গত ১৫ আগস্ট ছিল ভারতের ৭৮তম স্বাধীনতা দিবস। ভারত যখন দিবসটি উদ্যাপনে প্রস্তুত, তখন দেশটির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিক্ষোভে উত্তাল।
হাজারো প্রতিবাদী মানুষ রাজ্যটির রাজপথে। তাঁরা নারীর প্রতি যৌন সহিংসতা ও হয়রানির প্রতিবাদে মুখর। তাঁরা নারীর স্বাধীনতা ও নিরাপত্তার দাবিতে সোচ্চার।
পশ্চিমবঙ্গে গত ৯ আগস্টের এক নৃশংস ঘটনার জেরে সর্বশেষ এই বিক্ষোভ-প্রতিবাদের সূত্রপাত। চিকিৎসকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ টানা প্রতিবাদ করে যাচ্ছেন।
রাজ্যটির রাজধানী কলকাতার আর জি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে ৯ আগস্ট ৩১ বছর বয়সী এক শিক্ষানবিশ নারী চিকিৎসকের লাশ উদ্ধার করা হয়। তাঁকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছিল। এ ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
ভারতে আগেও এমন নৃশংস ঘটনা ঘটেছে। ২০১২ সালের ডিসেম্বরে দেশটিতে ২৩ বছর বয়সী এক মেডিকেল শিক্ষার্থী (ছদ্মনাম নির্ভয়া) দলবদ্ধ ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হন। এ ঘটনায় পুরো ভারত হতবাক হয়ে যায়। ন্যায়বিচারসহ পরিস্থিতি পরিবর্তনের দাবিতে হাজারো মানুষ দেশটির রাজপথে নেমে আসেন।
নির্ভয়াকে দলবদ্ধ ধর্ষণ-হত্যার ঘটনায় বিচার সম্পন্ন হয়। এতে চারজনের ফাঁসি কার্যকর হয়। দোষী সাব্যস্ত আরেকজন ছিল কিশোর। তাকে তিন বছরের জন্য অপরাধ সংশোধন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। তিন বছর পর সে ছাড়া পায়।
২০১৩ সালে দেশটিতে ‘নির্ভয়া তহবিল’ গঠন করা হয়। ভারতীয় নারীদের নিরাপত্তা উন্নত করার লক্ষ্যে গঠিত এই তহবিলে বিপুল অর্থ জমা হয়। তবে অবস্থার পরিবর্তন হয়নি।
ভারতের স্বাধীনতা দিবসে দেশটির এক বিক্ষোভকারী ভারতীয় সংবাদপত্র দ্য টেলিগ্রাফকে বলেন, এ ধরনের আলোচিত ধর্ষণের ঘটনার পর দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ, হইচই হয়। কিন্তু নারীর প্রতি নৃশংসতা থামে না।
ভারতের ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান বলছে, ২০২২ সালে দেশটিতে ৩১ হাজার ৫১৬টি ধর্ষণের ঘটনার খবর পাওয়া যায়। সে হিসাবে, ২০২২ সালে দেশটিতে দিনে গড়ে ৮৬টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।
কলকাতার ঘটনাটি ভারতের সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে এ মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ আজ মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর)। এই শুনানির আগে মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন ভারতের প্রতিষ্ঠানগুলো কীভাবে ধর্ষণের মতো গুরুতর অপরাধের বিষয়টি মোকাবিলা করে, সে বিষয়ে আরেকবার দৃষ্টি রেখেছে। একই সঙ্গে বিশেষজ্ঞদের কাছে সিএনএন জানতে চেয়েছে, ধর্ষণের শিকার নারীদের পাশে কি ভারতীয় কর্তৃপক্ষ থাকছে? যৌন সহিংসতা রোধ করার জন্য তারা কি যথেষ্ট কাজ করছে?
পুলিশিং নিয়ে সমস্যা
কলকাতার ঘটনার বিষয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট বলেছেন, প্রাথমিক তথ্যবিবরণী (এফআইআর) নথিভুক্ত করতে স্থানীয় পুলিশ প্রায় ১৪ ঘণ্টা সময় নিয়েছে।
ভারতের ফৌজদারি বিচারপ্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ এফআইআর। ধর্ষণের ক্ষেত্রে ভারতীয় আইনে ঘটনার তথ্য পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে এফআইআর নিতে হয়। এফআইআর না হওয়া পর্যন্ত তদন্ত শুরু করা যায় না।
৯ আগস্টের ধর্ষণ-হত্যার ঘটনায় তদন্তের ক্ষেত্রে অন্যান্য ব্যর্থতার অভিযোগও তুলেছে ভারতের সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই), ন্যাশনাল কমিশন ফর উইমেন এবং ভুক্তভোগীর মা–বাবা।
গত ২২ আগস্ট আদালতে হাজির হয়ে সিবিআইয়ের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, সবচেয়ে বিস্ময়কর তথ্য হলো, এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল নারী চিকিৎসকের দাহকার্য সম্পন্ন হওয়ার পর।
ঘটনার বিষয়ে প্রথমে ওই নারী চিকিৎসকের মা–বাবাকে বলা হয়েছিল, তিনি ভালো নেই। পরে তাঁদের বলা হয়, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। এমনকি তাঁর সহকর্মী ও বন্ধুদের চাপের মুখেই কেবল লাশের মেডিকেল পরীক্ষা করা হয়েছিল।
পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও কলকাতা পুলিশের কৌঁসুলি আদালতে দাবি করেন, তাঁদের দিক থেকে তদন্তকাজ যতটুকু করা হয়েছে, তা আইন অনুযায়ীই করা হয়েছে।
সিএনএনের প্রশ্নের জবাবে কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল বলেন, মামলাটির বিষয়ে এখন মন্তব্য করা ঠিক হবে না। কারণ, মামলাটি এখন সিবিআই তদন্ত করছে। তা ছাড়া মামলাটি ভারতের সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণে রয়েছে।
বিনীত গোয়েল দাবি করেন, ভুক্তভোগী ও তাঁর পরিবার যাতে ন্যায়বিচার পায়, তা নিশ্চিতে তাঁরা সিবিআইকে সহায়তা করছেন। তাঁরা সীমিত সময়ের মধ্যে যতটুকু তদন্তকাজ করেছেন, তা পেশাদারির সঙ্গে করেছেন, স্বচ্ছতার সঙ্গে করেছেন।
ভারতে যৌন সহিংসতার ঘটনায় তদন্ত শুরু করার ক্ষেত্রে দীর্ঘ বিলম্বের আরও অনেক নজির আছে।
শুধু ১৬ থেকে ২৩ আগস্টের মধ্যে (৮ দিন) ভারতে যৌন সহিংসতার অভিযোগের বিষয়ে পুলিশ কীভাবে সাড়া দিয়েছিল, তা নিয়ে জনগণের অভিযোগ সম্পর্কে অন্তত তিনটি ঘটনা দেশটির ইংরেজি ভাষার গণমাধ্যমে আসে।
একটি ঘটনা এমন, ১৭ বছর বয়সী একটি মেয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। মেয়েটির বাবা গণমাধ্যমকে বলেন, পুলিশ এফআইআর নিতে চায়নি। উল্টো তারা মেয়েটিকে কেন বাড়ির মধ্যে রাখা হয়নি, সে কথা বলে তাঁকে (বাবা) তিরস্কার করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই বাবা দ্য টেলিগ্রাফকে বলেন, অভিযোগ লিখে দ্রুত অপরাধী ব্যক্তিদের ধরার পরিবর্তে থানার এক কর্মকর্তা মেয়েকে ঘরে আটকে না রাখার জন্য তাঁকে বকাঝকা করতে থাকেন। তাঁর ভাষ্য, মেয়েদের বাইরে যেতে দেওয়া উচিত নয়।
মেয়েটির পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে পুলিশ সুপার জ্ঞানেন্দ্র সিং একই সংবাদপত্রকে বলেন, ‘আমরা অভিযোগের ভিত্তিতে একটি মামলা করেছি। একজন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছি। অভিযোগের সত্যতা পেলে আমরা স্থানীয় পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’
