রাশিয়াকে জি–২০ থেকে বাদ দেওয়ার পশ্চিমা উদ্যোগ নাকচ চীনের
ইন্দোনেশিয়ার বালিতে আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে আগ্রহী রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। আজ বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে তাঁর এ আগ্রহের কথা জানিয়েছেন ইন্দোনেশিয়ায় নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত লুদমিলা ভোরোবিভা।
বিশ্বের বৃহৎ অর্থনীতির ১৯টি দেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) নিয়ে জি–২০ গঠিত। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর রাশিয়াকে আর এ গ্রুপে রাখা হবে কি না, যুক্তরাষ্ট্র ও এর পশ্চিমা মিত্রদেশগুলো তা পর্যালোচনা করে দেখছে। এ আলোচনার সঙ্গে যুক্ত কয়েকটি সূত্র এ কথা জানিয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে চীনকে পাশে পাচ্ছে রাশিয়া।
সূত্র বলছে, সম্মেলন থেকে রাশিয়াকে বাদ দেওয়ার যেকোনো পদক্ষেপের বিষয়ে ভেটো দিতে পারে গ্রুপের কোনো কোনো সদস্য। আবার এ বিতর্ক পাশ কাটাতে কয়েকটি দেশ জি-২০ সম্মেলন এড়িয়েও যেতে পারে।
এখন জি–২০ গ্রুপের সভাপতির দায়িত্বে আছে ইন্দোনেশিয়া। নভেম্বরে দেশটির বালি দ্বীপে জি–২০ সম্মেলন হওয়ার কথা। ভেরোবিভা জানিয়েছেন, পুতিন সেখানে যেতে চান। তবে তা কোভিড পরিস্থিতিসহ অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করছে। বর্তমানে কোভিড পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। এখন পর্যন্ত পুতিনের ইচ্ছা সম্মেলনে যোগ দেওয়ার।
রাশিয়াকে জি–২০ থেকে বাদ দেওয়ার পরামর্শবিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে ভেরোবিভা বলেন, ‘এটি অর্থনৈতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করার একটি ফোরাম; ইউক্রেন সংকটের মতো কোনো কিছু নিয়ে আলোচনা করার নয়। এ ধরনের ফোরাম থেকে রাশিয়াকে বাদ দিলে তা অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধানে কোনো সাহায্য করবে না।’
রাশিয়ার হামলার নিন্দা না জানানো ও পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করা বেইজিং আজ বুধবার মস্কোর পক্ষ হয়ে কথা বলেছে। বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে রাশিয়াকে জি–২০–এর গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেন, ‘জি-২০ এমন একটি গ্রুপ, যেটির উচিত কোভিড-১৯ মহামারিতে সৃষ্ট অর্থনৈতিক ধাক্কা থেকে উত্তরণের উপায় খোঁজা। কোনো সদস্যদেশেরই অন্য দেশকে বের করে দেওয়ার সুযোগ নেই। জি-২০ এর উচিত, বহুপাক্ষিকতার বাস্তবায়ন এবং ঐক্য ও সহযোগিতা জোরদার করা।’
রয়টার্স জানিয়েছে, রাশিয়াকে জি–২০ থেকে বাদ দেওয়ার আহ্বান বিষয়ে ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
রাশিয়া ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেশী ইউক্রেনের ওপর আক্রমণ শুরু করে। মস্কো বলছে, ইউক্রেনকে নিরস্ত্র করার জন্য এবং পশ্চিমাপন্থী নেতৃত্ব বদলাতে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরু করা হয়েছে।
রুশ হামলায় এরই মধ্যে ইউক্রেনে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ এবং বহু বেসামরিক লোকের মৃত্যু হয়েছে। ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পশ্চিমা দেশগুলোও রাশিয়াকে বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করতে নজিরবিহীন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এসবের মধ্যে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞাসহ সুইফট সিস্টেম থেকে রাশিয়াকে বাদ দেওয়ার মতো পদক্ষেপ রয়েছে।
গত মঙ্গলবার পোল্যান্ড জানায়, তারা মার্কিন বাণিজ্য দপ্তরকে জি-২০ থেকে রাশিয়াকে বাদ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়ার পর ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পেয়েছে। জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ বলেছেন, জি-২০ নেতাদের এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কিন্তু এখন এটি অগ্রাধিকার নয়। তিনি দ্রুত যুদ্ধ বন্ধের দাবি জানান।