২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

সৌদি যুবরাজের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ

সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান
ফাইল ছবি: রয়টার্স

সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নামে জার্মানির আদালতে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের আনুষ্ঠানিক অভিযোগ এনেছে রিপোটার্স উইদাউট বর্ডারস। এ অভিযোগে বিন সালমান ছাড়াও সৌদি আরবের আরও চারজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার নাম রয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, যুবরাজ ও অভিযুক্ত সৌদি কর্মকর্তাদের নির্দেশে দেশটির সাংবাদিকদের ওপর ‘ব্যাপক ও পদ্ধতিগত নির্যাতন’ চালানো হয়েছে। হত্যা করা হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে তুরস্কের মাটিতে ওয়াশিংটন পোস্টের কলাম লেখক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডে যুবরাজ সালমানের সম্পৃক্ততার বিষয়টি উল্লেখ করেছে বিশ্বজুড়ে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা এ সংস্থাটি।

জার্মানির দক্ষিণ–পশ্চিমাঞ্চলীয় কার্লসুরের ফেডারেল কোর্ট অব জাস্টিসে দায়ের করা ৫০০ পাতার অভিযোগে বলা হয়েছে, সৌদি আরবে অন্তত ৩৪ জন সাংবাদিককে জোরপূর্বক আটকে রাখা হয়েছে। হত্যা করা হয়েছে সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে। এসব সাংবাদিক আইনবহির্ভূত নির্যাতন, যৌন সহিংসতা ও হত্যার শিকার হয়েছেন।

অনেকেই বাধ্যতামূলক দেশত্যাগে বাধ্য হয়েছেন। বিশেষত সরকার ও রাজপরিবারের বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে যেসব সাংবাদিক উচ্চকণ্ঠ ছিলেন, তাঁরা যুবরাজের রোষানলে পড়েছেন।

যুবরাজ সালমান ও অভিযুক্ত সৌদি কর্মকর্তাদের নির্দেশে দেশটির সাংবাদিকদের ওপর বিস্তৃত ও পদ্ধতিগতভাবে এসব দমনমূলক নির্যাতন চালানো হয়েছে বলে জানান রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারসের সেক্রেটারি জেনারেল ক্রিস্টোফি দেলোইর। তিনি বলেন, বেছে বেছে সাংবাদিকদের ওপর পদ্ধতিগত এসব নির্যাতন ও হত্যা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের শামিল।

অভিযুক্ত চার কর্মকর্তা হলেন যুবরাজ সালমানের ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা সৌদ আল–কাহতানি, আহমাদ আসিরি, ইস্তাম্বুলে সৌদি আরবের সাবেক কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ আল–তাইবি এবং সৌদি গোয়েন্দা কর্মকর্তা মাহের মুতরেব। এঁদের মধ্যে সৌদ আল–কাহতানি ও আহমাদ আসিরির নামে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মার্কিন প্রশাসন।

জার্মান আদালতে অভিযোগ দায়েরের বিষয়ে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস বলছে, বিদেশের মাটিতে সংঘটিত আন্তর্জাতিক অপরাধের বিচারের এখতিয়ার জার্মানির আইনে রয়েছে। এমনকি এসব ঘটনায় জার্মানির ন্যূনতম সংশ্লিষ্টতা না থাকলেও জার্মান আইনে বিচার করা সম্ভব।

সংস্থাটির জার্মান শাখার পরিচালক ক্রিস্টিয়ান মিহার বলেন, ‘অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে জার্মান আদালত দ্রুত তদন্ত শুরু করবে বলে আমরা আশা করছি। প্রয়োজনে তাঁদের নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হতে পারে।

২০১৮ সালে তুরস্কে সৌদি দূতাবাসের ভেতরে হত্যার শিকার হন জামাল খাসোগি। সম্প্রতি এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ প্রতিবেদনে খাসোগি হত্যায় সৌদি যুবরাজ সালমানের সম্পৃক্ততার উল্লেখ রয়েছে। বলা হয়েছে, ৩৫ বছর বয়সী যুবরাজ সালমানের অনুমোদনের পরই খাসোগিকে হত্যা করা হয়। রাজপরিবারের বিরুদ্ধে লেখালেখি করার কারণে প্রাণ দিতে হয় খাসোগিকে। এ প্রতিবেদন প্রকাশের পরপরই জার্মানির আদালতে বিন সালমান ও সৌদি আরবের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নামে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।