অভিমত
পশ্চিমবঙ্গে ‘ইন্ডিয়া’ জোটে জটিল রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশ
কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন বিজেপিবিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ জোটে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু কংগ্রেসের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি নিয়ে যে কয়টি রাজ্যে জটিলতা রয়েছে, তার অন্যতম পশ্চিমবঙ্গ। তৃণমূল নেত্রী মমতা ইতিমধ্যে রাজ্যে এককভাবে লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দিয়েছেন। তবে কংগ্রেস নেতৃত্ব সমঝোতার চেষ্টা করছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কি দুই পক্ষ ঐকমত্যে আসতে পারবে?
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ও তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগামী সোমবার কার্যত মুখোমুখি আসরে থাকবেন। ‘ইন্ডিয়া’ জোটের অগোছালো সংসারে মতপার্থক্যের মধ্যে একই দিনে উত্তরবঙ্গে প্রচার শুরু করবেন রাহুল গান্ধী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই দিন উত্তরবঙ্গের কোচবিহারে যাবেন মমতা আর উত্তর দিনাজপুরে তাঁর দুদিনের পশ্চিমবঙ্গ সফর শেষ করবেন রাহুল।
এই সময়ের মধ্যে একাধিক ঘটনা ঘটবে বলে মনে করা হচ্ছে। অন্তত উত্তরবঙ্গের শীর্ষস্থানীয় কংগ্রেস নেতাদের সে রকমই ধারণা। গত বৃহস্পতিবার আসামে পদযাত্রা করে পশ্চিমবঙ্গে ঢোকেন রাহুল গান্ধী। এরপরই তিনি তিন দিনের জন্য দিল্লি চলে যান। আবার ২৮ জানুয়ারি থেকে তাঁর দুদিনের পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাঞ্চল সফর শুরুর কথা।
কংগ্রেসের অন্যতম জাতীয় সম্পাদক ও অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটির সদস্য রঞ্জিত মুখার্জি প্রথম আলোকে গতকাল শুক্রবার বলছিলেন, ২৮ জানুয়ারি রাহুল গান্ধী ‘দিল্লি থেকে ফিরে আলিপুরদুয়ার জেলার ফালাকাটা হয়ে উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া যাবেন। পথে তিনি জলপাইগুড়ি ও শিলিগুড়িতে থামবেন। ২৯ জানুয়ারি উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর ছুঁয়ে বিহারের আগারিয়ায় যাবেন। সেখানে থাকবেন তিন দিন। আবার ৩১ জানুয়ারি উত্তরবঙ্গে ফিরে তিনি দক্ষিণ মালদার সুজাপুর হয়ে যাবেন মুর্শিদাবাদ। সেখান থেকে বহরমপুর হয়ে বীরভূম এবং সেখান থেকে ঝাড়খন্ডে। তিনি দক্ষিণবঙ্গে যাচ্ছেন না।’
পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেসের নেতারা মনে করছেন, রাহুলের তিন দিনের দিল্লি সফরের মূল লক্ষ্য ইন্ডিয়া জোটকে কিছুটা গুছিয়ে নেওয়া। কারণ, জোট শরিকের অন্তত চার নেতা আসন সমঝোতা নিয়ে প্রবল চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেছেন। এই চার নেতা হলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল (পাঞ্জাবে তাঁর দল আম আদমি পার্টি ক্ষমতায়), উত্তর প্রদেশে অখিলেশ যাদব, বিহারে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার ও পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
গত বুধবার মমতা বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের কোনো আসন–রফা হচ্ছে না। তাঁর কথায়, ‘কারও সঙ্গে আমার কোনো কথা হয়নি। আমি মনে করি, প্রথম থেকেই ওরা আমাদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। তখন থেকেই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, বাংলায় আমরা একাই লড়ব।’
