মণিপুরে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর আবার গুলি, এক সৈনিক নিহত

লোকসভার বিরোধীদলীয় নেতা রাহুল গান্ধী মণিপুরের জিবরাম এলাকার একটি উদ্বাস্তু শিবিরে আশ্রয় নেওয়া মানুষের সঙ্গে কথা বলেন। ৮ জুলাইছবি: এএনআই

ভারতের মণিপুর রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলীয় জিরিবাম জেলায় গত রোববার সন্দেহভাজন বিদ্রোহীদের অতর্কিত হামলায় কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের (সিআরপিএফ) অন্তত এক সদস্য নিহত হয়েছেন। বিহারের মধুবনীর বাসিন্দা সিআরপিএফের এই সদস্যের নাম অজয়কুমার ঝা। কপালে গুলি লাগলে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। ওই হামলার ঘটনায় আরও দুই পুলিশ কমান্ডোসহ তিনজন আহত হয়েছেন।

মণিপুর পুলিশ আজ সোমবার জানিয়েছে, আহত ব্যক্তিদের অবস্থা আশঙ্কামুক্ত। এ নিয়ে গত এক মাসে দ্বিতীয়বার সরকারি বাহিনী বা সরকারি প্রতিনিধিদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটল। গত ১০ জুন মুখ্যমন্ত্রীর গাড়িবহরে হামলা হয়েছিল।

পুলিশ জানিয়েছে, জিরিবাম জেলার মর্বাং অঞ্চলের দখল নিতে সন্দেহভাজন বিদ্রোহীরা পুলিশ ও আধা সামরিক যৌথ বাহিনীর ওপরে গুলি চালাতে শুরু করে। এ সময় যৌথ বাহিনীর সদস্যদের ওপর থেমে থেমে গুলিবর্ষণ করা হয়। নিরাপত্তা বাহিনীও পাল্টা গুলি চালালে পিছু হটে বিদ্রোহীরা।

ঘটনার পর নিরাপত্তা বাহিনীর গাড়িতে বেশ কিছু বুলেটের ছিদ্র দেখা গিয়েছে। গুলির আঘাতে নিরাপত্তা বাহিনীর একটি বড় গাড়ির সামনের কাচ টুকরা টুকরা হয়ে গেছে এবং গাড়ির পেছনে বসে থাকা দুই পুলিশ সদস্য গুলিতে আহত হন। তাঁদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

জিরিবামে এক মাসের বেশি সময় ধরে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী হামার ও সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে প্রবল উত্তেজনা চলছে। দুই পক্ষের মধ্যে সহিংসতায় ওই অঞ্চলে বেশ কিছু মানুষ ইতিমধ্যে মারা গেছেন। এরই মধ্যে গতকাল রোববার যৌথ নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর বড় ধরনের হামলার ঘটনা ঘটল।

রাজ্য পুলিশের এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, নিরাপত্তা বাহিনী বিদ্রোহীদের ওপরে পাল্টা গুলি চালিয়েছে। এ অবস্থায় বিদ্রোহীরা পার্শ্ববর্তী জঙ্গলে আশ্রয় নেয়। সেখানে তল্লাশি চালাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী।

মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, সন্দেহভাজন কুকি জঙ্গিরা জিরিবাম জেলায় এই আক্রমণ চালিয়েছে।

অবশ্য কুকি সম্প্রদায়ের সর্বোচ্চ রাজনৈতিক-সামাজিক সংগঠন কুকি ইনপি এই ঘটনাকে ‘রাষ্ট্রের পরিকল্পনামাফিক আক্রমণ’ বলে গণমাধ্যমে বিবৃতিতে দিয়েছে।

২০২৩ সাল থেকে চলা লাগাতার সংঘর্ষে মণিপুরে ২২০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন, আহত হয়েছেন বহু মানুষ। ৫০ হাজারের বেশি মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়ে উদ্বাস্তু শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন।

কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যে নানা ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে গত প্রায় দেড় বছরেও নিরাপত্তা পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে পারেনি। গত লোকসভা নির্বাচনে দুটি আসনেই হেরে যায় বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট। জয় পেয়েছে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন জোট।