তিস্তায় শুষ্ক মৌসুমে পানি থাকে না, বাংলাদেশকে দেব কোথা থেকে: মমতা

মমতা বন্দোপাধ্যায়ফাইল ছবি

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গতকাল সোমবার বলেছেন, শুষ্ক মৌসুমে তো তিস্তা নদীতে পানি থাকে না, আমরা বাংলাদেশকে পানি দেব কোথা থেকে?

গতকাল বিকেলে নবান্নে রাজ্যের উত্তরবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে পর্যালোচনা বৈঠক করেছেন মমতা। বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

বাংলাদেশের সঙ্গে গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তির নবায়ন নিয়ে মোদি সরকারেরও সমালোচনা করেন মমতা। তিনি বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গকে উপেক্ষা বা এড়িয়ে কেন্দ্রীয় সরকার গঙ্গার চুক্তি নবায়ন করতে চাইছে। এটা আমরা মেনে নেব না। কারণ, গঙ্গার পানির সঙ্গেও পশ্চিমবঙ্গের স্বার্থ জড়িত। যেমনটা তিস্তার পানির সঙ্গে। তাই এই চুক্তি করতে হবে পশ্চিমবঙ্গকে নিয়ে।’

জলপাইগুড়ির তিস্তা ব্যারেজ
ফাইল ছবি: প্রথম আলো

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘তিস্তায় কি পানি আছে যে বাংলাদেশকে দেওয়া যাবে? তাহলে তো উত্তরবঙ্গের মানুষ খাওয়ার পানিই পাবেন না। বর্ষার তিস্তার সঙ্গে যেন গ্রীষ্মের তিস্তাকে এক করে দেখা না হয়।’

কেন্দ্রীয় সরকার অবশ্য আগেই জানিয়ে দিয়েছে, এখনো গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তির নবায়ন হয়নি। কেন্দ্রীয় সরকার তো বলেই দিয়েছে, প্রতিটি ক্ষেত্রেই কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের মতামত নিয়েছে।

অবশ্য মমতা অভিযোগ তুলেছেন, রাজ্য সরকারকে না জানিয়ে মোদি সরকার গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি নবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে।

মমতা বলেছেন, ‘সিকিম থেকে নেমে আসা তিস্তা নদীর ১৪টি স্থানে সিকিম সরকার বাঁধ দিয়ে ১৪টি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প চালু করেছে। এতে করে ওই বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য সব জলই টেনে নিচ্ছে সিকিম সরকার। এই সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে আমরা কেন্দ্রীয় সরকারকে বারবার জানালেও তারা কোনো উদ্যোগ নেয়নি। ফলে সেই সমস্যায় এখনো ভুগছে পশ্চিমবঙ্গের তিস্তাপারের মানুষ।’

১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর বাংলাদেশের সঙ্গে গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি সম্পাদন হয়েছিল। চুক্তি করেছিলেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়া এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৩০ বছর মেয়াদি এই চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে ২০২৬ সালে।

গতকাল মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের পর বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, আলোচনা দুই রকমের হয়। দ্বিপক্ষীয় ও ত্রিপক্ষীয়। দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয় দুই দেশের সরকারের মধ্যে। আর স্বাভাভিকভাবে সেখানে রাজ্যের কোনো ভূমিকা থাকে না। আর ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হবে দুই দেশ ও পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের মধ্যে। তখন নিশ্চয়ই রাজ্যের বক্তব্য শোনা হবে।