্দ্রসিং রাউলজি ওই কমিটির অন্যতম সদস্য ছিলেন। ধর্ষকদের মুক্তির পর তিনিই বলেছিলেন, মুক্তিপ্রাপ্তরা সবাই ব্রাহ্মণ ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী। তিনি বলেছিলেন, জেলারও তাঁদের সম্পর্কে ভালো কথা বলেছিলেন। জানিয়েছিলেন, জেলবাসের সময় তাঁদের সবার ব্যবহার ভালো ছিল।
রাউলজি ছাড়া ওই কমিটির অন্য সদস্যরা ছিলেন তিন বিজেপি নেতা গোধরা পৌরসভার সাবেক সভাপতি মুরলীধর মূলচন্দানি, কালোলের বিধায়ক সুমন চৌহান এবং গোধরা শহরের বিজেপির সম্পাদক স্নেহ ভাটিয়া। রাউলজি সেই সময় বলেছিলেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতেই তাঁরা ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আজ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বি ভি নাগরত্না ও বিচারপতি উজ্জ্বল ভূঁইয়া রায়ে বলেছেন, অপরাধীদের সাজা মওকুফ করার আবেদনে অনেক তথ্য গোপন করা হয়েছিল। কারচুপিও করা হয়েছিল।