কংগ্রেস অবশ্য মমতাকে সঙ্গে নিয়ে চলার চেষ্টা চালাচ্ছে। গত মঙ্গলবার আসামে রাহুল গান্ধী বলেছেন, তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা চলছে। এর ফল কিছুদিনের মধ্যেই প্রকাশ্যে আসবে।
রাহুলের কথার সূত্র ধরে দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ আসামে সাংবাদিকদের বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুধু তৃণমূল বা পশ্চিমবঙ্গের নন, দেশের একজন বড় নেতা। তিনি ইন্ডিয়া জোটের অন্যতম প্রধান শরিক। তৃণমূলকে বাদ দিয়ে ইন্ডিয়া জোট সম্ভব নয়।
রমেশ আরও বলেন, রাহুল স্পষ্টই বলেছেন, বিজেপিকে হারাতে হবে। এ জন্য মমতাকে প্রয়োজন। তাঁকে ছাড়া একটি সার্বিক জোট
সম্ভব নয়।
তবে তৃণমূল নেতাদের অভিযোগ, কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মমতাকে সঙ্গে চাইলেও চান না দলের রাজ্য সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী। তিনি ধারাবাহিকভাবে মমতাকে আক্রমণ করছেন।
রাজ্যসভায় দলের নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, ইন্ডিয়া ব্লকের অনেক নিন্দুক রয়েছে। তবে কেবল বিজেপি ও অধীর চৌধুরী ব্লকের বিরুদ্ধে বেশি কথা বলেছেন। কণ্ঠস্বর তাঁর, তবে কথাগুলো দিল্লির দুজনের নির্দেশে তিনি এসব বলছেন। দুই বছর ধরে তিনি বিজেপির ভাষায় কথা বলেছেন।
ডেরেক ও’ব্রায়েনের এই অভিযোগের জবাবে অধীর চৌধুরী তাঁকে ‘বিদেশি’ বলে মন্তব্য করেন। বলেন, ‘উনি অনেক বেশি বোঝেন। ওনাকেই এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করুন।’
মমতা কী চান
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, মমতা কি কংগ্রেসের হাত পশ্চিমবঙ্গে ধরতে চান?
এর উত্তর হ্যাঁ–না দুটিই হতে পারে। এককভাবে নির্বাচনে না গিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে একটা বড় সুবিধা তৃণমূলের রয়েছে। অন্যদিকে কিছু সমস্যাও হতে পারে। প্রথমে দেখা যাক কীভাবে লাভবান হতে পারে তৃণমূল।
গত পাঁচ বছরে লোকসভা (২০১৯) এবং বিধানসভা (২০২১) নির্বাচনের দিকে তাকালে দেখা যাবে, এই সময়ে তৃণমূলের ভোট ধীরে ধীরে বেড়েছে। অন্যদিকে অনেক দ্রুত বেড়েছে বিজেপির ভোট। এর প্রধান কারণ, বামফ্রন্টের ভোট চলে গেছে বিজেপির ঝুলিতে। গত পাঁচ বছরে মোটামুটি বামফ্রন্টের ২০-২৫ শতাংশ ভোট কমেছে। ওই একই হারে বিজেপির ভোট বেড়েছে। ২০১৬ সাল থেকে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির উত্থান হয়েছে এবং এই সময়কালে তাদের ভোট ১০ শতাংশ থেকে বেড়ে ৩৮-৪০ শতাংশ হয়েছে।
বামফ্রন্টের ভোট এই সময়কালে ২০-২৫ থেকে কমে ৫-৭ শতাংশ হয়েছে। কংগ্রেসের হার নেমেছে ১২ থেকে ৩ শতাংশে। তৃণমূলের ভোট মোটামুটি একই রয়েছে—৪৩ থেকে ৪৮ শতাংশের মধ্যে। তৃণমূলের মূলত ৪-৫ শতাংশ ভোট বেড়েছে।
গত লোকসভা নির্বাচনে (২০১৯) কংগ্রেস ও বামফ্রন্টের মোট ভোট ছিল ১৩ শতাংশ। এটা ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে নেমে গেছে সাড়ে ৮ শতাংশে। অর্থাৎ, ধীরে ধীরে বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস-বাম জোটকে গিলে ফেলছে এবং সেই ভোট যাচ্ছে বিজেপির ঝুলিতে। আবার সামান্য হলেও তৃণমূলের ভোট বাড়ছে।
