ভোটে দাঁড়াচ্ছেন না মেহবুবা মুফতি

ভারতের জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতিছবি: এএনআই

ভারতের জম্মু–কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতি আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না। তাঁর ভাষ্য, মুখ্যমন্ত্রী হলে মানুষের প্রত্যাশা ও দলের প্রতিশ্রুতি তিনি রক্ষা করতে পারবেন না। মুখ্যমন্ত্রীর কোনো ক্ষমতাই থাকবে না।

আজ বুধবার শ্রীনগরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনার সময় এই বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি এই সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যাও দেন মেহবুবা। তিনি বলেন, ‘এখন পরিস্থিতি আগের চেয়ে অনেক বদলে গেছে। বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধে মুখ্যমন্ত্রী হয়ে আমি ২০১৬ সালে ১২ হাজার ব্যক্তির বিরুদ্ধে দায়ের করা এফআইআর বাতিল করেছিলাম। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। তাঁদের বিরুদ্ধে সংঘর্ষবিরোধী জারি করেছিলাম। এখন মুখ্যমন্ত্রী হলে কি এসব করতে পারব? পারব না। তাহলে মুখ্যমন্ত্রী হয়ে কী লাভ?’

মেহবুবাকে প্রশ্ন করা হয় ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি) ও সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহর মতো তাঁরও মন পরিবর্তন হবে কি না। ওমর আবদুল্লাহ বলেছিলেন, রাজ্যের মর্যাদা ফেরত না আসা পর্যন্ত তিনি বিধানসভার ভোটে দাঁড়াবেন না। অথচ তিনি গান্দারবাল কেন্দ্র থেকে ভোটে দাঁড়িয়েছেন। সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ভোটে না দাঁড়ানোর সেই সিদ্ধান্ত ভুল ছিল।

এই প্রসঙ্গে পিডিপি নেত্রী বলেন, ‘ওমর বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী হলে একজন পিয়ন বদলির জন্যও তাঁকে উপরাজ্যপালের কাছে দরবার করতে হবে। আমি পিয়নের বদলি নিয়ে চিন্তিত নই। আমি চিন্তিত দলের প্রতিশ্রুতি পালন নিয়ে। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী হয়ে আমি কি পারব দলের অঙ্গীকারগুলো পূর্ণ করতে? পারব না। তাহলে কী লাভ?’

মেহবুবা আরও বলেন, ‘আজকের পরিস্থিতিতে কেন্দ্রশাসিত জম্মু–কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রীকে প্রতি পদে উপরাজ্যপালের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে। ২০০২ সালে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বাঁধার সময়েও আমাদের কিছু লক্ষ্য ছিল। আমরা সৈয়দ আলী শাহ গিলানিকে মুক্তি দিয়েছিলাম। ২০১৪ সালে বিজেপির সঙ্গে জোট বাঁধার সময় লিখিত আশ্বাস নিয়েছিলাম যে ৩৭০ অনুচ্ছেদে হাত দেওয়া যাবে না। আফসপা (সেনাবাহিনীর বিশেষ আইন) প্রত্যাহার করা হবে। পাকিস্তান ও হুরিয়ত নেতাদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে হবে। এখন এসব করা অসম্ভব। এখন এনসি ও কংগ্রেস জোট বেঁধেছে কোনো লক্ষ্য ও কর্মসূচি ছাড়াই। তাদের একমাত্র লক্ষ্য ক্ষমতায় আসা।’

সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে মেহবুবা বলেন, যাঁদের বন্দী রাখা হয়েছে, তাঁদের মুক্তি দেওয়া উচিত। বারামুল্লার সংসদ সদস্য রশিদ কিংবা বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা হিসেবে বন্দী সাবির শেখদের জামিন দেওয়া দরকার। ভোটের আগে তাঁদের মুক্তি দিলে গণতন্ত্রের পক্ষে মঙ্গল।

মেহবুবা মুফতি ভোটে না দাঁড়ালেও তাঁর দল নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াচ্ছে না। তাঁর মেয়ে ইলতিজা মুফতি বিজবেহরা কেন্দ্র থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।