আস্থা ভোটে জিতে সরকার বাঁচালেন ঝাড়খন্ডের হেমন্ত সোরেন
বিহারের পর এবারে ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চার (জেএমএম) নেতৃত্বাধীন জোট সরকারও টিকে গেল। ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন আস্থা ভোটে জয় পেয়েছেন। ঝাড়খন্ড বিধানসভার আস্থা ভোটে ৮১ জন এমএলএর মধ্যে ৪৭ জন সমর্থন করেছেন সোরেনের নেতৃত্বাধীন জেএমএম সরকারকে। সোরেনই বিধানসভায় আস্থা ভোট চেয়ে তাঁর সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন।
ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যে গত জুন মাসের শেষ দিকে সরকারের পতন হয়। সরকার গঠন করে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দল বিজেপি। এরপর বিহার ও দিল্লিতেও সরকার পতনের চেষ্টা করেছিল দলটি। দিল্লিতে তারা এখনো সফল হয়নি। কিন্তু চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এদিকে বিহারে বিজেপির ‘অপচেষ্টা’ আপাতত ব্যর্থ বলেই মনে হচ্ছে।
গত কয়েক দিনে নতুন করে সরকার ফেলার চেষ্টা শুরু হয় পূর্ব ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যে। নির্বাচন কমিশন রাজ্যপাল রমেশ বেসকে চিঠি পাঠিয়ে বলেছে, মুখ্যমন্ত্রী ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চা দলের প্রধান হেমন্ত সোরেন বিধায়ক হিসেবে ‘অযোগ্য’। তাঁর নির্বাচন ত্রুটিপূর্ণ বলে মন্তব্য করে প্রশ্ন তুলেছে কমিশন। বিষয়টি নিয়ে রাজ্যপাল এখনো চুপ। তবে দিন কয়েকের মধ্যেই তিনি কেন্দ্রীয় সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে এ বিষয়ে তাঁর মতামত জানাতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে ঝাড়খন্ডের পত্র-পত্রিকায় বলা হয়েছে, এই চিঠিতে নির্বাচন কমিশন রাজ্যপালকে জানিয়েছে, এমএলএ হিসেবে হেমন্ত সোরেনের নির্বাচন অবৈধ। সোরেনের বিধানসভার সদস্যপদ বাতিল হয়ে গেলে তাঁর পক্ষে সরকার টিকিয়ে রাখা মুশকিল হতে পারে। এ আশঙ্কায় কয়েক দিন ধরে ঝাড়খন্ডের অধিকাংশ এমএলএকে প্রথমে রাজ্যের একটি পর্যটনকেন্দ্র এবং পরে পাশের রাজ্য ছত্তিশগড়ে স্থানান্তরিত করেন সোরেন। তাঁরা রোববার ঝাড়খন্ডে পৌঁছান এবং সোমবার বিধানসভায় আস্থা ভোটে জেএমএম, কংগ্রেস এবং লালু প্রসাদ যাদবের রাষ্ট্রীয় জনতা দলের জোট সরকারের পক্ষে ভোট দেন। সরকার টিকে যায়।
বিধানসভায় হেমন্ত সোরেন বলেন, ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) দেশে গৃহযুদ্ধের অবস্থা তৈরি করতে চাইছে। এ লক্ষ্যে বিজেপি নির্বাচন জিততে দাঙ্গা করছে।
বিজেপি বিধানসভার কক্ষ ত্যাগ করে প্রতিবাদ জানায়।
ঝাড়খন্ড বিধানসভায় ৮১ সদস্যের মধ্যে জেএমএমের ৩০ জন সদস্য, কংগ্রেসের ১৮ ও রাষ্ট্রীয় জনতা দলের ১ জন রয়েছেন। অন্যদিকে প্রধান বিরোধী দল বিজেপির রয়েছেন ২৬ জন এমএলএ; অর্থাৎ ১৫ জন এমএলএকে কিনতে পারলেই বিজেপি ঝাড়খন্ডে সরকার গড়তে পারে। তবে এবারের মতো তাদের রুখে দিলেন হেমন্ত সোরেন।