পান্নুন হত্যার ষড়যন্ত্র নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ প্রসঙ্গে যা বলল ভারত
যুক্তরাষ্ট্রে শিখ নেতা গুরপতবন্ত সিং পান্নুন হত্যার ষড়যন্ত্র প্রসঙ্গে মুখ খুলল ভারত। আজ বৃহস্পতিবার জানিয়ে দিল, কোনো ব্যক্তিকে খুনের জন্য কাউকে নিয়োগ করা ভারত সরকারের নীতি নয়। চেক প্রজাতন্ত্র থেকে ভারতীয় নাগরিক নিখিল গুপ্তকে গ্রেপ্তার ও তাঁর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের এক নাগরিককে হত্যার ষড়যন্ত্রে মামলা দায়ের প্রসঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিষয়টি খুবই উদ্বেগের এবং ভারত সরকারের নীতির পরিপন্থী।
যুক্তরাষ্ট্র এর আগে তাদের নাগরিক ও ‘শিখস ফর জাস্টিস’ নামের শিখ সংগঠনের নেতা পান্নুনের হত্যাচেষ্টায় ভারতের জড়িত থাকার নির্দিষ্ট কিছু তথ্য দিয়েছিল। ভারত তখনই তাকে উদ্বেগজনক আখ্যা দিয়েছিল। গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্র সেই অভিযোগের আরও সুনির্দিষ্ট তথ্য দাখিল করে জানায়, ওই চক্রান্তে যুক্ত থাকার অভিযোগে নিখিল গুপ্ত (৫২) নামের এক ভারতীয় নাগরিককে চেক প্রজাতন্ত্র থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে হত্যাচেষ্টার মামলা করা হয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি এই প্রসঙ্গে ভারত সরকারের প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা আগেই বলেছি, ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার সময় সংঘটিত অপরাধ, আগ্নেয়াস্ত্রের কারবারি ও সন্ত্রাসবাদীদের যোগসাজশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কিছু তথ্য দাখিল করেছিল। এই ধরনের তথ্য আমরা খুবই গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করি। সেসব তথ্য খতিয়ে দেখতে উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটি করা হয়েছে। সেই কমিটির প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
মুখপাত্র বলেন, এই বিষয়ে বাড়তি কিছু জানানো এখনই সম্ভব নয়।
যুক্তরাষ্ট্র যে ধরনের অভিযোগ এনেছে, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর অভিযোগও একই ধাঁচের। যুক্তরাষ্ট্র খালিস্তানি শিখ নেতা পান্নুনকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনেছে ভারতের বিরুদ্ধে। ট্রুডো শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরকে হত্যায় ভারতের হাত থাকার সন্দেহের কথা বলেছিলেন। কিন্তু ভারতের প্রতিক্রিয়া শুরু থেকেই দুই ধরনের।
যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগকে ভারত ‘গুরুতর’ জানিয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিলেও ট্রুডোর অভিযোগকে আমল দিতে রাজি নয়। কানাডা পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণ না দিলে তদন্তে সহযোগিতা করা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতেও রাজি নয়। আজ বৃহস্পতিবারও ভারত সেই মনোভাব স্পষ্ট করে দেয়। পাশাপাশি ভারতবিরোধী উগ্রপন্থীদের প্রশ্রয় দেওয়া নিয়ে কানাডার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে।
অরিন্দম বাগচি কানাডার অভিযোগ প্রসঙ্গে আজও বলেন, ‘কানাডা সে দেশের রাজনীতিতে ভারতবিরোধী উগ্রপন্থীদের ক্রমাগত আশকারা দিয়ে যাচ্ছে। মূল বিষয় সেটাই। সে জন্য কানাডায় আমাদের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকদের ফল ভোগ করতে হচ্ছে। তাঁদের হয়রানি করা হচ্ছে। কানাডা ভিয়েনা সনদ কনভেনশনের ইতিকর্তব্যগুলো পালন করবে, এটাই আমাদের আশা।’
ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা এটাও দেখছি, কানাডার কূটনীতিকেরা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে চলেছেন।’