এ কারণেই রাজ্য কংগ্রেসের সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী গত মঙ্গলবার বলেছেন, তৃণমূল ধারাবাহিকভাবে ভোটের দ্বিমুখী মেরুকরণ ঘটাচ্ছে, যাতে তারা ও বিজেপি উভয়ই লাভবান হয়। আর ক্ষতিগ্রস্ত হয় কংগ্রেস ও বামফ্রন্ট।
ভোটের যত দ্বিপক্ষীয় মেরুকরণ ঘটবে, তত লাভবান হবে বিজেপি। সেই সঙ্গে লাভবান হবে তৃণমূলও। সে রকমটাই দেখা যাচ্ছে অন্তত গত দুটি (২০১৯ ও ২০২১) নির্বাচনে। এই যুক্তিতে এটা মানতে হয়, সে ক্ষেত্রে মমতা চাইবেন বাম-কংগ্রেস জোটের ভোট পশ্চিমবঙ্গে আরও কমে যাক, যাতে লাভবান হয় প্রথমত বিজেপি এবং তারপরে তৃণমূল।
কেন্দ্রে বিজেপি থাকার একটা স্বাভাবিক সুবিধা পশ্চিমবঙ্গে পায় তৃণমূল। তারা বারবার পশ্চিমবঙ্গের ৩০ শতাংশ মুসলমান জনসাধারণকে বলতে পারে, দেখো, সারা দেশে বিজেপি কীভাবে মুসলমানদের ওপর অত্যাচার করছে। পশ্চিমবঙ্গে এই ঘটনা ঘটাতে না চাইলে তোমরা তৃণমূলকে ক্ষমতায় রাখো।
বিজেপির ভোট পশ্চিমবঙ্গে কিছুটা বাড়লে এই ভয়টা পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানদের এবং বামমনস্ক নাগরিক সমাজকে দেখানো সম্ভব। বামফ্রন্টও ক্ষমতায় থাকাকালে একই ভয় ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে দেখিয়েছে। এভাবে দীর্ঘদিন বামফ্রন্ট ভোট পেয়েছে, এখন তেমনই পাচ্ছে তৃণমূল।
বামের ভোট রামে ও তৃণমূলের বিপদ
কিন্তু এখানেই একটা বড় সমস্যা আছে মমতার। দেখা যাচ্ছে, বামফ্রন্টের প্রায় পুরো ভোট চলে যাচ্ছে বিজেপিতে। ফলে বামফ্রন্ট কমছে, বিজেপি বাড়ছে। গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির ভোট দাঁড়িয়েছে ৪০ শতাংশে এবং তৃণমূলের ভোট আটকে গেছে ৪৩ শতাংশে। অর্থাৎ ফারাক মাত্র ৩ শতাংশের। এই বৃদ্ধির কারণে রাজ্যের লোকসভা নির্বাচনে আসন ২ (২০১৪) থেকে বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ (২০১৯)।
এই ঘটনা মমতাকে প্রথমবারের মতো পুরোপুরি বিভ্রান্ত করে দেয়। পশ্চিমবঙ্গের মানুষ ধরে নেন, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির জয় নিশ্চিত। মমতাকে দেখলেই বিজেপি ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিতে থাকে এবং তিনি গাড়ি থেকে নেমে তাদের পাল্টা একহাত নেন। মমতা ও তৃণমূলের বিপর্যস্ত চেহারা সামনে চলে আসে। এতে দ্রুত বাড়তে থাকে বিজেপি। তারা প্রচার করে, মমতা ভয় পেয়েছেন। পরবর্তী সময়ে তৃণমূলের হাল ধরেন নির্বাচন কৌশলী প্রশান্ত কিশোর। দল ঘুরে দাঁড়ায় এবং ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বড় ব্যবধানে হারায় বিজেপিকে।
এবারের নির্বাচনে কংগ্রেস ও বামফ্রন্ট জোটের ভোট ১৩ শতাংশ থেকে কমে ৫-৭ শতাংশ এবং বিজেপির বেড়ে ৭-৮ শতাংশ হলে লোকসভায় নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি তৃণমূলকে ছাড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমন ঘটলে বিরাট বিপদে পড়বে তৃণমূল। কারণ, লোকসভা নির্বাচনের ঠিক দুই বছরের মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন হতে চলেছে।
ধারণা করা হচ্ছে, মমতার সঙ্গে সেই নির্বাচনে প্রথমবার একেবারে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেবেন তাঁর ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের চেয়ে বিজেপি দু-চারটি আসনও বেশি পেলে ২০২৬ সালে ক্ষমতায় ফেরা তৃণমূলের জন্য মুশকিলের হবে।
