নতুন সংলাপ নিয়ে বিজেপির পক্ষে প্রচারে মিঠুন চক্রবর্তী
২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গের সর্বশেষ বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে ঝড় তোলা বলিউড তারকা মিঠুন চক্রবর্তী এবার লোকসভা নির্বাচনেও প্রচার চালাচ্ছেন। প্রথম দফায় ভোটের প্রচারে গিয়েছিলেন জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারে। এখন দ্বিতীয় দফায় ভোটের প্রচার চলছে। ২৬ এপ্রিল হবে দ্বিতীয় দফায় ভোট। দ্বিতীয় দফায় ভোট হবে দর্জিলিং, দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট ও উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ আসনে। সেই নির্বচনে প্রচারের জন্য মাঠে নেমেছেন মিঠুন।
মিঠুন চক্রবর্তী পুরোনো কৌশল বদলে নতুন এক কৌশল নিয়ে মাঠে নেমেছেন। এবার তিনি প্রচারের নতুন অস্ত্র করেছেন নতুন এক সংলাপকে। বালুরঘাটে গিয়ে সেই নতুন ডায়ালগ দেন তিনি। বলেন, ‘চিমটি কাটব এখানে, লাল পিঁপড়ের মতো জ্বলবে এখানে, ওখানে, সেখানে।’ গত বিধানসভা নির্বাচনে ‘এমএলএ ফাটাকেষ্ট’ ছবির ধাঁচে প্রচার চালিয়েছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী।
২০২১ সালের ৭ মার্চ কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে বিজেপি আয়োজিত জনসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী। সেদিনের সমাবেশে জনগণের আবদারের পরিপ্রেক্ষিতে ‘এমএলএ ফাটাকেষ্ট’ চলচ্চিত্রে তাঁর একটি সংলাপ ‘মারব এখানে, লাশ পড়বে শ্মশানে’ শুনিয়েছিলেন।
নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে সেই জনসভায় মিঠুন জানিয়েছিলেন, নতুন একটি সংলাপে নির্বাচনের প্রচার চালাবেন তিনি। সেই সংলাপ হলো, ‘আমি জলঢোঁড়া নই, বেলেবোড়াও নই, আমি জাত গোখরো, এক ছোবলেই ছবি।’
এ দুটি সংলাপকে অস্ত্র করে গত বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে ঝড় তুলেছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী। প্রচারের জন্য বিভিন্ন এলাকায় গেলে তাঁর মুখ থেকে ভক্তরা শুনতে চাইতেন এই সংলাপ। তিনিও ভক্তদের বিমুখ করতেন না।
কিন্তু নির্বাচনী প্রচারে মিঠুন চক্রবর্তীর এই সংলাপ মেনে নিতে পারেনি রাজ্যে ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেস। তাদেরই সমর্থক একটি সংগঠন কলকাতার মানিকতলার সিটিজেনস ফোরাম মানিকতলা থানায় মিঠুন চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে একটি মামলা ঠুকে দেয়। মামলায় দাবি করা হয়েছিল, মিঠুন চক্রবর্তীর এমন সংলাপ নির্বাচনের প্রচারে সহিংসতা ছড়াতে উসকানি দিয়েছিল।
মিঠুন অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা এফআইআর খারিজের আবেদন জানান কলকাতা হাইকোর্টে। হাইকোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দ এই মামলার শুনানিতে প্রশ্ন করেন, ‘শোলে সিনেমায় আমজাদ খান থেকে শুরু করে বহু নামী অভিনেতার কণ্ঠে হাজারো সিনেমায় শোনা গেছে বহু ঐতিহাসিক সংলাপ। আমি কি বলতে পারি সেসব সংলাপ থেকে দেশে কোনো হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেছে? তাই নির্বাচন–পরবর্তী হিংসাত্মক ঘটনার সঙ্গে ওই সংলাপের কোনো যোগসূত্র থাকতে পারে না। এতে করে অভিযোগ থেকে মুক্তি মেলে মিঠুন চক্রবর্তীর।’