৯ মাস পর দর্শনার্থীদের জন্য খুলছে আইফেল টাওয়ার
করোনা মহামারির কারণে ৯ মাস বন্ধ থাকার পর আজ শুক্রবার ফ্রান্সে দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে আইফেল টাওয়ার। বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
খবরে বলা হয়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রথম এত লম্বা সময় ধরে বন্ধ ছিল ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে অবস্থিত জনপ্রিয় এই স্থাপনা।
আইফেল টাওয়ার দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হলেও সতর্কতা হিসেবে মেনে চলতে হবে সামাজিক দূরত্বের বিধি। সেখানে দিনে দর্শনার্থীর সংখ্যা ১৩ হাজারে সীমিত রাখা হচ্ছে। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে এই সংখ্যা প্রায় অর্ধেক কম।
আগামী বুধবার থেকে আইফেল টাওয়ার পরিদর্শন করতে হলে দর্শনার্থীদের করোনার টিকা গ্রহণের সনদ বা নমুনা পরীক্ষার নেগেটিভ সনদ দেখাতে হবে। সম্প্রতি ফ্রান্স সরকারের জারি করা বিধি অনুযায়ী এমনটা করা হবে।
আইফেল টাওয়ার পরিচালনাকারী কোম্পানির প্রধান জ্যাঁ ফ্রান্সিস মার্টিনস বলেন, ‘অবশ্যই এই অতিরিক্ত কাজ আইফেল টাওয়ার পরিচালনার বিষয়টিকে জটিল করে তুলবে। তবে তা সামলে নেওয়া যাবে।’
৯ মাস বন্ধের পর আইফেল টাওয়ার যে দর্শনার্থীদের জন্য প্রস্তুত, সেই ঘোষণা দেওয়ার আগে পরিচালনার কাজে নিয়োজিত কর্মীরা নিরাপত্তাসংক্রান্ত চূড়ান্ত ধাপের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন।
করোনা মহামারির কারণে আরোপ করা বিধিনিষেধের কারণে প্যারিসের পর্যটন খাতে পরিবর্তন এসেছে। গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে পর্যটকদের অগ্রিম টিকিট সংরক্ষণের প্রবণতা থেকে এই পরিবর্তনের আভাস পাওয়া যায়।
জ্যাঁ ফ্রান্সিস মার্টিনস বলেন, অগ্রিম টিকিটগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, যুক্তরাজ্য থেকে কেউ তা কাটেনি বললেই চলে। এখানে আমেরিকান আছে মাত্র ১৫ শতাংশ। আর এশিয়ার রয়েছে হাতে গোনা কয়েকজন।
নতুন পরিস্থিতিতে আইফেল টাওয়ার পরিদর্শনকারীদের অর্ধেকই ফ্রান্সের নাগরিক হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর সাধারণ সময়ের তুলনায় এখন ইতালি ও স্পেনের পর্যটকদের সংখ্যা বেশি থাকতে পারে।
দীর্ঘ সময় ধরে বন্ধ থাকায় আইফেল টাওয়ারের পরিচালনাকারী কোম্পানিকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়। আয় না থাকলেও রক্ষণাবেক্ষণসহ অন্যান্য খরচ তাদের গুনতে হয়। ফলে তারা হিমশিম খায়।
২০২০ সালে আইফেল টাওয়ার থেকে আয় ৭৫ শতাংশ কমে ২ কোটি ৫০ লাখ ইউরো দাঁড়ায়। এ অবস্থায় পরিচালনাকারী কোম্পানি সরকারি সহায়তা চায়।
সম্প্রতি টাওয়ারের রঙের কাজ করতে গিয়েও সমস্যার মুখে পড়ে কর্তৃপক্ষ। টাওয়ারের স্থানের পরিবেশে উচ্চমাত্রায় সিসা শনাক্ত হয়। শ্রমিকদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে রঙের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়।