দিল্লি বিধানসভার নির্বাচন ৫ ফেব্রুয়ারি, জিততে মরিয়া বিজেপি

ভারতের দিল্লি বিধানসভার ভোটের দিন ঘোষিত হলো আজ মঙ্গলবার। দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার জানান, আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি ভোট গ্রহণ। ফল ঘোষিত হবে ৮ তারিখে। দিল্লি বিধানসভার মোট আসন ৭০। ভোট হবে এক দিনেই।

এবারের ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ত্রিমুখী। শাসক আম আদমি পার্টির (আপ) প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি। তৃতীয় প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস। গত জুন মাসে লোকসভার ভোটে দিল্লিতে কংগ্রেস ও আপ জোট বেঁধেছিল। কিন্তু দিল্লির সাত আসনই দখল করেছিল বিজেপি। এবার কংগ্রেস ও আপ লড়ছে ছাড়া–ছাড়া।

লোকসভা ভোটে দিল্লিবাসীর সমর্থন পেলেও গত ২৬ বছর বিজেপি দিল্লির বিধানসভা দখল করতে পারেনি। শেষবার এই কেন্দ্রশাসিত রাজ্যে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন সুষমা স্বরাজ, ১৯৯৮ সালে, মাত্র ৫২ দিনের জন্য। তারপর টানা পনেরো বছর মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন কংগ্রেসের শীলা দীক্ষিত। গান্ধীবাদী সমাজসেবী আন্না হাজারের দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনে শামিল হওয়ার পর অরবিন্দ কেজরিওয়াল নতুন রাজনৈতিক দল আম আদমি গড়ে তুলে প্রথমবার ভোটে লড়েই জয়ী হন। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে মুখ্যমন্ত্রী হলেও ৪৯ দিনের মাথায় তিনি পদত্যাগ করেন। এক বছর রাষ্ট্রপতির শাসন জারি থাকে দিল্লিতে। তারপর পরপর দুটি নির্বাচনে জিতে মুখ্যমন্ত্রী হন কেজরিওয়াল। এবার জিতলে তাঁর দল দিল্লি দখলে হ্যাটট্রিক করবে। ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার আগেই আপ জানিয়েছে, জিতলে অরবিন্দ কেজরিওয়ালই আবার হবেন মুখ্যমন্ত্রী। শুধু দলই নয়, একই কথা জানিয়েছেন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী আতিশিও।

দিল্লি দখলে বিজেপি অবশ্য এবার মরিয়া। গত কয়েক মাসে তারা আপবিরোধী প্রচার ও অভিযান জোরালো করে তুলেছে। কেজরিওয়াল সরকারের আবগারি (মদ) নীতির বিরোধিতায় তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলেছে। কেজরিওয়ালকে সে জন্য গ্রেপ্তার হতে হয়েছে। জেলেও যেতে হয়েছে। জেল থেকে ফিরে তিনি মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছেড়ে দায়িত্ব তুলে দেন আতিশির হাতে। বিজেপি এবার সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে আপকে হারাতে। তারা আশাবাদী, ত্রিমুখী লড়াইয়ের ফল এবার তাদের পক্ষে যাবে।

কেজরিওয়ালকে অবশ্য সরকার চালাতে বারবার বাধা পেতে হয়েছে উপরাজ্যপালের দিক থেকে। দিল্লি রাজধানী বলে এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের উপরাজ্যপালকে প্রভূত ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। নির্বাচিত সরকারের যেকোনো নির্দেশ কার্যকর হতে উপরাজ্যপালের সম্মতি প্রয়োজন। সে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী–উপরাজ্যপালের সংঘাত চলছে নিয়মিত। এমনিতেই দিল্লির পুলিশ ও জমি কেন্দ্রের অধীনে। এই দুই ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। নতুন আইনের ফলে এখন মূল ক্ষমতা উপরাজ্যপালের কুক্ষিগত। ভোট হবে এই সংঘাত ও অসহযোগিতার আবহে।

এই ভোটে আম আদমি পার্টির নির্বাচনী স্লোগান ‘ফির লায়েঙ্গে কেজরিওয়াল’ এবং বিজেপি বেছে নিয়েছে পরিবর্তনের স্লোগান, ‘বদলকে রহেঙ্গে’। কংগ্রেস যদিও এখনো দিশাহারা। স্লোগানহীন।