অতএব নয়া রণনীতি প্রয়োজন তৃণমূলের। সেই নীতি হলো কংগ্রেস ও বামফ্রন্টকে কিছুটা দূরে রেখে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের মধ্যে একটা ‘মিনি তৃতীয় জোট’ শুধু পশ্চিমবঙ্গের জন্য গঠন করা এবং সেই জোটকে আক্রমণ করে তাদের জনপ্রিয়তা বাড়ানো। যাতে কংগ্রেস-বামফ্রন্ট জোটের অন্তত ৫-১০ শতাংশ ভোট বাড়ে। এতে বামফ্রন্টের যে ভোট বিজেপিতে গেছে, তা যদি তাদের কাছে ফেরে, তবে ধরাশায়ী হবে বিজেপি। যেমনটা হয়েছে ২০২২ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে বামফ্রন্ট-কংগ্রেসের ভোট মোটামুটি ১০ শতাংশ বেড়েছে এবং সঙ্গে সঙ্গে বিজেপির ভোট কমে গেছে ১২-১৪ শতাংশ। এটাই আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে ঘটাতে চাইছে তৃণমূল। এ জন্য তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির একটা মুখোমুখি লড়াই তৈরি করা প্রয়োজন এবং সঙ্গে সঙ্গে বামফ্রন্ট-কংগ্রেসকেও ময়দানে রাখা দরকার। এই কারণেই কংগ্রেসের হাত ধরতে নারাজ মমতা।
কারণ, মমতা কংগ্রেসের হাত ধরলে লড়াইটা সরাসরি তাঁর সঙ্গে বিজেপির হয়ে যাবে, ধরাশায়ী হবে বামফ্রন্ট (কারণ, কংগ্রেস ও তৃণমূলের জোট হলে, বামফ্রন্ট সেই জোটে থাকবে না, এককভাবে লড়বে)। এই অবস্থায় আরও বামেদের ভোট পেয়ে তৃণমূলকে চাপে ফেলবে বিজেপি। এই পরিস্থিতি এড়াতেই একক লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত মমতার।
দুটি সমস্যা
কিন্তু মমতার এই কৌশলের দুটি অসুবিধা রয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের উত্তরবঙ্গের এক নেতা বলছিলেন, ‘উত্তরবঙ্গে গত নির্বাচনে বিজেপি ভালো করেছে। এই অবস্থায় এখানে তৃণমূলের গ্রহণযোগ্যতা ক্রমেই বাড়ছিল। কারণ, মমতা বারবার আসছিলেন। নানা প্রকল্প ও গণসংযোগের মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছিলেন। এমন একটা সময়ে রামমন্দিরের উদ্বোধন হলো এবং বিজেপি ও রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) রাতারাতি ঘরে ঘরে পৌঁছে গেল রামমন্দিরের প্রসাদী চাল নিয়ে। এটা তৃণমূলের হাওয়া অনেকটাই কেড়ে নিয়েছে। আমি দক্ষিণবঙ্গের অবস্থা জানি না। কিন্তু এখানে বিজেপির আবার একটা হাওয়া তৈরি হয়েছে এবং নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে, এই হাওয়া ক্রমেই বাড়বে। কারণ, এখানে বড় ধরনের প্রচার চালাবেন নরেন্দ্র মোদি।’
তৃণমূল কংগ্রেসের একাংশ মনে করছে, এ রকম একটা সময়ে কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কিছু আসনে ২-৪ শতাংশ ভোট টানতে পারলে লাভ হতো তৃণমূলের। গত বৃহস্পতিবার রাহুল গান্ধীর স্বল্প সময়ের সফরে বিপুল গণ-উৎসাহ দেখা গেছে উত্তরবঙ্গে। সেই কারণেই কংগ্রেসের হাত ধরা জরুরি ছিল বলে মনে করছেন অনেকে।
দক্ষিণবঙ্গের তৃণমূল নেতাদের বক্তব্য একটু অন্য রকম। দক্ষিণ ২৪ পরগনার এক তৃণমূল এমএলএ বললেন, ‘একটা অংশের মুসলমান ভোট কংগ্রেসে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মেলালে এটা হয়তো খানিকটা কাটা যেত। তবে এতে সুবিধা হতো নাকি অসুবিধা, সেটা বলার উপযুক্ত মানুষ আমাদের নেত্রী।’
সুতরাং তৃণমূল একা লড়বে নাকি কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে লড়বে, তা এখনো শতভাগ নিশ্চিত নয় কেউ–ই। যদিও মমতা বলেছেন, তিনি একাই লড়বেন। তবে জোটের চেষ্টা করছে কংগ্রেস। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি ঠিকই। তবে পরিস্থিতি বলছে, শেষ পর্যন্ত একটা ত্রিকোণ লড়াই হতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গে।