রতন টাটাকে স্মরণ: হুগলির সিঙ্গুরে শিল্পায়নের দাবি বিজেপির

পশ্চিমবঙ্গের হুগলির সিঙ্গুরে শুক্রবার সদ্য প্রয়াত রতন টাটার স্মরণে মৌন মিছিল করেন বিজেপির নেতা–কর্মীরাছবি: ভাস্কর মুখার্জি

ভারতের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপতি সদ্য প্রয়াত রতন টাটা পশ্চিমবঙ্গের হুগলির সিঙ্গুরে একটি ন্যানো গাড়ি তৈরির কারখানা প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। কারখানা নির্মাণের এ প্রকল্প অনেক দূর এগোলেও তৎকালীন রাজ্যের বিরোধীদলীয় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতার কারণে তা সফল হয়নি। রতন টাটার মৃত্যুর পর সিঙ্গুরে আবারও শিল্পায়নের দাবি জানিয়েছে বিজেপি।

রতন টাটার স্মরণে শুক্রবার সিঙ্গুরে একটি মৌন মিছিল করেছে বিজেপি। মিছিল শেষে এ দাবি তুলে ধরেন বিজেপি নেতারা। এ সময় বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই রাজ্য থেকে রতন টাটাকে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন। আমরা ঘোষণা দিচ্ছি, রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় এলে এই সিঙ্গুরেই শিল্প গড়ে তুলব। এলাকার মানুষের স্বপ্ন পূরণ করব। তাদের দাবি বাস্তবায়ন করব।’

রতন টাটা ২০০৬ সালে পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ডাকে সাড়া দিয়ে রাজ্যে ন্যানো গাড়ির কারখানা প্রতিষ্ঠার প্রকল্প হাতে নিয়েছিলেন। এ জন্য বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য রতন টাটাকে পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার সিঙ্গুরে ৯৯৭ একরের বেশি জমি ইজারা দেন। এর মধ্যে ৪০০ একর জমির মালিকেরা তাঁকে জমি দিতে চাননি। যদিও রাজ্য সরকার এসব জমি অধিগ্রহণ করে রতন টাটার কাছে হস্তান্তর করেছিলেন। জমিতে টাটা গ্রুপ কারখানা নির্মাণের কাজও শুরু করে দেয়।  

কারখানার নির্মাণকাজ ৮০ শতাংশ শেষ হওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এসব জমি অধিগ্রহণের বিরোধিতা করেন। জমি দিতে অনিচ্ছুক কৃষকদের নিয়ে রাজ্যজুড়ে টাটার শিল্পায়নবিরোধী আন্দোলন শুরু করেন তিনি। তীব্র বিরোধিতার মুখে কারাখানাটি সিঙ্গুর থেকে গুজরাটে সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছিলেন রতন টাটা।

রতন টাটার স্মরণে আয়োজিত মৌন মিছিলে বিজেপি শুভেন্দু অধিকারী বলেন, কারখানা নির্মাণের জন্য যাদের জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল তাঁদের দাবি, তখন রাজ্য সরকার তাঁদের জমি ফিরিয়ে দিলেও সেসব জমির বেশির ভাগ কৃষিকাজের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। কারণ, কারখানা নির্মাণের সময় এসব জমিতে ইট-বালু ও সিমেন্ট পড়ে মাটির উর্বরতা শক্তি নষ্ট হয়ে গেছে। তাই জমিদাতাদের অধিকাংশই এসব অনুর্বর জমিতে নতুন করে শিল্পকারখানা গড়ে তোলার দাবি জানিয়েছেন। তারা চান, সিঙ্গুরে রতন টাটার স্বপ্ন পূরণ হোক।