কলকাতায় খুশির ঈদ
কলকাতাসহ গোটা পশ্চিমবঙ্গে উদ্যাপিত হচ্ছে মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। শুধু পশ্চিমবঙ্গই নয়, ভারতজুড়েই আজ উদ্যাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতর। গত দুই বছর করোনার কারণে অনাড়ম্বরভাবে উদ্যাপিত হয়েছিল ঈদ। এবার পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। করোনার প্রকোপ কমে গেছে। তাই এবার ঈদ উদ্যাপিত হচ্ছে সাড়ম্বরে।
প্রতিবছর কলকাতার প্রধান ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে কলকাতার ধর্মতলার কাছে রেড রোডে। গত দুই বছর করোনার কারণে সেখানে ঈদের জামাত হয়নি। এবার সেই রেড রোডে নামাজ আদায়ের আয়োজন করা হয়েছে। সকালে নামাজ আদায়ের প্রাক্কালে সামন্য বৃষ্টি হলেও ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা সেই বৃষ্টির মধ্যেই নামাজ আদায় করেছেন। নামাজ শেষে শুভেচ্ছা বিনিময়–কোলাকুলিও যথারীতি হয়েছে।
এবার রেড রোডের নামাজ আদায়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘আজ দেশের অবস্থা ঠিক নেই। দেশে লাগাতার বিভাজনের রাজনীতি চলছে। অশান্তি লাগানোর চেষ্টা চলছে। বাংলার মানুষের ঐক্য দেখে অনেকে হিংসা করেন। বাংলার মতো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি দেশের আর কোথায়ও নেই।’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমি থাকতে, তৃণমূল থাকতে বাংলায় বিভাজনের রাজনীতি বরদাশত করব না। এখানে হিন্দু-মুসলিম-শিখ সবাই মিলেমিশে একসঙ্গে থাকব। ধর্মের সুড়সুড়ি দিতে ভেদাভেদের রাজনীতি আমরা মানব না। দেশকে টুকরা করে দেওয়ার চেষ্টাও বরদাশত করব না। তাই তো এই বাংলার মানুষের ঐক্য দেখে হিংসা করেন কেউ কেউ।’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেন, ‘বাংলার মতো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির রাজ্য আর নেই ভারতে। তাই আমরা এই বাংলায় “বিশেষ সম্প্রদায়কে” আইসোলেটেড করে দেওয়ার চক্রান্ত বরদাশত করব না। কারণ, আমরা লড়তে জানি; গড়তে জানি। আমাদের লড়াই করার শক্তি দিয়েছে এই বাংলার মানুষ।’
এদিকে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দেশবাসীকে।
আজ রেড রোড ছাড়াও কলকাতায় আরও বেশ কটি বড় জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে পার্ক সার্কাস ময়দান, টিপু সুলতান মসজিদ, মেটিয়াব্রুজ, খিদিরপুর, মল্লিকবাজার, রাজাবাজার, বেলগাছিয়া, আনোয়ার শাহ রোডসহ শহরের বিভিন্ন মসজিদ ও ঈদগাহ ময়দানে।
আজ রাজ্যের সর্বত্র ঈদের নামাজ শেষে মুসল্লিরা দেশের উন্নতি ও অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করেন। প্রার্থনা করেন শান্তি, সৌহার্দ্য ও অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ার; যেখানে মানুষে-মানুষে, ধর্মে-ধর্মে কোনো বিভেদ থাকবে না। যেখানে থাকবে মানুষের মধ্যে সুখী, সুন্দর, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক দেশ গড়ার প্রত্যয়।