পুতিনের উপদেষ্টার পদ ছাড়লেন ইয়েলৎসিনের জামাই

পুতিনের সঙ্গে ইয়েলৎসিনের জামাতা ভালেনতিন ইউমাশেভ (ডানে সবশেষ)
ছবি: রয়টার্স

ক্রেমলিনের উপদেষ্টার পদ ছেড়েছেন রাশিয়ার সাবেক নেতা বরিস ইয়েলৎসিনের জামাতা ভালেনতিন ইউমাশেভ। এ ঘটনা সম্পর্কে জানেন এমন দুজন ব্যক্তির বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ক্ষমতায় আসার পেছনে ইয়েলৎসিনের বড় ভূমিকা ছিল বলে মনে করা হয়। ভালেনতিন ইউমাশেভ যখন ক্রেমলিনের চিফ অব স্টাফ ছিলেন তখন পুতিন ছিলেন তাঁর সহকারী।

পুতিনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে ক্রেমলিনের অবৈতনিক উপদেষ্টা ইউমাশেভের তেমন প্রভাব ছিল না। পুতিন প্রশাসনে ইয়েলৎসিনের সময়কার শেষ ব্যক্তি ছিলেন ইউমাশেভ। বরিস ইয়েলৎসিনের শাসনামলকে রাশিয়ায় উদারনৈতিক সংস্কার ও পশ্চিমের জন্য দ্বার উন্মোচনের যুগ বলা হয়ে থাকে।

পুতিন ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীকে ইউক্রেনে হামলা করার নির্দেশ দেন। ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রুশভাষী মানুষকে রক্ষায় মস্কো একে ‘বিশেষ অভিযান’ বললেও পশ্চিমা দেশগুলো একে আগ্রাসন বলছে।

ইউক্রেনে রুশ হামলা শুরুর পর গত মার্চে ইয়েলৎসিনের সময়কার একজন শীর্ষস্থানীয় সরকারি কর্মকর্তা আনাতোলি চুবাইস ক্রেমলিনের বিশেষ দূতের পদ ছাড়েন। এরপর এ মাসে জাতিসংঘে রাশিয়ার মিশন থেকে একজন রুশ কূটনীতিক পদত্যাগ করেন।

রয়টার্স বলছে, ইউমাশেভের পদত্যাগ নিয়ে তাদের পক্ষ থেকে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো সাড়া মেলেনি। তাঁর মুঠোফোনে ফোন করেও সাড়া পাওয়া যায়নি। এদিকে পদত্যাগের বিষয়ে মন্তব্য চেয়ে ইউমাশেভের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনিও এ অনুরোধে সাড়া দেননি।

বরিস ইয়েলৎসিন প্রেসিডেনশিয়াল সেন্টার ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ছিলেন ইউমাশেভ। ওই ফাউন্ডেশনের সহকারী নির্বাহী পরিচালক লিউডমিলা তেলেন রয়টার্সকে বলেন, এপ্রিলে ক্রেমলিনের উপদেষ্টার পদ ছাড়েন ইউমাশেভ। কেন পদত্যাগ করলেন, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এটা তাঁর উদ্যোগ ছিল।

ইউমাশেভের পদত্যাগের বিষয় সম্পর্কে অবহিত অপর এক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে রয়টার্সকে আরও বলেন, এপ্রিলে প্রেসিডেন্টের (ভ্লাদিমির পুতিনের) উপদেষ্টার পদ ছেড়ে দিয়েছেন ইউমাশেভ।
১৯৯১–৯৯ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ছিলেন বরিস ইয়েলৎসিন। তাঁর প্রশাসনে ক্রেমলিনের উপদেষ্টা ও পরে ক্রেমলিনের চিফ অব স্টাফ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে ইউমাশেভ। ইয়েলৎসিনের মেয়ে তাতিয়ানাকে বিয়ে করেছেন তিনি।

১৯৯৭ সালে পুতিন যখন রুশ গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবির একজন এজেন্ট, তখন রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের প্রশাসন সামলাচ্ছিলেন ইউমাশেভ। এর এক বছর আগে ক্রেমলিনে মধ্যম পর্যায়ের একটি প্রশাসনিক দায়িত্ব পান। ১৯৯৭ সালে ক্রেমলিনের সহকারী চিফ অব স্টাফের দায়িত্ব পান ভ্লাদিমির পুতিন।

রয়টার্স বলছে, এ পদোন্নতির মাধ্যমে ইয়েলৎসিনের উত্তরসূরি হওয়ার পথ সুগম হয় পুতিনের জন্য। এরপর ইয়েলৎসিন পদত্যাগ করলে ২০০০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী জয়ী হন ভ্লাদিমির পুতিন।