মার্কিন হুঁশিয়ারির তোয়াক্কা না করে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা কিনতে চায় তুরস্ক

এস–৪০০ ‘ট্রায়াম্ফ’ ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা। রাশিয়ার কালিনিনগ্রাদের কাছের একটি সামরিক ঘাঁটিতে
ছবি: রয়টার্স

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেছেন, উত্তর আটলান্টিকের সামরিক জোট ন্যাটোর মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে রাশিয়ার কাছ থেকে দ্বিতীয় আরেকটি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা কেনার কথা ভাবছে তাঁর দেশ। খবর আল–জাজিরার।

মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিবিএস নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান তুরস্কের এ চিন্তাভাবনার কথা প্রকাশ করেছেন। দৃঢ়তার সঙ্গে তিনি বলেন, তুরস্ক তার প্রতিরক্ষাব্যবস্থা বিষয়ে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেবে।

এরদোয়ান গত সপ্তাহে নিউইয়র্কে আল–জাজিরার সংবাদদাতা মার্গারেট ব্রেনানকে এ সাক্ষাৎকার দেন। তিনি বলেন, তাঁর দেশকে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা কেনার সুযোগ দেওয়া হয়নি। এ ছাড়া ১৪০ কোটি মার্কিন ডলার অর্থ নিয়েও এফ-৩৫ স্টিলথ জেট বিমান তাঁদের সরবরাহ করেনি যুক্তরাষ্ট্র।

মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিবিএস নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান তাঁর দেশের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা নিয়ে নতুন চিন্তাভাবনার কথা প্রকাশ করেছেন। দৃঢ়তার সঙ্গে তিনি বলেছেন, তুরস্ক তার প্রতিরক্ষাব্যবস্থার বিষয়ে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেবে।

এর আগে ন্যাটোর অন্যতম সদস্য তুরস্ক প্রথম দফায় রাশিয়ার তৈরি এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা কেনায় তাকে এফ-৩৫ কর্মসূচি থেকে বের করে দেয় ও তুর্কি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করে যুক্তরাষ্ট্র। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে থেকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা কেনার পাশাপাশি নিজস্ব প্রতিরক্ষাব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটানোর কথাও বলেছেন এরদোয়ান।

এরদোয়ানের সাক্ষাৎকারের বিস্তারিত আজ রোববারই সম্প্রচার হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগে সাক্ষাৎকারের ওই সারাংশ আগাম প্রকাশ করা হলো।

পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর মধ্যে থেকে তুরস্ক রাশিয়ার প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ব্যবহার করুক, সে ব্যাপারে ঘোর আপত্তি আছে যুক্তরাষ্ট্রের। দেশটির কথায়, এই প্রতিরক্ষাব্যবস্থা এফ–৩৫–এর জন্য হুমকি। তবে তুরস্ক যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তি কানে তুলতে নারাজ।

এরদোয়ান বলেছেন, তাঁর দেশকে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা কেনার সুযোগ দেওয়া হয়নি। এ ছাড়া ১৪০ কোটি মার্কিন ডলার অর্থ নিয়েও এফ-৩৫ স্টিলথ জেট বিমান তাদের সরবরাহ করেনি যুক্তরাষ্ট্র।

তুরস্ক বলেছে, তারা ন্যাটোর প্রতিরক্ষাব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত হওয়া ছাড়াই স্বাধীনভাবে এস–৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ব্যবহার করবে। তাই এতে ন্যাটোর প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ঝুঁকিতে পড়ার কোনো কারণ নেই।

প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান মার্কিন চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে তাঁর সিদ্ধান্তের ব্যাপারে অনড় আছেন বলে জানা গেছে।

তুরস্ক রাশিয়ার কাছ থেকে আরও এস–৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা কিনবে কি না, ব্রেনানের এমন প্রশ্নের জবাবে এরদোয়ান বলেন, ‘তুরস্ক নিজের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা নিয়ে নিজেই সিদ্ধান্ত নেবে। আর তুরস্ক অবশ্যই, অবশ্যই তা করবে (আরও রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা কিনবে)।’

এদিকে নিউইয়র্ক ত্যাগের আগে এরদোয়ান সাংবাদিকদের স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের শুরুটা ভালো হয়নি; যেটা পূর্ববর্তী প্রেসিডেন্টদের সঙ্গে হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার তুরস্কের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনাদোলু প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানকে উদ্ধৃত করে বলেছে, ‘সত্যি বলতে, তুরস্ক ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক যে সুখকর অবস্থায় আছে, তা আমি বলব না।’ তিনি আরও বলেছেন, তুরস্ক প্রয়োজনে নতুন প্রতিরক্ষাব্যবস্থা কিনবে এবং তাঁর দেশ এরই মধ্যে নিজস্ব প্রতিরক্ষাব্যবস্থার উন্নয়ন শুরু করে দিয়েছে।

২৯ সেপ্টেম্বর রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের বৈঠকে বসার কথা রয়েছে।