কাশ্মীরের সব দলই দ্রুত বিধানসভা নির্বাচন চায়
কাশ্মীর উপত্যকার সব স্বীকৃত রাজনৈতিক দল দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানাল। কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে আলোচনায় সব দলের নেতারা বলেন, গত ১০ বছর বিধানসভার ভোট হয়নি। গত ছয় বছর কোনো নির্বাচিত সরকারও নেই। এই অবস্থার দ্রুত পরিবর্তন করে এখনই বিধানসভার ভোট করানো হোক।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভার ভোট চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যে করাতে হবে। কেন্দ্রশাসিত এই অঞ্চলের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে তাই মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার ও দুই কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার এবং এস এস সান্ধু গতকাল বৃহস্পতিবার তিন দিনের সফরে জম্মু-কাশ্মীর গেছেন। শ্রীনগরে তাঁরা উপত্যকার কমিশন স্বীকৃত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে সব দলই আর কালক্ষেপণ না করে ভোট করানোর দাবি জানায়।
নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা আগামীকাল শনিবার বৈঠক করবেন জম্মুর রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে। এই সফরে তাঁরা স্থানীয় পুলিশ, প্রশাসন ও সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন। ভোট হলে বাড়তি নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করতে হবে কি না, হলে কতটা ও কোথায়, কোন কোন বিষয়ে কমিশনকে বিশেষ নজর দিতে হবে, সেসব বিষয়ও তাঁরা খতিয়ে দেখবেন।
দিনভর আলোচনায় কমিশন বৈঠক করে ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি), পিডিপি, কংগ্রেস, বিজেপি ও বিএসপির প্রতিনিধিদের সঙ্গে।
এনসি প্রতিনিধিদলের নেতা নাসির আসলাম ওয়ানি বৈঠকের পর গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বিধানসভার শেষ ভোট হয়েছিল ১০ বছর আগে। ছয় বছর ধরে ক্ষমতায় রয়েছে অনির্বাচিত কয়েকজন। পাঁচ বছর আগে রাজ্যও ভাগাভাগি হয়ে গেছে। খারিজ হয়েছে ৩৭০ অনুচ্ছেদ। এই অবস্থা আর চলতে পারে না। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, আমরা ভোট চেয়েছি, যাতে জনতার চাহিদা নির্বাচিত প্রতিনিধিরা মেটাতে পারেন।’
নাসির আসলাম বলেন, এর আগেও ভোটের প্রস্তুতি দেখতে কমিশন এসেছিল। কিন্তু ভোট করায়নি। বারবার এ জিনিস চলতে পারে না। উপরাজ্যপাল, তাঁর উপদেষ্টা ও কিছু আমলা জম্মু-কাশ্মীরের ভাগ্য চালাতে পারেন না।
বিজেপির প্রতিনিধিরাও নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন। বৈঠকের পর বিজেপির স্থানীয় নেতা অবতার সিং বলেন, যেসব প্রার্থী ভোটে দাঁড়াবেন, তাঁদের ও রাজনৈতিক কর্মীদের উপযুক্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা প্রশাসনকে করতে হবে।
পিডিপির নেতা খুরশিদ আলম বলেন, ভোট পেছানোর জন্য আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অজুহাত দেওয়া ঠিক হবে না। পর্যটকেরা খোলামনে কাশ্মীরে আসছেন। অমরনাথ যাত্রাও নির্বিঘ্নে চলছে। কাজেই ভোট না করার কোনো কারণ নেই।
একই অভিমত কংগ্রেসের। এই দলের নেতা গুলাম নবী মোঙ্গা বলেন, ‘কমিশনকে বলেছি, আমরা নিজেদের মাদার অব ডেমোক্রেসি বলে বড়াই করি অথচ আমাদের জনতা গণতন্ত্রের বাইরে রয়েছে। অবিলম্বে ভোট করানো হোক।’
রাজনৈতিক দলের নেতারা নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েও কথা বলেছেন। অধিকাংশের অভিযোগ, লোকসভা ভোটের সময় সব দলের নেতা-কর্মীদের নিরাপত্তা সমান ছিল না। সব দলকে সমানভাবে প্রচারের সুযোগ দেওয়া হয়নি। বিধানসভা ভোটের সময় এই বৈষম্য যেন না থাকে।