মণিপুরে আবার তিনজনের মরদেহ উদ্ধার
মণিপুরে পরিস্থিতি আবারও ক্রমে জটিল হতে শুরু করেছে। গত বৃহস্পতিবার সেখান থেকে চার ব্যক্তি নিখোঁজ হন। আজ শুক্রবার তাঁদের মধ্যে তিনজনের মরদেহ মধ্য মণিপুরের বিষ্ণুপুর জেলায় পাওয়া গেছে। পুলিশ বলছে, বুধবার থেকে তাঁরা নিখোঁজ ছিলেন। যাঁদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে তাঁরা হলেন ইবোমচা সিং (৫০), তাঁর ছেলে আনন্দ সিং (২০) ও তাঁদের প্রতিবেশী রোমেন সিং (৩৮)। দ্বারা সিং নামের এক ব্যক্তি এখনো নিখোঁজ। পুলিশ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনী নিখোঁজ ব্যক্তির সন্ধানে তল্লাশি চালাচ্ছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই সম্প্রদায়ের সদস্য ওই চারজন বিষ্ণুপুর জেলার কুম্বি-হাওতাক অঞ্চলের বাসিন্দা। এলাকাটি কুকি-জোমি অধ্যুষিত চূড়াচাঁদপুর জেলার লাগোয়া।
পুলিশ বলেছে, শুক্রবার ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী এবং মণিপুর পুলিশ একটি অভিযানে অংশ নেয়। বিষ্ণুপুর এবং চূড়াচাঁদপুরের মধ্যে লেইকেই গ্রামে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে জঙ্গিদের সঙ্গে গুলি বিনিময় হয়েছে। চূড়াচাঁদপুর জেলায় দুম্পি নামে ছোট পাহাড়ের ওপর থেকে তারা পুলিশের ওপর গুলি চালায়। তবে এই গুলি বিনিময় কাদের সঙ্গে হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়।
স্থানীয় মানুষের অনেকেই মনে করছেন, যাদের জঙ্গি বলা হচ্ছে, তাদের গত বছরে মণিপুরের কুকিসহ অন্য জনজাতির মানুষ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছিল। ২০২৪ সালে কুকি জনজাতির সংজ্ঞা পাল্টে গিয়েছে। কারণ, জনজাতি গোষ্ঠীর একাংশের তফসিলি আদিবাসী হিসেবে মর্যাদা কেড়ে নিতে চাইছে রাজ্য সরকার। সে কারণেই পরিস্থিতি ক্রমে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এখন কোথাও সংঘাত বাধলেই বলা হচ্ছে কুকি জঙ্গিরা সেনাবাহিনীর ওপর আক্রমণ করেছে। এই তথ্য সঠিক নয় বলে চূড়াচাঁদপুরের এক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র প্রথম আলোকে জানিয়েছেন।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে মণিপুরের আদিবাসী গোষ্ঠীর দুটি সংগঠন জানিয়েছিল, মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং কুকি জোমি এবং চিন উপজাতির মানুষের তফসিলি আদিবাসী হিসেবে যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা কেড়ে নিয়ে সংঘাতের একটা নতুন আবহাওয়া সৃষ্টি করার চেষ্টা করছেন। তার আগে গত বুধবার মুখ্যমন্ত্রী সিং বলেছিলেন, আদিবাসীদের জনজাতি মর্যাদা থাকা উচিত কি না, তা খতিয়ে দেখতে একটি কমিটি গঠন করা হচ্ছে।
গত বছরের মে মাস থেকে চলা সহিংসতার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২০০ জনের বেশি প্রাণ হারিয়েছেন।