আর জি করে ধর্ষণ-হত্যা : দাবি পূরণ না হওয়ায় আমরণ অনশনে জুনিয়র চিকিৎসকেরা
দাবি পূরণ না হওয়ায় কলকাতার আর জি কর কলেজ ও হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসকেরা আজ শনিবার রাত থেকে আমরণ অনশন শুরু করেছেন। রাত আটটার দিকে শহরের ধর্মতলায় এক সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা এ ঘোষণা দেন।
গতকাল শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গে চলমান বন্যা পরিস্থিতিসহ নানা দিক বিবেচনা করে আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকেরা কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে তাঁরা ১০ দফা দাবি মেনে নেওয়ার জন্য ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দাবি মানা না হলে তাঁরা আমরণ অনশন শুরু করবেন। কিন্তু আজ রাত আটটায় বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হওয়ায় তাঁরা কলকাতার ধর্মতলার অবস্থান মঞ্চে অনশন শুরু করেন। এরই মধ্যে ৬ জন জুনিয়র চিকিৎসক যোগ দিয়েছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, অনশন মঞ্চে স্বচ্ছতা বজায় রাখার জন্য তাঁরা সিসিটিভি বসাচ্ছেন। কেউ অসুস্থ হলে রাজ্য সরকারকেই সেটার দায় নিতে হবে।
আজ বিকেলে দক্ষিণ কলকাতার তারাতলা থেকে ঠাকুরপুকুর পর্যন্ত মানববন্ধন করেছেন জুনিয়র চিকিৎসক ও সমাজের সর্বস্তরের মানুষ। তাঁরা নারী চিকিৎসক ধর্ষণ-হত্যার বিচারের দাবি জানান।
‘হুমকি সংস্কৃতির’ (থ্রেট কালচার) অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আজ আর জি কর হাসপাতালের ১০ চিকিৎসককে বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। তাঁদের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে হোস্টেল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এবং কলেজ চত্বরে তাঁদের নিষিদ্ধ করা হয়েছে। হুমকি সংস্কৃতির অভিযোগে ৫৯ জন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে তদন্ত চালিয়েছিল কর্তৃপক্ষ।
গত ৯ আগস্ট আর জি কর হাসপাতালে কর্মরত অবস্থায় এক নারী চিকিৎসক ধর্ষণের পর খুন হন। বিচারের দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে আর জি করসহ রাজ্যের সব সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল। এই ধর্ষণ-খুনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে তীব্র আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষানবিশ চিকিৎসকেরা। শুধু কলকাতা বা পশ্চিমবঙ্গ নয়, প্রতিবাদ আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে গোটা ভারতে।
শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের দাবি মেনে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (সিবিআই) গ্রেপ্তার করে হাসপাতালের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষসহ সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অভিজিৎ মণ্ডলকে। বরখাস্ত করা হয় কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে।
এরপর সরকারের সঙ্গে চিকিৎসকদের দাবিদাওয়া নিয়ে বৈঠকের পর জুনিয়র চিকিৎসকেরা গত ২১ সেপ্টেম্বর কর্মবিরতি আংশিক প্রত্যাহার করে কাজে ফেরেন। তবে বাকি দাবিদাওয়া আদায়ের লক্ষ্যে তাঁদের আন্দোলন অব্যাহত রাখেন।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ১০ দফা দাবি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের ২৩টি সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নতুন করে কর্মবিরতি শুরু করেন শিক্ষানবিশ চিকিৎসকেরা। গতকাল রাতে ওই আংশিক কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা।