ভারতের উত্তরাখন্ডে উচ্ছেদের প্রতিবাদে রাস্তায় মুসলিম নারীরা
ভারতের উত্তরাখন্ডে বাড়িঘর উচ্ছেদের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছেন হাজারো মুসলমান। বিক্ষোভকারীদের অধিকাংশই নারী। রাজ্যের হলদয়ানি শহরের বানভুলপুরা অঞ্চলের সড়কে বিক্ষোভ করেন তাঁরা।
গত ২০ ডিসেম্বর উত্তরাখন্ড হাইকোর্টের এক নির্দেশনায় বলা হয়, বানভুলপুরার অধিকাংশ অধিবাসী রেলের সম্পত্তিতে দখলদার হিসেবে বসবাস করছেন। বেআইনি দখলদারদের এক সপ্তাহের নোটিশ দিয়ে তুলে দিতে ভারতীয় রেল ও স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেন আদালত। স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, দখলদারদের ৮০ শতাংশের বেশি মুসলমান সম্প্রদায়ের।
গত সোমবার বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন সমাজকর্মী আফ্রিদা আলী। ৫০ হাজারের বেশি মানুষকে রাতারাতি ঘর ছেড়ে দিতে হবে বলে জানান তিনি। আফ্রিদা আলী টেলিফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই শীতে তাঁরা কোথায় যাবেন, সে সম্পর্কে কোনো দিকনির্দেশনা না দিয়েই উঠে যেতে বলা হয়েছে। অথচ বহু দশক ধরে এঁরা এখানেই বসবাস করছেন।’
এই অধিকারকর্মী বলেন, এখন যাঁদের বেআইনি দখলদার বলা হচ্ছে, তাঁদের বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ করছে সরকার। এ জন্য তাঁরা নিয়মিত করও দিচ্ছেন। এ ছাড়া অঞ্চলের বাসিন্দারা তাঁদের বাসস্থান রাজ্য সরকারের ভূমি ও রাজস্ব দপ্তরে নথিভুক্ত (রেজিস্টার) করেছেন বহু বছর আগেই।
হাইকোর্টের দেওয়া উচ্ছেদের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেছিলেন স্থানীয় ব্যবসায়ী শারাফত খান। তিনি বলেন, ‘স্কুল বা হাসপাতালের মতো সরকারি ভবন এই জমিতেই নির্মাণ করা হয়েছে। সেই জমিকে এখন দখল করা বেআইনি জমি বলে চিহ্নিত করেছেন আদালত।’
মুসলমানদের এই প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন উত্তরাখন্ডের শিখ সম্প্রদায়ের মানুষও। ভারতের শিখ সম্প্রদায়কেও মুসলমানদের মতো ধর্মীয় সংখ্যালঘু হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে উচ্ছেদ হওয়া পরিবারের আবেদনের শুনানি হবে। অতীতে এ ধরনের পরিস্থিতিতে উচ্ছেদ হওয়া মানুষের জীবন এবং জীবিকার সুরক্ষা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ভারতের সর্বোচ্চ আদালত তাই এখন আফ্রিদা ও শারাফতের একমাত্র ও শেষ ভরসা।