রাশিয়া-ইউক্রেন: সামরিক শক্তিতে কার জোর কত
রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করেছে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশে এ অভিযান চলছে। রাশিয়ার পদাতিক বাহিনী বেশ কয়েকটি দিক থেকে বৃহস্পতিবার সীমান্ত পেরিয়ে ইউক্রেনে ঢুকেছে। ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের দাবি করেছে রাশিয়া। ইউক্রেনের দাবি, তারা রাশিয়ার ছয়টি বিমান ও একটি হেলিকপ্টার ভূপাতিত ও ৫০ জন ‘দখলদার রাশিয়ান’কে হত্যা করেছে। এদিকে ইউক্রেনের অন্তত আট নাগরিক নিহত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। দুই পক্ষের মধ্যে এমন সামরিক সংঘাতের মধ্যে প্রতিবেশী দেশ দুটির মধ্যে কার সামরিক শক্তি কেমন, সেটা উঠে এসেছে বিবিসি বাংলার একটি প্রতিবেদনে।
সামরিক শক্তির বিচারে বিশ্বের ১৪০টি দেশের মধ্যে আয়তনে সবচেয়ে বড় দেশ রাশিয়ার অবস্থান দ্বিতীয়। সেখানে ইউক্রেনের অবস্থান ২২। দুই দেশের সৈন্যের সংখ্যা, যুদ্ধবিমান, রণতরি বা সামরিক সরঞ্জামেও ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সামরিক শক্তি পর্যবেক্ষণকারী গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়ার সৈন্যসংখ্যা ৮ লাখ ৫০ হাজার আর ইউক্রেনের সৈন্যসংখ্যা ২ লাখ। তবে উভয় দেশের রিজার্ভ সৈনিক রয়েছে আরও আড়াই লাখ।
গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের হিসাবে, সামরিক খাতে বছরে রাশিয়ার ব্যয় ১৫ হাজার ৪০০ কোটি ডলার। রাশিয়ার ১৫ ভাগের ১ ভাগ অর্থাৎ বছরে সামরিক খাতে ১ হাজার ১৮৭ কোটি ডলার ব্যয় করে ইউক্রেন। রাশিয়ার আধা সামরিক বাহিনীর সদস্য সংখ্যা আড়াই লাখ। অপর দিকে ইউক্রেনের রয়েছে মাত্র ৫০ হাজার।
রাশিয়ার ট্যাংক ১২ হাজার ৪২০টি, ইউক্রেনের ২ হাজার ৫৯৬টি। রাশিয়ার আছে ৩০ হাজার ১২২টি আমর্ড যানবাহন। ইউক্রেনের আর্মড ভেহিক্যাল ১২ হাজার ৩০৩টি। রাশিয়ার স্বয়ংক্রিয় কামান ৬ হাজার ৫৭৪টি। ইউক্রেনের ১ হাজার ৬৭টি। রাশিয়ার মোবাইল রকেট প্রজেক্টর ৩ হাজার ৩৯১টি। ইউক্রেনের আছে ৪৯০টি।
সামরিক নৌযান
সামরিক নৌযানের দিক থেকে অবশ্য ইউক্রেনের চেয়ে অনেক এগিয়ে রয়েছে রাশিয়া। রাশিয়ার নৌবাহিনীর সামরিক যান ৬০৫টি থাকলেও ইউক্রেনের রয়েছে মাত্র ৩৮টি। রাশিয়ার একটি বিমানবাহী রণতরি থাকলেও ইউক্রেনের নেই। এ ছাড়া রাশিয়ার ৭০টি সাবমেরিন থাকলেও ইউক্রেনের কাছে কোনো সাবমেরিন নেই।
ইউক্রেনের ডেস্ট্রয়ার নেই, রাশিয়ার আছে ১৫টি। ইউক্রেনের একটি ফ্রিগেট থাকলেও রাশিয়ার রয়েছে ১১টি। মাইন ওয়ারফেয়ার নৌযান ইউক্রেনের ১টি আর রাশিয়ার রয়েছে ৪৯টি। রাশিয়ার করভেট রয়েছে ৮৬টি, যেখানে ইউক্রেনের মাত্র ১টি। রাশিয়ার টহলদারি নৌযান রয়েছে ৫৯টি আর ইউক্রেনের রয়েছে ১৩টি।
অন্যান্য সরঞ্জাম
রাশিয়ার যেখানে ১ হাজার ২১৮টি বিমানবন্দর রয়েছে, ইউক্রেনের আছে মাত্র ১৮৭টি। রাশিয়ার ২ হাজার ৮৭৩টি বাণিজ্যিক জাহাজ থাকলেও ইউক্রেনের রয়েছে ৪০৯টি। বিশ্বে স্বীকৃত পারমাণবিক শক্তিধর দেশ আটটি। এর মধ্যে রাশিয়া একটি। রাশিয়ার কাছে পারমাণবিক অস্ত্র থাকলেও ইউক্রেনের কোনো পারমাণবিক অস্ত্রই নেই। রাশিয়ার এস-৪০০ নামের অত্যন্ত শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা রয়েছে, যা আকাশ প্রতিরক্ষায় খুবই কার্যকর, তবে ইউক্রেনের এ রকম কোনো ব্যবস্থা নেই।