পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারের ৬ জেলা নিয়ে এবার নতুন রাজ্যের দাবি
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দুই জেলা এবং পার্শ্ববর্তী বিহার রাজ্যের চার জেলা নিয়ে নতুন রাজ্য গঠনের দাবি তুললেন বিজেপি সংসদ সদস্য নিশিকান্ত দুবে। তিনি লোকসভায় গতকাল বৃহস্পতিবার জিরো আওয়ারে এ দাবি তোলেন।
পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘু-অধ্যুষিত দুই জেলা মুর্শিদাবাদ ও মালদহ এবং পার্শ্ববর্তী বিহার রাজ্যের মুসলিম-অধ্যুষিত চার জেলা কিষানগঞ্জ, আরারিয়া, পূর্ণিয়া ও কাটিহারকে নিয়ে একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গড়ার দাবি তুলেছেন দুবে। তিনি বলেন, এই ছয় জেলাকে নিয়ে পৃথক একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গড়ে সেখানে এনআরসি কার্যকর করা হোক। যদিও এই প্রস্তাবের ইতিমধ্যে বিরোধিতা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
বিজেপির সংসদ সদস্য নিশিকান্ত দুবে ঝাড়খন্ড রাজ্যের আদিবাসী এলাকা গোড্ডা কেন্দ্র থেকে সংসদ সদস্য হয়েছেন। তিনিই পশ্চিমবঙ্গের সংসদ সদস্য মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে সংসদে ঘুষের বিনিময়ে প্রশ্ন করার অভিযোগ তুলেছিলেন। ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মহুয়া মৈত্র সংসদ সদস্য পদ হারিয়েছিলেন। কিন্তু এবারের লোকসভা নির্বাচনে তিনি কৃষ্ণনগর আসন থেকে আবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
বিজেপির সংসদ সদস্য নিশিকান্ত দুবে অভিযোগ করেন, পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারের ওই ছয় জেলায় ব্যাপক অনুপ্রবেশ ঘটায় সেখানকার জনবিন্যাস বদলে যাচ্ছে। অনুপ্রবেশকারীরা বিহারে আদিবাসী নারীদের বিয়ে করে পাল্টে দিচ্ছেন জনবিন্যাসের হার। সাঁওতাল পরগনা বিহার রাজ্যে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সময় এই রাজ্যের আদিবাসী জনসংখ্যা ছিল ৩৬ শতাংশ। এখন তা নেমে দাঁড়িয়েছে ২৬ শতাংশে।
অন্যদিকে মুর্শিদাবাদ ও মালদহে চলছে নিয়মিত অনুপ্রবেশ।
গত বুধবার পশ্চিমবঙ্গের বিজেপির রাজ্য সভাপতি ও কেন্দ্রীয় উত্তর-পূর্ব ভারত উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার দাবি করেন, পশ্চিমবঙ্গের উত্তরবঙ্গের অবহেলিত আট জেলাকে উত্তর ভারতের সঙ্গে জোড়া হোক। আর গতকাল বিজেপির রাজ্যসভার সংসদ সদস্য অনন্ত মহারাজ দাবি তোলেন, কোচবিহারকে নিয়ে গ্রেটার কোচবিহার রাজ্য গঠনের। তবে এসব দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল।
নিশিকান্ত দুবের ওই দাবি নিয়ে গতকাল তৃণমূলের সংসদ সদস্য সৌগত রায় বলেন, ‘এত বড় সাম্প্রদায়িকতার কথা! এ রকম কথা তো এর আগে শুনিনি। আমরা সর্বশক্তি দিয়ে এর বিরোধিতা করব।’
সৌগত রায় আরও বলেন, ‘বিজেপি নেতা সুকান্ত মজুমদার ও নিশিকান্ত দুবে প্রকারান্তরে তো বাংলা ভাগের চক্রান্তের কথাই বলেছেন। এই চক্রান্ত আমরা রুখবই।’