টানা বৃষ্টি, ভারতের হিমাচল ও উত্তরাখন্ডে রেড অ্যালার্ট
ভারতের উত্তরাঞ্চলে চার দিন ধরে চলা বৃষ্টি, বন্যা ও ভূমিধসে বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। ভারতের আবহাওয়া বিভাগ বলেছে, তারা আজ বুধবার হিমাচল প্রদেশ ও উত্তরাখন্ডের তিনটি জেলার জন্য রেড অ্যালার্ট জারি করেছে।
টানা বৃষ্টির কারণে হিমাচল প্রদেশে সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। স্থানীয় সড়কগুলো যেন নদীতে এবং নদীগুলো যেন উত্তাল সাগরে পরিণত হয়েছে। গাড়ি, বাড়ি, সেতুসহ সামনে যা পড়ছে, সব পানিতে ভেসে যাচ্ছে।
হিমাচল প্রদেশে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩১ জনে দাঁড়িয়েছে। পাশের রাজ্য উত্তরাখন্ডে বৃষ্টির কারণে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া উত্তর প্রদেশে একজন, পাঞ্জাবে একজন ও রাজস্থানে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং গতকাল মঙ্গলবার উড়োজাহাজে কাসোল, মানিকারন, খির গঙ্গা ও পালগা এলাকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছেন। তিনি বলেন, শুধু কুল্লুর সাইঞ্জ এলাকাতেই ৪০টি দোকান ও ৩০টি ঘরবাড়ি পানিতে ভেসে গেছে।
রাজ্যে তিন থেকে চার হাজার কোটি রুপির ক্ষয়ক্ষতির হিসাব করা হয়েছে। চার দিন ধরে জম্মু–কাশ্মীর, উত্তরাখন্ড, হিমাচল প্রদেশ, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ ও রাজস্থানে ‘ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি’ হচ্ছে। এতে নদী, খাল ও নর্দমাগুলোর পানি উপচে পড়ে বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে এসব রাজ্যের অবকাঠামোগুলোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, জরুরি সেবা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত উত্তরাখন্ডে ভ্রমণ না করতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে রাজ্য কর্তৃপক্ষ।
নয়াদিল্লিতে যমুনা নদীর পানির স্তর বেড়ে ১০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এটি আরও বাড়ার আভাস দেওয়া হয়েছে।
ভারতের সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশনের (সিডব্লিউসি) বন্যা পর্যবেক্ষণ–বিষয়ক পোর্টালে বলা হয়েছে, আজ ভোর পাঁচটা নাগাদ নয়াদিল্লির ওল্ড রেলওয়ে ব্রিজ এলাকায় যমুনা নদীর পানির স্তর ২০৭ মিটার ছাড়িয়ে গেছে। মূলত হরিয়ানার হাতনিকুণ্ড বাঁধ থেকে পানি ছাড়ার পর নদীর পানির স্তর বেড়েছে।
বন্যা দুর্গত এলাকাগুলোর পরিস্থিতি এবং যমুনা নদীর পানির স্তর বাড়ার বিষয়টি পর্যবেক্ষণের জন্য ১৬টি নিয়ন্ত্রণকক্ষ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমের জন্য ৫০টির বেশি যন্ত্রচালিত নৌকা মোতায়েন করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নিয়ে ডুবুরি ও চিকিৎসাকর্মীদের দলও প্রস্তুত আছে।