অরুণাচলের আরও ৩০ এলাকার নতুন নাম দিল চীন, ভারতের প্রত্যাখ্যান
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর প্রশ্ন রেখে বলেছেন, ‘আপনার বাড়ির নাম আমি বদলে দিলে সেটা কি আমার হয়ে যায়? মালিকানা বদলে যায়? যায় না। তেমনই অরুণাচল প্রদেশের নাম বদলালেও এই রাজ্য কখনো চীনের হবে না।’
গতকাল সোমবার গুজরাটের সুরাট শহরে এক অনুষ্ঠানে জয়শঙ্কর এ মন্তব্য করার পর আজ মঙ্গলবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রও একই বিবৃতি দিলেন।
অরুণাচল প্রদেশের বিভিন্ন এলাকার নাম চীন অনেক দিন ধরেই বদলে দিচ্ছে। গত শনিবার তারা ওই প্রদেশের আরও ৩০টি এলাকার নাম তাদের পছন্দমতো বদলে দিয়েছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই জয়শঙ্কর এমন মন্তব্য করলেন।
এবার নিয়ে চতুর্থবারের মতো চীন অরুণাচলের কিছু এলাকার নাম পরিবর্তন করে নিজেদের মতো করে রাখল। এবার ১১টি আবাসিক এলাকা, ১২টি পার্বত্য এলাকা, ৪টি নদী, ১টি হ্রদ, ১টি গিরিপথ ও ১টি ফাঁকা ভূমির নাম রেখেছে চীন। এর আগে ২০১৭, ২০২১ ও ২০২৩ সালে চীন তিন দফায় অরুণাচলের বিভিন্ন এলাকার নাম নিজেদের মতো করে রেখেছিল।
চীনের কাছে অরুণাচল প্রদেশের নাম ‘জাংনান’। তাদের দাবি, ওই এলাকা দক্ষিণ তিব্বতের অংশ। মাঝেমধ্যেই তারা অরুণাচল প্রদেশের বিভিন্ন এলাকার নাম তাদের মতো করে রাখে। ভারত প্রতিবারই সেই উদ্যোগ ‘অসাড় ও অহেতুক’ জানিয়ে বলে আসছে, অরুণাচল প্রদেশ ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ ছিল, আছে ও থাকবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল আজ সেই বিবৃতির পুনরাবৃত্তি করে বলেন, ‘চীন মাঝেমধ্যেই এ ধরনের উদ্যোগ নেয়। অরুণাচল প্রদেশের জায়গার নাম বদলে দেয়। আমরা দৃঢ়ভাবে তা প্রত্যাখ্যান করি। মনগড়া নাম দিলেই বাস্তব পরিস্থিতি বদলে যায় না। অরুণাচল প্রদেশ ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। আগামী দিনেও তা–ই থাকবে।’
জয়শঙ্কর গুজরাটের সুরাটে ওই মন্তব্য করেন বণিক সভার এক অনুষ্ঠানে। ৩০টি অঞ্চলের নাম বদল ছাড়াও চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্প্রতি জানায়, জাংনান (অরুণাচল প্রদেশ) চীনা ভূখণ্ডের অংশ। ভারত বেআইনিভাবে তার নাম অরুণাচল প্রদেশ দিয়ে কর্তৃত্ব কায়েম রেখেছে। চীন তা মেনে নেয় না। তীব্র বিরোধিতা করে। চীনের এই মনোভাব নিয়েই জয়শঙ্করকে প্রশ্ন করা হয়েছিল। জবাবে ওই কথা জানিয়ে তিনি বলেন, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় (এলএসি) ভারতীয় সৈন্য পর্যাপ্ত সংখ্যায় মোতায়েন আছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও জানিয়েছে, চীনের দাবি অবাস্তব। অরুণাচল প্রদেশের জনগণ উন্নয়নের সুফল ভোগ করে যাবে।
এর আগে জয়শঙ্কর বলেছিলেন, চীনের সঙ্গে সীমান্ত আলোচনায় ভারত অবশ্যই এই প্রসঙ্গের অবতারণা করবে।