মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্বের নিয়ম মানতে হবে না: বরিস জনসন
মুখে মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার মতো করোনার বিধিনিষেধ তুলে নিতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য। চলতি মাসেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হতে পারে বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
স্থানীয় সময় সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বরিস জনসন ১৯ জুলাই যুক্তরাজ্যে করোনার সব বিধিনিষেধ তুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। বিবিসির প্রতিবেদনে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বরাত দিয়ে বলা হয়, ১২ জুলাই সর্বশেষ পরিস্থিতি দেখে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।
তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া ও ভ্রমণের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়নি তখন। ডাউনিং স্ট্রিটে এক সংবাদ সম্মেলনে বরিস জনসন বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া, ভ্রমণ ও স্বেচ্ছা আইসোলেশনের মতো বিষয়গুলো নিয়ে শিগগিরই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে।
এ সময় মাস্ক পরার বিষয়ে বরিস জনসন বলেন, মাস্ক পরার বিষয়ে আইনগতভাবে কোনো বাধ্যবাধকতা না থাকলেও জনসমাগমে তিনি নিজে ভদ্রতার অংশ হিসেবে মাস্ক পরে থাকবেন।
জনসন বলেন, গণটিকা কার্যক্রমের ফলাফল ইতিবাচক হওয়ায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়েছে। টিকা নেওয়ার পর শনাক্তের হার কিছুটা বেশি থাকলেও মৃত্যুর সংখ্যা কমে এসেছে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘টিকা কার্যক্রমে আমরা অনেকটাই সফল হয়েছি। আমরা মৃত্যুর হার অনেক কমিয়ে এনেছি। সুতরাং এখন সামনে না এগিয়ে গেলে কখন এগোব।’
ঠিক কেমন হবে বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার পরবর্তী পরিস্থিতি—এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি জনসন। তবে তিনি বলেছেন, যাঁদের করোনা পজিটিভ এসেছে, তাঁদের জন্য স্বেচ্ছা আইসোলেশনের নির্দেশনা আগের মতোই থাকবে। যাঁরা টিকা নিয়েছেন, তাঁদের জন্য পরবর্তী নির্দেশনা শিগগিরই ঘোষণা করা হবে।
এ বিষয়ে ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভেদ বলেছেন, স্বাভাবিক জীবনে ফেরার রূপরেখা তিনি মঙ্গলবার পার্লামেন্ট সদস্যদের কাছে তুলে ধরবেন।
তবে বিধিনিষেধ তুলে জনগণকে স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে দেওয়ার সঙ্গে সতর্কবার্তাও দিয়েছেন বরিস জনসন। তিনি বলেন, এই মাসের শেষ দিকে দৈনিক সংক্রমণ ৫০ হাজারে পৌঁছানোর আশঙ্কা করা হচ্ছে। বাড়তে পারে মৃত্যুর সংখ্যাও।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবারও যুক্তরাজ্যে ২৭ হাজার ৩৩৪ জন করোনায় আক্রান্ত নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে নয়জনের। দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ৪৯ লাখ ৪৭ হাজারের বেশি।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। চীনে করোনায় প্রথম কোনো রোগীর মৃত্যু হয় ৯ জানুয়ারি। তবে তার ঘোষণা আসে ১১ জানুয়ারি। ১৩ জানুয়ারি চীনের বাইরে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় থাইল্যান্ডে। পরে বিভিন্ন দেশে করোনা ছড়িয়ে পড়ে।
করোনার প্রাদুর্ভাবের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছর ৩০ জানুয়ারি বৈশ্বিক স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ওই বছরের ২ ফেব্রুয়ারি চীনের বাইরে করোনায় প্রথম কোনো রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ফিলিপাইনে। ১১ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাভাইরাস থেকে সৃষ্ট রোগের নামকরণ করে ‘কোভিড-১৯’। এরপর গত বছরের ১১ মার্চ করোনাকে বৈশ্বিক মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।