ভারতে যৌন ও পারিবারিক সহিংসতার শিকার নারী-শিশুদের আইনি পরামর্শ দিয়ে থাকে অলাভজনক সংস্থা মজলিস। সংস্থাটির পরিচালক অড্রে ডি’মেলো সিএনএনকে বলেন, পুলিশের এমন বিলম্বের কথা তাঁরা সব সময়ই শুনে থাকেন। গত ১০-১২ বছরে ২ হাজার ৫০০টি ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে কাজ করেছে মজলিস, এর ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রেই এফআইআর দায়ের বিলম্বিত হয়েছে।
এই বিলম্বের বাইরেও ধর্ষণের শিকার নারীদের প্রতি নানা রূঢ় আচরণের বর্ণনা দেন অড্রে ডি’মেলো। তিনি বলেন, প্রথমত ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের থানায় যেতে অনেক সাহস লাগে, সংকল্প লাগে। তারপর তাঁরা যদি সেখানে যান, তাহলে তাঁদের অপমান করা হয়। তাঁদের বসিয়ে রাখা হয়। বারবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এ সময় পুলিশ নৈতিক রায় (মোরাল জাজমেন্ট) দেয়।
পুলিশের সাবেক কর্মকর্তা পি এম নায়ার। তিনি ১০ বছর ধরে ভারতের সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে কাজ করেছেন। তিনি সিএনএনকে বলেন, পুলিশের এ ধরনের আচরণের জন্য পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের অভাবকে আংশিকভাবে দায়ী করা যায়। তাঁর মতে, যৌন নিপীড়নের মামলা দেখভালের ক্ষেত্রে পুলিশের মাত্র ২০ শতাংশ কর্মকর্তার প্রশিক্ষণ আছে। একে একটি বড় শূন্যতা বলে অভিহিত করেন তিনি।
পি এম নায়ার এখন ভারতীয় পুলিশ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী কমিটিতে আছেন। পদ্ধতিগত বিলম্ব সম্পর্কে তিনি অড্রে ডি’মেলোর বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করেন। তিনি বলেন, অন্যান্য অপরাধের ক্ষেত্রেও এফআইআর দায়েরে বিলম্ব হতে দেখা যায়। তবে এটি বেশির ভাগ সময় নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের ক্ষেত্রে দেখা যায়।
পিপল এগেইনস্ট রেপস ইন ইন্ডিয়া নামের সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা যোগিতা ভায়ানা। তিনি সিএনএনকে বলেন, পুলিশের সঙ্গে নিয়মিত কথাবার্তা ও যোগাযোগ থেকে তিনি দেখেছেন, তদন্তকারী কর্মকর্তা, যাঁর ওপর মামলা নির্ভর করে, তাঁর ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউরস’ সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণাই নেই।
অপরাধের শিকার ব্যক্তির সঙ্গে কীভাবে আচরণ করতে হবে, কীভাবে তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করতে হবে, কীভাবে অপরাধের স্থানকে সুরক্ষিত করতে হবে, তার রূপরেখা দিয়ে থাকে এই ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউরস’।
ভারতের আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিষয়গুলো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন। এসব অভিযোগ সম্পর্কে জানতে সিএনএন ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। কিন্তু সেখান থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
পুলিশ প্রশিক্ষণের সীমাবদ্ধতা
নির্ভয়া ধর্ষণ-হত্যার পর নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধসংক্রান্ত মামলা গ্রহণ-পরিচালনার ক্ষেত্রে সংবেদনশীল থাকার জন্য পুলিশ ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের শিক্ষিত করতে অধিক মনোযোগ দেওয়া হয়েছে। এই খাতে অর্থ বরাদ্দও করা হয়েছে।
বিভিন্ন এজেন্সিসহ অলাভজনক প্রতিষ্ঠানগুলো এ-সংক্রান্ত কর্মশালা করিয়ে থাকে। এসব কর্মশালা ভারতের বড় শহরগুলোতে কিছুটা পার্থক্য তৈরি করেছে বলে মনে করেন যোগিতা ভায়ানা। তিনি নিজেও দিল্লিতে এ বিষয়ে পুলিশকে প্রশিক্ষণ দেন। তাঁর মতে, এখন শহরের ক্ষেত্রে এসব অপরাধের ভয়াবহতা আগের চেয়ে ভালো বুঝতে পারেন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তারা। কিন্তু ছোট শহর ও গ্রামে পুলিশের মনোভাবে দৈন্য, নারীবিদ্বেষ রয়েই গেছে।
