প্রিয়াঙ্কা নজর কাড়ছেন ভারতের পার্লামেন্টের ভেতরে-বাইরে

প্রিয়াঙ্কা গান্ধীফাইল ছবি: এএনআই

সদ্য সংসদ সদস্য হয়েছেন। কিন্তু এই অল্প সময়েই নজর কেড়ে নিয়েছেন ভারতের কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী।

কেরালার ওয়েনাড থেকে লোকসভায় নির্বাচিত হয়ে প্রিয়াঙ্কা শপথ নিয়েছিলেন হাতে সংবিধান নিয়ে। সংবিধান নিয়ে বিতর্কে অংশ নিতে কংগ্রেস তাঁকে সুযোগও করে দেয়। ৪০ মিনিটের সেই ভাষণে প্রিয়াঙ্কা বিজেপির রাজনীতি, দর্শন ও মনোভাবের তীব্র সমালোচনা করেছিলেন। সংসদের অবমাননা প্রধানমন্ত্রী কীভাবে করেন বলতে গিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘মাত্র ১৫ দিন হলো আমার সংসদজীবন। এই কদিনে এক দিন মাত্র ১৫ মিনিটের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে এই কক্ষে দেখেছি!’ কটাক্ষ করে তিনি বলেছিলেন, এ থেকেই বোঝা যায়, সংসদ ও সংবিধানকে বিজেপি কতটা গুরুত্ব দেয়। সংবিধান সম্পর্কে বিজেপির উদ্দেশে প্রিয়াঙ্কা বলেছিলেন, সংবিধান নয়, তারা সংঘের বিধান দিয়ে দেশ শাসন করতে চায়। কিন্তু এই সংবিধানই প্রতিটি মানুষের রক্ষাকবচ।

পার্লামেন্ট কক্ষের বাইরেও প্রিয়াঙ্কা যথেষ্ট সাবলীল। প্রায় প্রতিদিনই তিনি দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছেন। বিভিন্ন বিষয়ে গণমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন। মোদি–আদানির ছবি সাঁটা জ্যাকেট পরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। কাঁধে ‘প্যালেস্টাইন’ লেখা ব্যাগ ঝুলিয়ে লোকসভায় ঢুকেছেন। সে নিয়ে বিজেপি সমালোচনা করার পরদিনই ‘বাংলাদেশ’ লেখা ব্যাগ নিয়ে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সংখ্যালঘুদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন এবং জবাব দিয়েছেন যাবতীয় সমালোচনার।

ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের মাত্রাছাড়া আক্রমণের নিন্দা বিজেপি ও কেন্দ্রীয় সরকার করেনি, তা নিয়ে বিরোধীদের সমালোচনা শুনতে হয়েছে বিজেপি ও মোদি সরকারকে। ‘প্যালেস্টাইন’ লেখা ঝোলা নেওয়ার দরুন প্রিয়াঙ্কাকে এতহাত নেন উত্তর প্রদেশের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। রাজ্য বিধানসভায় ওই আচরণের উল্লেখ করে আদিত্যনাথ গতকাল মঙ্গলবার বলেন, ‘প্রিয়াঙ্কা প্যালেস্টাইন লেখা ব্যাগ নিয়ে সংসদে যাচ্ছেন। ওঁর জানা উচিত, আমরা রাজ্যের যুবাদের কাজের জন্য ইসরায়েলে পাঠাচ্ছি। এখন পর্যন্ত ৫ হাজার ৬০০ জন ইসরায়েলে নির্মাণকাজে অংশ নিতে গেছেন।’

আজ বুধবার সেই সমালোচনার জবাব দিয়েছেন প্রিয়াঙ্কা। মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথের উদ্দেশে তিনি বলেন, এর জন্য কোনো কৃতিত্ব তিনি দাবি করতে পারেন না, বরং এটা তাঁর লজ্জা।

আদিত্যনাথের উদ্দেশে ‘এক্স’ হ্যান্ডেলে প্রিয়াঙ্কা লিখেছেন, রাজ্যের কর্মসংস্থানের হাল কেমন, তা তাঁরা যেমন জানেন না, তেমনই যাঁদের পাঠানো হয়েছে, তাঁদের ও তাঁদের পরিবারের যন্ত্রণাও তাঁরা বোঝেন না। প্রিয়াঙ্কা বিভিন্ন গণমাধ্যমের রিপোর্ট দাখিল করে বলেছেন, ইসরায়েলে যাঁদের পাঠানো হয়েছে, তাঁদের প্রাণ বাঁচাতে বাঙ্কারে সময় কাটাতে হচ্ছে। সেখানকার সংস্থাগুলো তাঁদের শোষণ করছে।

আদিত্যনাথের উদ্দেশে প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘আমাদের দেশের যুবাদের যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানো কোনো কৃতিত্ব নয়। অথচ উনি চাইছেন, মানুষ তাঁদের পিঠ চাপড়াক। তাঁরা যা করেছেন, তা লজ্জার।’