ছেলেকে ২৮ বছর আটকে রাখার অভিযোগ মায়ের বিরুদ্ধে
সুইডেনে ছেলেকে অ্যাপার্টমেন্টে ২৮ বছর আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে এক মায়ের বিরুদ্ধে। বলা হচ্ছে, বছরের পর বছর ওই ব্যক্তিকে অ্যাপার্টমেন্টে আটকে রাখায় তাঁর অপুষ্টিজনিত নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় পুলিশের বরাতে আজ মঙ্গলবার এ খবর জানা গেছে।
ছেলেকে আটকে রাখার অভিযোগ ওঠা মায়ের বয়স ৭০ বছরের কোঠায়। আটক থাকা ছেলের বয়স এখন ৪১ বছর। তাঁকে উদ্ধারের পর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। ওই ব্যক্তির দেহে অপুষ্টিজনিত সমস্যা প্রবল। এ ছাড়া তাঁর প্রায় দাঁতই নেই।
স্টকহোম পুলিশের মুখপাত্র ওলা ওস্টারলিং এএফপিকে বলেন, ওই ব্যক্তিকে ‘দীর্ঘদিন’ অ্যাপার্টমেন্টে আটকে রাখা হয়েছিল। ‘সন্দেহভাজন ওই মায়ের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ভঙ্গ এবং শারীরিক ক্ষতি করার অভিযোগ উঠেছে।’
সুইডেনের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, এই ‘দীর্ঘদিন’ হলো ২৮ বছর। ১২ বছর বয়স তাঁকে স্কুল থেকে এনে অ্যাপার্টমেন্টে আটকে রাখা হয়েছিল। এখন তাঁর দুই পায়ে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে। তিনি খুব একটা হাঁটতেও পারছেন না। তবে পুলিশ এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ওই পরিবারের এক আত্মীয় ভুক্তভোগী ব্যক্তির খবর পান। তবে আত্মীয়ের পরিচয় জানা যায়নি। ভুক্তভোগী ব্যক্তির মুখে প্রায় কোনো দাঁতই নেই এবং তেমন কথাও বলতে পারছেন না। অবশ্য স্টকহোম পুলিশের মুখপাত্র ওলা ওস্টারলিং ভুক্তভোগীর শারীরিক সমস্যার বিস্তারিত কোনো তথ্য নিশ্চিত করেননি। তিনি বলেছেন, ‘ওই ব্যক্তি হাসপাতালে আছেন। তাঁর যেসব শারীরিক সমস্যা আছে, তা প্রাণঘাতী নয়।’
অজ্ঞাতপরিচয়ের যে আত্মীয়ের সূত্রে পুলিশ এ খবর জানতে পেরেছে, তিনি জানিয়েছেন, ওই নারীকে হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি অ্যাপার্টমেন্টটিতে ওই নারীর ছেলের খোঁজ পান। তিনি বলেন, ওই অ্যাপার্টমেন্টটি অনেক বছর পরিষ্কার করা হয়নি বলে মনে হয়েছে। সেখানে প্রস্রাব, ময়লা–আবর্জনার স্তূপ ছিল। দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল। হল রুমে যাওয়ার সময় তাঁকে গাদা গাদা ময়লার স্তূপ পাড়ি দিতে হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি হতবাক, আমার হৃদয় ভেঙে গেছে। তবে একই সঙ্গে আমার একটু নির্ভারও লাগছে। এই দিনটার জন্য ২০ বছর ধরে অপেক্ষা করেছি আমি। কারণ আমার মনে হয়েছিল যে, ওই নারী তাঁর ছেলের জীবন সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করে আসছিলেন। কিন্তু এর মাত্রা সম্পর্কে আমার ধারণাও ছিল না।’
সুইডেনের প্রসিকিউশন কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছে, ওই ব্যক্তির মা তাঁর বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।