যোগিতা ভায়ানা সিএনএনকে বলেন, তবে সামগ্রিকভাবে প্রশিক্ষণ কর্মসূচির প্রভাব সীমিত। একটি ২ ঘণ্টার প্রশিক্ষণে প্রায় ৪০ জন পুলিশ অংশ নেন। প্রশিক্ষণে তাঁরা যদি খুব একটা মনোযোগী না হন, তা হলে পরিবর্তন আসবে না।
বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ সিএনএনকে বলেছেন, শুধু পুরুষ কর্মকর্তাদের লিঙ্গ সংবেদনশীলতার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়াটাই যথেষ্ট নয়। পুলিশ বিভাগে আরও বেশি নারী কর্মকর্তা দরকার।
ধর্ষণ মামলার তদন্ত ও বিচারের ক্ষেত্রে ২০২০ সালে ভারতে জারি হওয়া ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউরস’-এ বলা আছে, এফআইআর লিপিবদ্ধ করা উচিত একজন নারী কর্মকর্তার।
সর্বশেষে হিসাবমতে, ভারতে মাত্র ২ লাখ ১৪ হাজার নারী পুলিশ কর্মকর্তা আছেন, যা বাহিনীর মাত্র ১৫ শতাংশ।
মামলাজট
২০২২ সালে ভারতের আদালতে বিচারের জন্য অপেক্ষায় ছিল ১ লাখ ৯৮ হাজার ২৮৫টি ধর্ষণ মামলা। বছরের শেষ নাগাদ মাত্র ১৮ হাজার ৫১৭টি মামলার বিচার হয়।
অলাভজনক সংস্থা কমনওয়েলথ হিউম্যান রাইটস ইনিশিয়েটিভের প্রতিবেদন অনুসারে, ওই বছরের ৯০ শতাংশের বেশি মামলা এখনো সমাধানের অপেক্ষায়।
ভারতের বিচারিক আদালতে এই মামলাজট বহু বছর ধরে দৃশ্যমান। বিষয়টি ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত করছে।
ভারতে দ্রুত বিচার আদালতের সংখ্যা বাড়ানো দরকার বলে মত বিশেষজ্ঞদের। আবার ভারতের আদালতে এ-সংক্রান্ত যেসব মামলার শুনানি হয়, তার মধ্যে একটা বড় অংশের ক্ষেত্রে আসামি খালাস পেয়ে যান। ২০২২ সালে ধর্ষণ মামলায় খালাসের হার ছিল ৬৫ দশমিক ১৪ শতাংশ।
কমনওয়েলথ হিউম্যান রাইটস ইনিশিয়েটিভের পরিচালক ভেঙ্কটেশ নায়েক বলেন, আইনজীবীরা উল্লেখ করেছেন, খালাসের হার বেশি হওয়ার পেছনে কয়েকটি কারণ রয়েছে। এর মধ্যে আছে সাক্ষীর বৈরী হয়ে যাওয়া। ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের দীর্ঘকাল ধরে মামলা না চালানোর সিদ্ধান্ত। পুলিশের দুর্বল তদন্তকাজ। অপর্যাপ্ত ফরেনসিক প্রমাণ সংগ্রহ।
দরকার সংস্কৃতির পরিবর্তন
ভারত সরকারের নিজস্ব চিন্তন প্রতিষ্ঠান নীতি আয়োগ ২০২১ সালে এই উপসংহার টানে যে নানান কার্যক্রম বা নতুন আইনের জন্য তহবিল থাকা সত্ত্বেও মানুষের মানসিকতায় পরিবর্তন না এলে ধর্ষণসহ নারীর বিরুদ্ধে সংঘটিত অন্যান্য অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।
পিপল এগেইনস্ট রেপস ইন ইন্ডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা যোগিতা ভায়ানা ভারতের স্কুল পাঠ্যক্রমে লিঙ্গ সংবেদনশীলতা যুক্ত করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এটি কেবল পরিবারের একজন নারীকে, মাকে, বোনকে সম্মান করার বিষয় নয়; এটি অপরিচিত নারীকেও সম্মান করারও বিষয়।
বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ সিএনএনকে বলেছেন, নারীদের সুরক্ষায় ভারতের প্রতিষ্ঠানগুলোর আরও অনেক কিছু করার আছে। যৌন সহিংসতার ভুক্তভোগী নারীদের কথা শুনতে হবে। ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
নির্ভয়া মামলার এক আইনজীবী ২০১৫ সালে বিবিসিকে বলেছিলেন, ‘আমাদের সংস্কৃতিতে একজন নারীর কোনো স্থান নেই।’ এর ফলে যতক্ষণ পর্যন্ত ভারতের বৃহত্তর সমাজের পরিবর্তন না হয়, ততক্ষণ এই মন্তব্য সত্য বলে প্রমাণিত হতে থাকবে।