দিনটি আজ চকলেট কেকের
ছোট্ট শিশু থেকে বৃদ্ধ—চকলেট কার না পছন্দ। আর হালের দিনগুলোতে জন্মদিন পালন থেকে শুরু করে যেকোনো উদ্যাপনে কেক যেন চাই–ই চাই। এ দুয়ে মিলেমিশে যখন সামনে হাজির হয় চকলেট কেক, তখন জিবে জল না এসে পারে? মজার বিষয় হলো, চকলেট কেক একেবারে আলাদাভাবে উপভোগের জন্য পুরো একটি দিনই রয়েছে। চকলেট কেক দিবস। আজ ২৭ জানুয়ারি দিবসটি উদ্যাপন করেন চকলেট কেকপ্রেমীরা।
বছরজুড়ে নানা দিবসের ভিড়ে চকলেট কেক নিয়ে আলাদা একটি দিন রয়েছে, তা শুনে হয়তো অনেকের চোখই কপালে উঠবে। এর কারণও আছে। বাংলাদেশসহ এ অঞ্চলের দেশগুলোতে চকলেট কেক দিবস পালনের তেমন একটা চল নেই। তবে ইউরোপ-আমেরিকার দেশগুলোতে কিন্তু ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে দিবসটির। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে চকলেট কেক দিবস ঘটা করে উদ্যাপন করা হয়।
কথা হচ্ছে যখন চকলেট কেক নিয়ে, তখন এর ইতিহাসটা একটু ঘেঁটে নেওয়া যাক। ফিরে যাই কয়েক শ বছর পেছনে। মার্কিন সাপ্তাহিক পত্রিকা ডোভার পোস্ট বলছে, চকলেট কেকের জন্ম ১৭৬৫ সালে। সে বছর একজন চকলেট প্রস্তুতকারীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে ঘন চকলেট সিরাপ তৈরি করেন জেমস বেকার নামের এক চিকিত্সক। ওই সিরাপ ছাঁচে ফেলে কেকের রূপ দেন তাঁরা। উদ্দেশ্য ছিল ভবিষ্যতে তা থেকে পানীয় বানানো। সেটিকেই বলা হচ্ছে প্রথম চকলেট কেক।
পরে চকলেট কেকের ধারণাকে আরও সামনে এগিয়ে নেন এলিজা লেসলি। রন্ধনশিল্প নিয়ে লেখালেখি করে নাম কামিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ার এই নারী। ১৮৪৭ সালে ‘দ্য লেডিস রেসিপ্ট বুক’ নামে তাঁর লেখা রান্নার একটি বই প্রকাশিত হয়। সেখানে তুলে ধরেন চকলেট কেকের রেসিপি। তবে এলিজার কেকে ব্যবহার করা হয়েছিল চকলেটের টুকরা। তরল চকলেট মেশানোর বুদ্ধি তখনো কারও মাথায় আসেনি।
এরপর সময় যত গড়িয়েছে, ততই মজাদার হয়েছে চকলেট কেক। সারাহ টাইসন, মারিয়া পারলোয়ারের মতো পাকা সব রাঁধুনিদের মাথা থেকে বের হয়েছে নানা রেসিপি। এসেছে আজকের তুলতুলে চকলেট কেক। চকলেট কেক নিয়ে কমবেশি জানা গেলেও দিবসটির ইতিহাস এখনো অন্ধকারে। কবে থেকে চকলেট কেক দিবস পালন করা হয়, কার হাত ধরেই–বা শুরু, তা এখনো জানা যায়নি।
চকলেট কেক দিবস কীভাবে পালন করা হয় তা তুলে ধরেছে দিবসকেন্দ্রিক ওয়েবসাইট ন্যাশনাল ডে ক্যালেন্ডার। মার্কিনদের যেহেতু দিবসটি নিয়ে মাতামাতি বেশি, তাই ধারণা দেওয়া হয়েছে তাঁদেরকে ঘিরেই। এদিনে কেকপ্রেমীদের একটাই কাজ, চকলেট কেক খাও আর অন্যকে খাওয়াও। কেকের দোকানে গিয়ে পয়সা খরচা করে পছন্দের কেকটি কিনে ফেলতেও মানা নেই। কেক ভালো হলে দোকানিকে ধন্যবাদ জানানো হয়। সাধ জাগলে এদিন বাসাতেই চকলেট কেক বানান অনেকে। আর হাতের কাছে ক্যামেরা তো আছেই। কেক নিজের বানানো হোক কিংবা কেনা, ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে পোস্ট না করলে কমতি থেকেই যায়।
এ গেল চকলেট কেক দিবসের কথা। এবার জেনে নেওয়া যাক চকলেট কেক নিয়ে মজার কিছু তথ্য। ন্যাশনাল ডেস টুডে নামের একটি ওয়েবসাইট বলছে, নানা ধরনের কেকের ভিড়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি পাঁচজনের একজন জন্মদিন পালনে বেছে নেন চকলেট কেক। অনেকের কাছেই আবার কেক মানে শুধুই চকলেট কেক। যুক্তরাষ্ট্রের ৪ শতাংশ মানুষ নাকি চকলেট কেক ছাড়া অন্য কোনো কেক মুখেই তোলেন না। বাজারে ভ্যানিলা কেক, লেমন কেক, অরেঞ্জ কেকসহ নানা ধরনের কেকের চল রয়েছে। তবে সবকিছুকে ছাপিয়ে ৩২ শতাংশ মার্কিন কেকপ্রেমীর পছন্দ চকলেট কেক। এই কেক এতটাই জনপ্রিয়তা পায় যে ১৮৭৯ সালে তা নিখুঁতভাবে বানানো শেখাতে রীতিমতো কোচিং সেন্টার খুলে বসেন রডল্ফ লিন্ড নামের এক ব্যক্তি।
যে চকলেট কেক নিয়ে এত আয়োজন, লাখো মানুষের আগ্রহ, সেটিকে কী বলা যায়? কেকের রাজা?