ভিডিও বার্তায় দোষীদের শাস্তি চাইলেন সেই ‘ভোলে বাবা’

সুরাজ পাল ওরফে নারায়ণ সাকার বিশ্ব হরি ওরফে ‘ভোলে বাবা’র একটি প্রতিকৃতি। ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের ময়নপুরী জেলার বিছহাওয়ান গ্রামে তাঁর আশ্রমের ছাদে। ৪ জুলাই, ২০২৪ সালে তোলাছবি : রয়টার্স

ভারতের উত্তর প্রদেশে গত সপ্তাহে একটি ধর্মীয় আয়োজনে পদদলিত হয়ে শতাধিক প্রাণহানির ঘটনার পর ভিডিও বার্তায় ‘গভীর দুঃখ প্রকাশ’ করেছেন আলোচিত–সমালোচিত ‘ভোলে বাবা’। শাস্তি চেয়েছেন দোষীদের।

গত ২ জুলাই ভারতের জনবহুল উত্তর প্রদেশের হাথরস জেলায় ভোলে বাবার ধর্মীয় সাধুসঙ্গ আয়োজনে পদদলিত হয়ে ১২১ জন নিহত হন। আহত হন আরও অনেকে।

উত্তর প্রদেশ পুলিশের হেড কনস্টেবল থেকে ধর্মগুরু বনে যাওয়া ভোলে বাবাকে ওই ঘটনার পর আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পদদলনের ওই ঘটনায় উত্তর প্রদেশ পুলিশ এরইমধ্যে সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

শনিবার সকালে ভোলে বাবার একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ পায়। সেখানে ভোলে বাবা বলেন, পদদলনের ওই ঘটনায় তিনি ‘গভীরভাবে ব্যথিত’ হয়েছেন। তাঁর বিশ্বাস, যাঁরা ভয়ংকর ওই ঘটনার জন্য দায়ী তাঁদের শাস্তি হবে।

পদদলনের পর এই প্রথম ওই ঘটনা নিয়ে কথা বললেন ভোলে বাবা।

ভারতের কয়েকটি সম্প্রচারমাধ্যমে ভোলে বাবার ভিডিও বার্তা প্রচার করেছে। সেখানে তিনি আরও বলেন, ‘ঈশ্বর আমাদের এই কষ্ট সহ্য করার শক্তি দান করুন।’

ভিডিও বার্তা প্রকাশ করলেও তিনি ঠিক কোথায় আছেন বা কোথা থেকে এই ভিডিও ধারণ করেছেন, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

ভোলে বাবা লুকিয়ে আছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে গত বৃহস্পতিবার তাঁর আইনজীবী এ পি সিং বলেছিলেন, তাঁর মক্কেল জনগণের থেকে লুকিয়ে নেই। তবে ভোলে বাবা কোথায় আছেন সে বিষয়ে কোনো তথ্য সেসময় দেননি ওই আইনজীবী।

আরও পড়ুন

ভোলে বাবার ওই সাধুসঙ্গ আয়োজনের দায়িত্বে যাঁরা ছিলেন তাঁদের প্রধান দেবপ্রকাশ মধুকর শুক্রবার পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। ভোলে বাবার আইনজীবী এ পি সিং একইসঙ্গে দেবপ্রকাশের আইনজীবী হিসেবেও কাজ করছেন। তিনি সাংবাদিকদের দেবপ্রকাশের আত্মসমর্পণের খবর দেন। বলেন, ‘তিনি দিল্লি থেকে আত্মসমর্পণ করেছেন। আমরা আগাম জামিনের আবেদন করছি না।’

ভোলে বাবার সাধুসঙ্গে পদদলনের ঘটনার পর থানায় প্রাথমিক যে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে সেখানেও প্রধান আসামি করা হয় দেবপ্রকাশ মধুকরকে। পুলিশ তাঁকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য এক লাখ রুপি পুরস্কার ঘোষণা করেছিল।

আরও পড়ুন

৮০ হাজার মানুষের অংশগ্রহণের অনুমতি থাকলেও সেদিন সাধুসঙ্গে প্রায় আড়াই লাখ গ্রামবাসী অংশ নিয়েছিলেন।

ভোলে বাবার আসল নাম সুরাজ পাল। তাঁর বাড়ি উত্তর প্রদেশের ইটাহ জেলার বাহাদুর নাগারি গ্রামে। বাবা নান্নে লাল, মা কাতোরি দেবী। তাঁরা দুই ভাই। এক ভাই মারা গেছেন। গ্রামেই পড়ালেখা করেন তিনি।

উত্তর প্রদেশ পুলিশে হেড কনস্টেবল পদে ছিলেন সুরাজ। কাজ করতেন স্থানীয় গোয়েন্দা ইউনিটে। তবে সুরাজের দাবি, তিনি কলেজ পেরোনোর পর থেকে আইবির হয়ে কাজ করতেন, পরে ধর্মকর্মে মন দেন। ১৯৯৯ সালে সরকারি চাকরি ছেড়ে দেন। বদলে ফেলেন নিজের নাম।

আরও পড়ুন