অক্টোপাসটির পুরো শরীর স্বচ্ছ কাচের মতো। সে জন্যই একে ‘গ্লাস অক্টোপাস’ নামে ডাকা হয়। সমুদ্রের গভীরে বসবাসকারী এই প্রাণীকে সচরাচর দেখা যায়নি। অবশেষে সমুদ্রবিজ্ঞানীরা তার দেখা পেয়েছেন। ধারণ করতে সক্ষম হয়েছেন তার অপরূপ ছবিও।
যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম ইনডিপেনডেন্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রশান্ত মহাসাগরের তলদেশে ৩০ হাজার বর্গমাইলের বেশি এলাকাজুড়ে অভিযান চালিয়ে ওই গ্লাস অক্টোপাসটিকে দেখতে পান বিজ্ঞানীরা। ৩৪ দিন ধরে চলে তাঁদের এ সমুদ্র অভিযান।
গ্লাস অক্টোপাসের পোশাকি নাম ভিট্রিলেদোনেলা রিচার্দি। পৃথিবীতে যেসব প্রাণীকে খুবই কম দেখা যায়, তাদের একটি গ্লাস অক্টোপাস। ১০০ বছরের বেশি সময় আগে প্রাণীটির অস্তিত্বের কথা জানতে পারেন বিজ্ঞানীরা। একটি শিকারি প্রাণীর পেটে দেহাবশেষ পাওয়ার পর গ্লাস অক্টোপাস নিয়ে গবেষণায় আগ্রহ বাড়ে বিজ্ঞানীদের। কিন্তু এ জন্য বাদ সাধে তথ্যপ্রমাণের ঘাটতি। কারণ, গ্লাস অক্টোপাসের লাইভ ফুটেজের বড্ড অভাব। তাই ছবি বা ভিডিও সংগ্রহের জন্য বিজ্ঞানীরা উঠে পড়ে লাগেন।
এ জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক সমুদ্র গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্মিড্ট ওশান ইনস্টিটিউটের একটি গবেষণা জাহাজে করে সমুদ্রবিজ্ঞানীরা সামোয়ার উত্তরে অবস্থিত ফিনিক্স আইল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জের কাছে প্রশান্ত মহাসাগরের তলদেশ চষে বেড়ান। ওই অভিযানের বিষয়ে স্মিড্ট ওশান ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক জ্যোতিকা বিরমানি বলেছেন, ‘বিজ্ঞানী ও স্থানীয় গবেষকেরা দারুণ একটি কাজ করেছেন। সমুদ্রবিজ্ঞান ও অনুসন্ধানের জন্য এটা একটি স্মরণীয় উদাহরণ, যাতে আমরা সহায়তা করেছি।’
প্রাণীদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণের জন্য গবেষক দলটি সুবাস্তিয়ান নামের একটি রোবট সমুদ্রের তলদেশে পাঠায়। সেই রোবটের উচ্চ ক্ষমতার ক্যামেরায় ধরা পড়ে বিরল গ্লাস অক্টোপাসটি। এ ছাড়া প্রথমবারের মতো একটি বিরল হোয়েল শার্কও ধরা পড়েছে ক্যামেরায়। এর দৈর্ঘ্য ৪০ ফুটের বেশি। বিজ্ঞানীরা সমুদ্রের তলদেশে গিয়ে ২১টি অভিযান চালান। এসব অভিযানে তাঁরা মোট ১৮২ ঘণ্টা পানির নিচে কাটান।